চট্টগ্রাম কাস্টম হাউজ বন্ধ রাখায় কমিশনার জাকির হোসেনকে বরখাস্ত করার একদিন পর জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) তিন সদস্য ও এক কমিশনারকে বাধ্যতামূলক অবসরে পাঠানো হয়েছে।
আজ বুধবার অর্থ মন্ত্রণালয়ের পৃথক প্রজ্ঞাপনে এ তথ্য জানানো হয়।
বাধ্যতামূলক অবসরে পাঠানো এনবিআরের চার কর্মকর্তা হলেন, এনবিআরের সদস্য আলমগীর হোসেন, আবদুর রউফ, হোসেন আহমদ ও কর কমিশনার শাব্বির আহমদ।
পৃথক প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, ‘তাদের চাকরিকাল ২৫ বছর পূর্ণ হয়েছে। যেহেতু, জনস্বার্থে সরকারি চাকরি থেকে অবসর দেওয়া প্রয়োজন, এ বিবেচনায় সরকারি চাকরি আইন অনুযায়ী তাদের চাকরি থেকে অবসর দেওয়া হলো। তবে, তারা অবসরকালীন সব সুবিধা পাবেন।’
এর আগে, গত ২৮ ও ২৯ জুন চট্টগ্রাম কাস্টম হাউজ বন্ধ রাখায় কমিশনার জাকির হোসেনকে বরখাস্ত করা হয়েছে। মঙ্গলবার এ সংক্রান্ত একটি প্রজ্ঞাপন জারি করে অর্থ মন্ত্রণালয়। তাঁর স্থলে অতিরিক্ত দায়িত্ব হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে বন্ড কমিশনারেট মোহাম্মদ শফিউদ্দিন।
প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের কর্মকর্তা জাকির হোসেন ২১ ও ২৮ জুন এনবিআর ও এর অধীনস্থ কাস্টমস এবং ভ্যাট ও আয়করসহ রাজস্ব আদায়ের সঙ্গে সম্পৃক্ত অন্য সব দপ্তর খোলা রাখার নির্দেশনা অমান্য করেছেন। এ ছাড়া, ২৮ ও ২৯ জুন, শনি ও রোববার কাস্টম হাউজ বন্ধ রেখে আমদানি রপ্তানি কার্যক্রম বাধাগ্রস্ত করে সরকারের রাজস্ব ক্ষতি করেছেন। এ কারণে তাঁর বিরুদ্ধে তদন্তের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি তাঁকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। এ ছাড়া তাঁকে কারণ দর্শানোর নির্দেশও দেওয়া হয়েছে।
এর আগে, এনবিআর বিভক্তের প্রতিবাদ ও সংস্থাটির চেয়ারম্যানের পদত্যাগসহ বেশ কয়েকটি দাবিতে দীর্ঘ সময় ধরে এনবিআর সংস্কার ঐক্য পরিষদের ব্যানারে আন্দোলন করে এনবিআরের কর্মকর্তারা। গত সোমবার কাস্টমস হাউজ ও শুল্ক স্টেশনের কর্মীদের চাকরিকে ‘অত্যাবশ্যকীয় সেবা’ ঘোষণা করে প্রজ্ঞাপন জারি করে অন্তর্বর্তী সরকার।
এনবিআরের আওতাধীন সকল কাস্টমস হাউস, আইসিডি, বন্ড কমিশনারেট এবং শুল্ক স্টেশনের সব শ্রেণির চাকরিকে ‘অত্যাবশ্যকীয় সার্ভিস ঘোষণা করার মাধ্যমে আন্দোলনকারীদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নিতে পারবে সরকার। অত্যাবশ্যক পরিষেবা আইন–২০২০ অনুসারে, কোনো ব্যক্তি বেআইনি ধর্মঘটে অংশ নিলে বা অন্যকে প্ররোচিত করলে তাকে চাকরি থেকে বরখাস্তের বিধান রয়েছে। এ ছাড়া তাকে সর্বোচ্চ ১ বছরের দণ্ড বা ৫০ হাজার টাকা জরিমানা বা উভয় দণ্ড দেওয়ার বিধানও রয়েছে আইনটিতে।