ইরান–ইসরায়েল যুদ্ধের প্রেক্ষাপটে বিশ্ববাজারে জ্বালানি তেলের দাম বাড়লেও বাংলাদেশ সরকার আপাতত তা বাড়ানোর চিন্তা করছে না। আজ মঙ্গলবার সচিবালয়ে অর্থনৈতিক বিষয়ক উপদেষ্টা পরিষদ কমিটি ও সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদ কমিটির বৈঠক শেষে অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ এ কথা জানান।
অর্থ উপদেষ্টা বলেন, ইসরায়েল–ইরানের যুদ্ধ পর্যবেক্ষণ করছে সরকার। আপাতত জ্বালানি তেলের দাম বাড়ানোর চিন্তা নেই। যুদ্ধটা যদি বেশি দিন চলে তখন আমাদের ওপর একটা প্রভাব বা প্রেসার পড়বে। আমরা দেখেছি ইতোমধ্যো কিছুটা বেড়েছে। তবে যেগুলোতে আমরা অর্ডার করেছি সেগুলোতে প্রভাব ফেলে নাই৷
সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেন, যুদ্ধ হলে কেবল জ্বালানি নয় সারসহ অনেক কিছুর দামে প্রভাব পড়তে পারে। যেহেতু হরমুজ প্রণালী ব্যবহার করি আমরা। তবে যুদ্ধ বেশি দিন চলবে না বলে আশা করি।
তিনি বলেন, আমরা পর্যবেক্ষণ করছি গ্যাস, এলএনজির দাম যদি বেড়ে যায় তাহলে আমরা বিবেচনায় নেব। আজকে যে এলএনজি আমদানির অনুমোদন দিয়েছি সেটা পুরোনো দামেই কোড করেছে। আমাদের ভাগ্য ভালো যে আমরা আগের দামেই পাবো।
উপদেষ্টা বলেন, আপাতত বাণিজ্যে কোনো প্রভাব পড়বে না। ভবিষ্যতে যখন নতুন কোনো কিছু আনবো তখন হযতো কিছুটা ইফেক্ট করবে। অনেক জায়গায় তেলের দাম বাড়লেও আমরা এখনও সেটাতে যাচ্ছি না, আমরা আরও অপেক্ষা করব।
গত ১৩ জুন রাতে ইরানে হামলা চালায় ইসরায়েল। তেল সমৃদ্ধ দেশটিতে হামলার পরদিনই বিশ্ববাজারে অপরিশোধিত জ্বালানির দাম বাড়ে ১৩ শতাংশ পর্যন্ত। আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমগুলো বলছে, জ্বালানি তেল-গ্যাসের দামে অস্থিরতা বেড়েছে।
বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশন (বিপিসি) বলছে, দেশের বাজারে তেলের দামে প্রভাব পড়তে পারে আগস্ট মাসে। আর বিশেষজ্ঞরা বলছেন, মধ্যপ্রাচ্যে যুদ্ধ দীর্ঘস্থায়ী হলে আমদানি নির্ভর দেশের জ্বালানি খাত হুমকিতে পড়তে পারে।
বাংলাদেশ দুবাই, সৌদি আরব থেকে অপরিশোধিত জ্বালানি তেল আমদানি করে। জি-টু-জি চুক্তির আওতায় এসব তেলবাহী কার্গো বাংলাদেশের পথে যাত্রার ১ থেকে ২ মাস আগের গড়মূল্য বিবেচিত হয়। তবে, পরিশোধিত তেল আমদানি হয় কার্গোলোডের সময়ের আন্তর্জাতিক বাজারদরে।
বৈশ্বিক জ্বালানি তেলের ২৬ শতাংশ সরবরাহ করে মধ্যপ্রাচ্য। প্রাকৃতিক গ্যাসের বড় যোগান দেয় অঞ্চলটি। তাই ইরান-ইসরাইল যুদ্ধ দীর্ঘমেয়াদি হলে জ্বালানি তেল- গ্যাসের দাম বাড়ার পাশাপাশি, সরবরাহ বিঘ্নিত হতে পারে বল মত বিশ্লেষকদের।