সম্প্রতি সামাজিকমাধ্যমে বেশ কিছু বিজ্ঞাপনচিত্র ভাইরাল হয়েছে, যেখানে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার (এআই) মাধ্যমে জনপ্রিয় উপস্থাপক-নির্মাতা হানিফ সংকেতের কণ্ঠ নকল করা হয়েছে। বিষয়টি নজরে এসেছে তাঁরও। ক্ষোভ প্রকাশ করে সেসব বিজ্ঞাপনচিত্র-সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার কথা জানালেন তিনি।
মঙ্গলবার (২০ মে) দিবাগত রাতে সামাজিকমাধ্যমে ফেসবুকে হানিফ সংকেত লেখেন, ‘প্রযুক্তির উৎকর্ষতার এই যুগে প্রযুক্তির ব্যবহারের পাশাপাশি এর অপব্যবহারের মাত্রা এতটাই বেড়েছে যে, প্রযুক্তিগত প্রতারণার শিকার হচ্ছেন অনেকেই। বর্তমান সময়ের সেরা আবিষ্কার আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স (এআই), যা মানুষের বুদ্ধিমত্তা ও চিন্তাশক্তিকে কৃত্রিম উপায়ে প্রদর্শন করতে পারে। তবে এর অপব্যবহারের ফলে ঘটছে অনেক অঘটনও। যার কারণে অনেকেই বিড়ম্বনার শিকার হচ্ছেন, বিভ্রান্ত হচ্ছেন।’
সেইসব নকল কণ্ঠের বিজ্ঞাপনচিত্রের কথা উল্লেখ করে জনপ্রিয় ম্যাগাজিন অনুষ্ঠান ‘ইত্যাদি’র এই উপস্থাপক বলেন, ‘গত কিছুদিন ধরেই লক্ষ্য করছি একটি প্রতারক চক্র ফেসবুক-ইউটিউবসহ বিভিন্ন মাধ্যমে ইত্যাদিতে আমার উপস্থাপনার অংশ ব্যবহার করে এআই প্রযুক্তির মাধ্যমে ডায়াবেটিস সংক্রান্ত বিজ্ঞাপন প্রচার করছে। তবে এআই কৃত্রিমভাবে যত সূক্ষ্মতার পরিচয়ই দিক না কেন একটুখানি লক্ষ্য করলেই বোঝা যাবে এটা আসল নয়, নকল। আমার কণ্ঠ অনুকরণ করলেও উপস্থাপনায় বাংলা উচ্চারণ ভিনদেশের। উল্লেখ্য অনেক প্রস্তাব পাওয়া সত্ত্বেও আমি কখনোই কোনো বিজ্ঞাপনচিত্রে অংশগ্রহণ করিনি। সুতরাং আমাকে ব্যবহার করে এ ধরনের এআই কিংবা প্রযুক্তিনির্ভর কোনো বিজ্ঞাপন দেখে কেউ বিভ্রান্ত হবেন না। কারণ এর সঙ্গে আমার কোনো সংশ্লিষ্টতা নেই। যারা এ ধরনের প্রতারণা করছে, তাদের বিরুদ্ধে শিগগিরই আমি আইনগত ব্যবস্থা নেব।’
বিশ্বের অনেক তারকা এরই মধ্যে এআই প্রযুক্তির অপব্যবহারের দিক বিবেচনায় রেখে বিদ্যমান কপিরাইট আইন হালনাগাদ করার দাবি জানিয়েছেন। বিষয়টি উল্লেখ করে সবশেষে হানিফ সংকেত বলেন, ‘এআই বা কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার হুমকি থেকে নিজেদের সৃষ্টিকে সুরক্ষা দেওয়ার জন্য ব্রিটিশ তারকারা কপিরাইট আইন হালনাগাদ করার আহ্বান জানিয়েছেন। তাদের মধ্যে সংগীতশিল্পী ডুয়া লিপা, এলটন জন, নাট্যকার ডেভিড হেয়ার, নোবেল বিজয়ী সাহিত্যিক কাজুও ইশিগুরোর মতো ব্যক্তিত্বরাও রয়েছেন। আমার মনে হয় এআই সফটওয়্যার প্রতিষ্ঠানের উচিত কিছু নীতিমালা তৈরি করা, যাতে কেউ এর অপব্যবহার করতে না পারে।’
প্রসঙ্গত, ১৯৮৯ সাল থেকে বাংলাদেশ টেলিভিশনে (বিটিভি) ইত্যাদি’র উপস্থাপনা করে আসছেন হানিফ সংকেত। এ ছাড়া ক্যারিয়ারে বেশ কিছু দর্শকপ্রিয় নাটকও উপহার দিয়েছেন তিনি।