নতুন বছরে অনেকেই নার্সারি থেকে গাছ কিনে এনে বাগান করার পরিকল্পনা করেছেন। কেউ রঙবেরঙের ফুলগাছ লাগাবেন, আবার কেউবা ইনডোর প্ল্যান্ট কিনে ব্যালকনি বা ঘরে সাজিয়ে রাখবেন। কিন্তু যত্নের অভাবে এসব গাছের বেশিরভাগই শেষ পর্যন্ত হয়তো টিকবে না।
নতুন বাগান করার পাশাপাশি তাই গাছের পরিচর্যার সঠিক নিয়মগুলোও জানতে হবে।
খুব কড়া রোদে গাছে পানি দেয়া যাবে না। যদি দেখেন আপনার টবের মাটি ভিজে রয়েছে তাহলেও পানি দেবেন না। পানি দিতে দিতে টবের মাটি শক্ত হয়ে এলে, মাটি কুপিয়ে আলগা করে নিতে হবে।
বাজারে বিভিন্ন আয়তন ও আকৃতির মাটি, প্লাস্টিক ও কাঠের টব পাওয়া যায়। ব্যালকনি বা ঘরের জায়গা বুঝে টব বেছে নিতে হবে। টব কেনার সময় দেখে নেওয়া জরুরি টবের নীচে ফুটো রয়েছে কি না। বাহারি নকশা করা টব কিনে তাতে গাছ পুঁতে দিলেই হলো না। টবে ফুটো না থাকলে পানি জমে গাছের শিকড় পচিয়ে দিতে পারে।
গাছের ডালে সাদা পাউডারের মতো কিছু দেখলে বুঝবেন ওগুলো মিলিবাগ! এর আক্রমণে কিছু বুঝে ওঠার আগেই দেখবেন আপনার ব্যালকনি বা ছাদে গড়ে তোলা শখের বাগান নিঃশেষ হয়ে গেছে। মিলিবাগ দমনের জন্য ৬ থেকে ৭ ফোঁটা সাবানপানি, ২ টেবিল চামচ শুকনা মরিচের গুঁড়োর সঙ্গে মিলিয়ে ৩ লিটার পানিতে মিশিয়ে নিন। এই মিশ্রণ গাছের যেখানে যেখানে মিলিবাগ হয়েছে সেখানে স্প্রে করুন।
শীতের মাসগুলোতে ঘরের ভিতরে রাখা গাছগুলোর বৃদ্ধি খুব ধীর গতিতে হয়। ফলে তাদের কম পুষ্টির প্রয়োজন হয়। এই সময়ে সার প্রয়োগ করলে মাটিতে অতিরিক্ত পুষ্টি উপাদান তৈরি হতে পারে, যা শিকড়ের ক্ষতি করতে পারে। শীতকালে তাই সার দেওয়া এড়িয়ে চলুন।
তবে মাসে একবার জৈব সার দিতে পারেন। রান্নাঘরের পরিত্যক্ত তরকারির খোসা ছোট করে কেটে গাছের গোড়ায় দেওয়া যায়। চালধোয়া পানি দিতে পারেন। আবার ব্যবহৃত চা-পাতাও গাছের জন্য উপকারী।
প্রতিটি গাছের নির্দিষ্ট পরিমাণ আলোর প্রয়োজনীয়তা রয়েছে। ঘরের গাছ স্বাভাবিকভাবেই সরাসরি সূর্যের আলো পছন্দ করে না। সরাসরি সূর্যালোকে অনেক গাছ শুকিয়ে মরে যায়, পাতা ফ্যাকাশে হয়ে যায়। তাই বেশি রোদে গাছে রাখবেন না।
অনেক ইনডোর প্ল্যান্টকে হঠাৎ প্রচণ্ড আলোয় নিয়ে গেলে তারা মানিয়ে নিতে পারে না। তাই আপনার টবের গাছের জন্য কেমন আলোর প্রয়োজন, তা আগে জেনে নিন। স্থান বদলের ক্ষেত্রে একটু একটু করে আলোর দিকে এগিয়ে নিয়ে যান; এবং গাছকে সময় দিন ধীরে ধীরে পরিবেশের সঙ্গে মানিয়ে নিতে।