গরমকাল মানেই আমের রাজত্ব। বাজারে ঢুকলেই চোখে পড়ে ঝলমলে হলুদ-সবুজ রঙের রসালো ফলটি। পাকা আমের ঘ্রাণেই যেন মন ভরে ওঠে। কিন্তু প্রশ্ন থেকে যায়, কখন আম খাওয়া সবচেয়ে ভালো? কতটুকু খেলে শরীর ভালো থাকে? কোন খাবারের সঙ্গে খেলে উপকার বেশি?
এই মৌসুমে আম খাওয়ার আগে জেনে নিন সময়, পরিমাণ ও খাবার মেলানোর সঠিক পদ্ধতি।
কতটা আম খাওয়া নিরাপদ?
পুষ্টিবিদদের মতে, একজন সুস্থ প্রাপ্তবয়স্ক ব্যক্তি প্রতিদিন একটি মাঝারি আকৃতির আম খেতে পারেন। এতে থাকে প্রায় ১২০-১৫০ ক্যালোরি ও ৪৫ গ্রাম প্রাকৃতিক চিনি। তবে শুধু চিনিই নয়, আমে রয়েছে পর্যাপ্ত ভিটামিন সি, ফাইবার ও ভিটামিন এ। যা শরীরের জন্য উপকারী।
তবে যারা ডায়াবেটিসে ভুগছেন বা রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখছেন। তাদের জন্য পরামর্শ হচ্ছে, অর্ধেক আম খাওয়া নিরাপদ। পাশাপাশি আম খাওয়ার সঙ্গে প্রোটিন বা ফ্যাট যুক্ত খাবার থাকলে রক্তে চিনির মাত্রা হঠাৎ করে বাড়ে না। যেমন, এক বাটি টক দইয়ের সঙ্গে খেলে আমের প্রভাব অনেকটাই নিয়ন্ত্রিত থাকে।
কখন আম খাওয়া সবচেয়ে উপকারী?
সকালে খাওয়া সবচেয়ে ভালো। সকালে দেহের মেটাবলিজম তুলনামূলকভাবে বেশি সক্রিয় থাকে। তাই প্রাকৃতিক চিনি সহজে হজম হয় এবং শরীর শক্তি পায়। আবার ব্যায়ামের পরও খেতে পারেন। ওয়ার্কআউটের পর শরীর দ্রুত শক্তি চায়। সেই জায়গায় আম হতে পারে একেবারে উপযুক্ত ফল। এটি গ্লাইকোজেন রিজার্ভ পুনরায় পূরণ করতে সাহায্য করে।
রাতে আম খাওয়া ঠিক নয়
অনেকেই রাতে আমের শেক বা স্মুদি খেয়ে থাকেন। কিন্তু এতে শরীরে অতিরিক্ত ক্যালোরি জমে এবং ঘুমে ব্যাঘাত ঘটতে পারে। বিশেষ করে দুধ, চিনি ও আইসক্রিম মিশিয়ে বানানো মিল্কশেকে ক্যালোরির পরিমাণ বেড়ে যেতে পারে কয়েক গুণ।
আমের সঙ্গে কী খাবেন?
আম একাই সুস্বাদু হলেও কিছু স্বাস্থ্যকর উপাদানের সঙ্গে মিশিয়ে খেলে তা আরও উপকারী হয়ে ওঠে।
- টক দই: প্রোটিন ও প্রোবায়োটিকসমৃদ্ধ দই আমের সঙ্গে মিশিয়ে খেলে হজমেও সুবিধা হয়।
- বাদাম: আমের সঙ্গে একমুঠো কাঠবাদাম বা আখরোট খেলে রক্তে চিনির মাত্রা ধীরে বাড়ে।
- চিয়া সিড: ফাইবারসমৃদ্ধ এই বীজ আমের স্মুদি বা বাটিতে মেশালে দীর্ঘ সময় পেট ভরা থাকে। একই সঙ্গে বাড়ে টেক্সচার ও পুষ্টিগুণ।
আম খেতে চাইলে স্মুদি না মিল্কশেক?
ঘরে তৈরি আমের স্মুদি হতে পারে স্বাস্থ্যকর বিকল্প। বাজারের স্মুদি বা মিল্কশেকে অতিরিক্ত চিনি, ফুল ফ্যাট দুধ ও আইসক্রিম ব্যবহার হয়। যা এক কাপ পানীয়কে করে তোলে ৫০০ ক্যালোরির বোমা। তাই ঘরে তৈরি স্মুদি বা লাচ্ছি খান। তবে দুধের পরিমাণ নিয়ন্ত্রণে রেখে।
আম খেতে ভালোবাসেন না, এমন মানুষ কমই আছেন। আম সকালে খেতে পারেন, ওয়ার্কআউটের পর খান। কিন্তু রাতে একেবারেই নয়। দই, বাদাম বা চিয়া সিডের মতো স্বাস্থ্যকর উপাদানের সঙ্গে মিশিয়ে খান। তাহলেই আম খাওয়ার আনন্দের সঙ্গে মিলবে সুস্থ থাকার নিশ্চয়তা।
তথ্যসূত্র: টাইমস নাউ