দেশে প্রতি ৪ জনের মধ্যে একজন উচ্চ রক্তচাপে ভুগছেন। মোট আক্রান্ত তিন কোটির বেশি হলেও অর্ধেকই তা জানেন না। চিকিৎসার আওতায় আছেন মাত্র ৩৫ শতাংশ। আর উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে আছে কেবল ১৪ শতাংশের। চিকিৎসকরা বলছেন, উচ্চ রক্তচাপ নিয়ে অবহেলার কারণে বাড়ছে হৃদরোগ, স্ট্রোক ও কিডনি রোগের ঝুঁকি।
দেশে ১৮ বছর থেকে ৬৯ বছর বয়সী প্রতি চারজনের ১ জনই উচ্চ রক্তচাপে ভুগছেন। ২০১০ সালে আক্রান্তের হার ছিল ১৭ দশমিক নয় শতাংশ। ২০২২-এ বেড়ে দাঁড়ায় ২৪ দশমিক ৬ শতাংশে। ২০৩০ সালে এই হার ২৮ শতাংশে পৌঁছানোর শঙ্কা চিকিৎসকদের।
ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশন হাসপাতাল এণ্ড রিসার্চ ইনস্টিটিউটের , উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ কার্যক্রমের উপ-পরিচালক ডা. শামীম জুবায়ের বলেন, ‘প্রায় ৩ কোটি মানুষ উচ্চ রক্তচাপে আক্রান্ত। এদের মধ্যে মাত্র অর্ধেককে আমরা শনাক্ত করতে সক্ষম হয়েছি। আতঙ্কের বিষয় হচ্ছে যে যাদেরকে আমরা শনাক্ত করেছি, সবাইকে আমরা চিকিৎসার আওতায় আনতে পারি নি।’
ইনস্টিটিউট হৃদরোগ বিভাগের প্রধান অধ্যাপক ডা. ফজিলাতুন্নেসা মালিক বলেন, ‘ওষুধ না খাওয়ার পরিণাম কিন্তু ভয়াবহ হতে পারে। এটা আমরা অনেকেই জানি না। যখন আমরা ওষুধটা খাই না তখন হঠাৎ করে প্রেসার অনেক বেড়ে যায়। ওই মুহূর্তে রোগীর কিন্তু মারাত্মক ঝুঁকি।’
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বংশগত ও হরমোনজনিত কারণের পাশাপাশি স্থূলতা, খাদ্যাভ্যাস, পরিশ্রম না করার প্রবণতাতেও বাড়ছে আক্রান্তের সংখ্যা। উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে না থাকলে ডেকে আনতে পারে হার্ট অ্যাটাক, স্ট্রোক, কিডনি জটিলতার মতো বিপদও।
অধ্যাপক ডা. ফজিলাতুন্নেসা মালিক বলেন, ‘হঠাৎ করে স্ট্রোক হতে পারে। চোখ অন্ধ হয়ে যেতে পারে। আর অনেক দিন ধরে যখন উচ্চ রক্তচাপ একটা মানুষের থাকে, তখন তার কিডনি আস্তে আস্তে বিকল হতে থাকে। প্রত্যেকটা অঙ্গ কিন্তু উচ্চ রক্তচাপের কারণে ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে।’
ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশন হাসপাতাল ও রিসার্চ ইনস্টিটিউটের গবেষণা বলছে, হৃদরোগের জটিলতা নিয়ে গত এক বছরে ভর্তি রোগীর প্রায় ৫৮ শতাংশই উচ্চ রক্তচাপে ভুগছিলেন।