জুলাই গণঅভ্যুত্থান নিয়ে জাতিসংঘের প্রতিবেদনের আলোকে ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে দ্রুত দেশে ফিরিয়ে এনে বিচারের তাগিদ দিয়েছেন বিশেষজ্ঞো। সেই সঙ্গে গণহত্যার দায়ে দল হিসেবে আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধের দাবি বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের। ছাত্র নেতাদের মতে, গুম-খুনের বিচার না হলে জুলাই শহীদদের রক্তের সঙ্গে বেঈমানি হবে।
ছাত্র-জনতার আন্দোলন ঠেকাতে গত ৫ আগস্ট দেশ ছাড়ার আগ মুহূর্ত পর্যন্ত নির্বিচারে গুলির নির্দেশ ছিল ক্ষমতাচ্যুত সরকারের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার। জাতিসংঘ ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং মিশনের তদন্ত প্রতিবেদন বলছে, গত বছরের ১ জুলাই থেকে ১৫ আগস্ট পর্যন্ত নিহত হন ১ হাজার ৪০০ জন।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, জোর করে ক্ষমতায় টিকে থাকতে নির্বিচার হত্যায় শেখ হাসিনাকে ফিরিয়ে এনে বিচার করতে হবে। গণহত্যায় জড়িত সবাইকে বিচারের মুখোমুখি করতে হবে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক সামিনা লুৎফা বলেন, ‘ইনভেস্টিগেশনটা হয়েছে এবং আমাদের জানা জিনিসটাই আমরা কনফার্ম হলাম। ওনার এই ভয়ঙ্কর অপরাধ যেগুলো মানবতাবিরোধী অপরাধ, যেগুলো গণহত্যার পর্যায়ে পড়ে গেছে, সেগুলোকে বিচার করতে হবে।’
ছাত্র নেতারা বলছেন, জুলাই হত্যাকাণ্ডসহ গত ১৫ বছরে সব খুনের বিচার করতে হবে। সেই সঙ্গে ভোটাধিকারহরণ, গুম-খুনের বিচার না করলে জুলাই আকাঙ্ক্ষার বাস্তবায়ন হবে না।
বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের সভাপতি গণেশ চন্দ্র রায় সাহস বলেন, ‘আমরা মনে করি ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনাকে বিচারের আওতায় আনলেই জুলাই গণঅভ্যুত্থানের যে স্পিরিট এবং এই যে ১৪শ জনের কথা যে উল্লেখ করা হয়েছে তাদের আত্মা শান্তি পাবে।’
জুলাই গণহত্যার বিচারের পাশাপাশি আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ চায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন। সংগঠনটির সমন্বয়ক তারিকুল ইসলাম বলেন, ‘আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করতেই হবে। আমরা একই সাথে মনে করি যে শেখ হাসিনা তার জায়গা থেকে বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠানগুলো যেভাবে ধ্বংস করেছে, আমরা মনে করি যে প্রাতিষ্ঠানিক স্বত্তা ফিরিয়ে আনার জন্য এই দোসরদের অপসারণের কোনো বিকল্প নেই।’
নাগরিক কমিটির সদস্য সচিব আখতার হোসেন বলেন, ‘এই মানুষগুলো তো তাদের আত্মীয় স্বজন, বন্ধু-বান্ধব প্রত্যক্ষদর্শী আছে এখনও। তাদের সাক্ষ্যের ভিত্তিতেই শেখ হাসিনার যে অপরাধ সেটা প্রমাণ হয়ে আসবে।’
পতিত স্বৈরাচারের দোসরদের অপপ্রচার-অরাজকতা বন্ধে আইনের কঠোর প্রয়োগের দাবি বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের।