সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কারের দাবিতে ২০২৪ সালের আজকের দিনে শিক্ষার্থীরা রাস্তায় নেমে এসেছিল। কিন্তু তৎকালীন ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ সরকার লাখও শিক্ষার্থীর এই দাবি নিয়ে ছলাকলা শুরু করে। ক্রমশ আন্দোলনরতদের ওপর শুরু হয় রাষ্ট্রীয় দমন-পীড়ন। বাড়তে থাকে হতাহতের সংখ্যা। এমন পরিস্থিতিতে সেই কোটা সংস্কার আন্দোলন রূপ নেয় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে, অবশেষে তা পরিণত হয় ছাত্র-জনতার গণ-আন্দোলনে। ফ্যাসিবাদী সরকারের বিভিন্ন বাহিনী ও আওয়ামী লীগের দলীয় ‘স্পেশাল ফোর্স’র বুলেটের আঘাতে জীবন দেন হাজারও নিরীহ মানুষ। আহত হন ২০ হাজারেরও বেশি মানুষ। অবশেষে টানা ৩৬ দিনের রক্তক্ষয়ী আন্দোলনে গত ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা সরকারের পতন হয়। রক্তাক্ত সেই জুলাই গণঅভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তি উপলক্ষে আজকের শোকাবহ দিনে স্মৃতির পাতায় ফিরে গেলেন অভিনেত্রী আজমেরী হক বাঁধন। জুলাই আন্দোলন চলাকালে ‘দৃশ্যমাধ্যম শিল্পী সমাজ’-এর ব্যানারে গণমানুষের পাশে দাঁড়িয়েছিলেন তিনি।
মঙ্গলবার (১ জুলাই) সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে দেওয়া এক পোস্টে জাতীয় পতাকার ছবি শেয়ার করে অভিনেত্রী বলেন, ‘জুলাই গণঅভ্যুত্থান আমার জীবনের সবচেয়ে আলোচিত ঘটনাগুলোর একটি। আমাকে তা আশা দিয়েছিল—আমাকে দেশের মানুষের পাশে দাঁড়ানোর সাহস দিয়েছিল।’
ভয়াল সেই দিনের কথা স্মরণ রেখে তিনি বলেন, ‘এটা সহজ কোনো সিদ্ধান্ত ছিল না, কিন্তু আমি এটা করেছি। ভালো ভবিষ্যতের সম্ভাবনায় বিশ্বাসী হয়ে সাধারণ জনগণের পাশে থেকেছি।’
বাঁধন বলেন, ‘আমরা এমন একটি রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ হয়েছিলাম, যা জনগণের টাকায় কেনা বন্দুক তাক করেছিল নিজের নাগরিকদের ওপর। মানুষকে কোনো কারণ ছাড়াই গ্রেপ্তার করা হচ্ছিল। নিরীহ মানুষ তাদের জীবন বিসর্জন দিয়েছে। কিছু না বুঝেই রিয়া মণির (রিয়া গোপ) মতো ছোট্ট মেয়েরা চরম মূল্য দিল।’
প্রত্যয় ব্যক্ত করে তিনি আরও বলেন, ‘সেই দিনগুলোতে, আমরা ঐক্যবদ্ধ ছিলাম—আমাদের অধিকারের জন্য, আমাদের জাতির জন্য। এটা জীবনের এক সময় ছিল, যেখানে আমরা আরও ভালো কিছু, কিছু একটা করার স্বপ্ন দেখার সাহস করেছিলাম। এবং আমি সবসময় সেই সাহস এবং সেই আশা আমার সঙ্গে বহন করব।’
প্রসঙ্গত, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে শিক্ষার্থীদের ৯ দফা দাবির সঙ্গে সংহতি প্রকাশ করে ‘দৃশ্যমাধ্যম শিল্পী সমাজ’-এর ব্যানারে রাজপথে নেমেছিলেন চলচ্চিত্র, আলোকচিত্র, থিয়েটার, গণমাধ্যমসহ দৃশ্যমাধ্যমের নানা শাখার কর্মীরা।