বহু বছর পর দর্শকরা যেন নির্মল আনন্দের কোনো সিনেমা পেল! তাদের ভাষ্য, ঈদের মতো সার্বজনীন উৎসবে প্রেক্ষাগৃহে বাবা-মা-সন্তান তথা পরিবার মিলে উপভোগ করার মতো সিনেমা ‘উৎসব’। অনুভূতি প্রকাশ করতে গিয়ে নানা রকম বাক্যে তারা এটাই বোঝাতে চাইছেন যে, ‘এমন সিনেমাই তারা চান।’ দেশের গণমাধ্যম থেকে শুরু করে সামাজিকমাধ্যম—সবখানেই সিনেমাটির প্রশংসা করছেন দর্শকরা।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, রাজধানী ঢাকায় স্টার সিনেপ্লেক্সের প্রতিটি শাখায় প্রথম সপ্তাহে (৭–১২ জুন) সিনেমাটির অধিকাংশ শো ছিল হাউজফুল, কিছু শো প্রায় হাউজফুল। দর্শকদের এমন ভালোবাসা পাওয়ায় সিনেমাটি দেখতে আগ্রহী হয়ে উঠছেন সবাই। ফলে দ্বিতীয় সপ্তাহ থেকে সিনেপ্লেক্সে বাড়ানো হয়েছে সিনেমাটির শো সংখ্যা। বিষয়টি গণমাধ্যমে নিশ্চিত করেছেন সিনেপ্লেক্স কর্তৃপক্ষ এবং সিনেমাটির পরিচালক।
নির্মাতা তানিম নূর জানান, প্রথম সপ্তাহে ঢাকা ও ঢাকার বাইরে স্টার সিনেপ্লেক্সের সবগুলো শাখায় উৎসব’র শো ছিল ৯টি। দ্বিতীয় সপ্তাহ থেকে শো সংখ্যা বেড়ে হয়েছে ১৩টি। প্রথম সপ্তাহের ধারাবাহিকতায় দ্বিতীয় সপ্তাহে রাজধানীর ব্লকবাস্টার সিনেমাস এবং কেরানীগঞ্জের লায়ন সিনেমাসেও প্রদর্শিত হবে উৎসব।
তিনি আরও বলেন, ‘ঢাকার বাইরে সিঙ্গেল স্ক্রিনেও আমাদের সিনেমাটি প্রদর্শনের আগ্রহের কথা জানিয়েছেন অনেকে। কথা শুরু হয়েছে। আশা করছি শিগগিরই সেই সুসংবাদটাও দিতে পারব।’
দর্শকদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে এই নির্মাতা বলেন, ‘সিনেমাটি নিয়ে দর্শকদের এই উন্মাদনা, দেখার আগ্রহ সত্যি আমাদের আপ্লুত করছে, অনুপ্রাণিত করছে। এই পরিবেশ তৈরি করেছেন দর্শকরাই। তারা নিজেরা সিনেমাটি দেখছেন, তার পাশের জনকে বলছেন, সামাজিকমাধ্যমে লিখছেন। সবার প্রতি আমাদের কৃতজ্ঞতা। যারা সিনেমাটি এখনও দেখেননি, পরিবারের সবাইকে নিয়ে সিনেমাটি দেখার আমন্ত্রণ রইল।’
প্রথম সপ্তাহে দর্শকদের সঙ্গে সরাসরি দেখা করতে, প্রতিক্রিয়া জানতে রাজধানীর বেশ কিছু প্রেক্ষাগৃহে ঘুরেছেন সিনেমাটির দুই অভিনয়শিল্পী সাদিয়া আয়মান ও সৌম্য জ্যোতি। তাঁরা জানান, সব বয়সী দর্শকদেরই দেখা গেছে প্রেক্ষাগৃহে। অনেক দর্শক রয়েছেন যারা উৎসব দেখতেই বহু বছর পর প্রেক্ষাগৃহে এসেছেন। ৪০ বছর পর প্রেক্ষাগৃহে এসেছেন—এমন দর্শকও পেয়েছেন তাঁরা।
এ সিনেমায় সাদিয়া-সৌম্য ছাড়াও অভিনয় করেছেন জাহিদ হাসান, জয়া আহসান, অপি করিম, চঞ্চল চৌধুরী, আফসানা মিমি, তারিক আনাম খান, আজাদ আবুল কালাম, ইন্তেখাব দিনার, সুনেরাহ বিনতে কামাল প্রমুখ। এক সিনেমায় এত তারকার উপস্থিতি দেশীয় চলচ্চিত্রে বিরল।
উৎসব’র গল্প লিখেছেন তানিম নূর, আয়মান আসিব স্বাধীন, সুস্ময় সরকার ও সামিউল ভূঁইয়া। ডিরক্টর অব ফটোগ্রাফি হিসেবে কাজ করেছেন রাশেদ জামান। চিত্রনাট্য ও সংলাপ করেছেন আয়মান আসিব স্বাধীন ও সামিউল ভূঁইয়া।
ব্র্যাক ব্যাংক প্রেজেন্টস উৎসব সিনেমাটি প্রযোজনা করেছে ডোপ প্রোডাকশনস, সহ-প্রযোজনায় রয়েছে চরকি। সহযোগী প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান হিসেবে আছে লাফিং এলিফ্যান্ট।
জানা গেছে, দেশের পাশাপাশি বিদেশেও মুক্তি পাবে সিনেমাটি। আন্তর্জাতিক ডিসট্রিবিউশনে রয়েছে ‘স্বপ্ন স্কেয়ারক্রো’ ও ‘পথ প্রোডাকশনস’।