কৃষকের হাতে চাল না থাকা, মিলারদের সিন্ডিকেট ও করপোরেট প্রতিষ্ঠানের বিপুল মজুদের কারণে চালের বাজার অস্থির হয়ে উঠেছে বলে দাবি খুচরা বিক্রেতা ও কৃষকদের। ফলে বাজারে চালের সংকট না থাকলেও দাম বাড়ছে। তবে ভোক্তা সংরক্ষণ অধিদপ্তর দুষছে, সরকারের কার্যকর নজরদারির অভাবকে।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, এ বছর বোরো মৌসুমে রেকর্ড ২ কোটি ১৪ লাখ টন চাল উৎপাদন হয়েছে। যা গতবারের চেয়ে ১৫ লাখ টন বেশি। তারপরও বাজারে চালের দাম চড়া।
দাম বেড়ে বাজারে ভালো মানের মিনিকেট চাল বিক্রি হচ্ছে ৮৫ থেকে ৯০ টাকার বেশি দামে। মোটা চাল মিলছে না ৬০ টাকার নিচে। টিসিবির হিসাবে, এক মাসে চালের দাম বেড়েছে সাড়ে ১৫ শতাংশ। চড়া দামের জন্য মিল মালিক আর বড় প্রতিষ্ঠানগুলোকে দুষছেন বিক্রেতারা।
একজন খুচরা বিক্রেতা বলেন, ‘এক ঘরে যদি ৬ বা ৭জন মানুষ থাকে, ৩ কেজি চাল লাগে। এখন ১ কেজি যদি ৮০–৯০ টাকা হয় তাহলে কিভাবে খাবে, বলেন? মিলাররা দাম বাড়ালে, বাড়ে। আর যদি ওনারা কিছু কমিয়ে দেয় তাহলে কমবে।’
রাজধানীর চালের বেশি সরবরাহ হয় কুষ্টিয়া ও নাওগাঁ অঞ্চল থেকে। এখানকার কৃষকরা বলছেন, সব চাল মজুদ করেছে মিলাররা। তবে এসব অভিযোগ অস্বীকার করে কর্পোরেট প্রতিষ্ঠানের ওপর দায় চাপাচ্ছেন মিল মালিকরা।
একজন কৃষক বলেন, ‘আমার জানা মতে কোনো কৃষকের কাছে অবশিষ্ট ধান নেই। বা কৃষক আসলে মজুদ করে না।’
একজন মিল মালিক বলছেন, ‘খাদ্য অধিদপ্তর বা বিভিন্ন সংস্থা যারা আছে, তাদের দায়িত্ব এটাকে মনিটরিং করলেই কার কাছে কি ধান আছে বা না আছে বাজারে, জানা যাবে।’
ভরা মৌসুমেও চালের দাম বেড়ে যাওয়াকে কারসাজি বলছে ভোক্তাদের সংগঠন ক্যাব। খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিতে কৃষি সংস্কার কমিশন গঠনসহ সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার তাগিদ তাদের।
ক্যাবের সহ-সভাপতি এস এম নাজের হোসেন বলেন, ‘যে যে ধরনের ব্যবসায়ী তার সেই ব্যবসাই করা উচিত। এগুলো যদি বন্ধ না হয় তাহলে কিন্তু ব্যবসায় সুশাসন কঠিন হবে। আমরা যারা ভোক্তা প্রতিনিয়ত প্রতারিত হবো।’
খাদ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য মতে, সরকারি গুদামে চালের মজুদ সাড়ে ১৩ লাখ ৮২ হাজার টন।