দেশে বিলুপ্তির মুখে থাকা ১৪ ভাষার মধ্যে তিনটি ভাষা রক্ষায় কাজ শুরু হয়েছে। রিংমিটচ্যা, লালেং বা পাত্র এবং কন্দো ভাষা বাঁচাতে জরিপ করছে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউট। তবে অনেক ভাষার নিজস্ব বর্ণমালা না থাকায় সংরক্ষণ করা কঠিন হয়ে পড়ছে।
পাহাড়ি জনজাতির ভাষা গবেষক ইয়াঙান ম্রো লিখেছেন ম্রো ভাষার প্রথম ব্যাকরণ। এ ভাষায় শুদ্ধভাবে কথা বলা ও সাহিত্য চর্চার চিন্তা থেকেই তাঁর এই চেষ্টা।
এখানেই থেমে যাননি ইয়াঙান। নিজের ভাষায় লিখেছেন মহান মুক্তিযুদ্ধের সাত বীরশ্রেষ্ঠের জীবনী। স্বজাতির নতুন প্রজন্মের কাছে তুলে ধরেছেন বীরত্ব গাঁথা।
ভাষা গবেষক ইয়াংঙান ম্রো বলেন, ‘ম্রো শব্দগুলোর সাথে আসলে একজনের সঙ্গে আরেকজনের মিলে না। বিশেষ করে লেখার সময় এবং বলার সময়। তখন আমার খারাপ লাগে, আসলে একটা সমাধানে আসতে হবে। আমি অনেক দিন চেষ্টা করার ফলে একটা সমাধান বের করতে পেলাম। অনেক ছেলে-মেয়ে এখন এই ব্যাকরণ নিয়ে পড়াশোনা করে। বিশেষ করে গ্রামে-গঞ্জে চিঠিপত্রে তারা এটা ব্যবহার করে।’
জানা গেছে, দেশে বাংলাসহ ৪১টি ভাষার প্রচলন আছে। তবে এর মধ্যে বিলুপ্তির মুখে রিংমিটচ্যা, পাত্র, কন্দোসহ ১৪টি। নিজস্ব ভাষায় বই রয়েছে শুধু চাকমা, মারমা, ত্রিপুরা, গারো ও সাদরি জাতির। তবে পড়ানোর মতো শিক্ষক নেই।
আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউট বলছে, প্রতিটি জাতিগোষ্ঠীর নিজস্ব ভাষায় শিক্ষাব্যবস্থা নিশ্চিত করতে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ তারা। তাই আপাতত বিলুপ্তির হুমকিতে থাকা ৩টি ভাষা রক্ষায় কাজা শুরু হয়েছে।
আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউটের পরিচালক অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ আসাদুজ্জামান বলেন, ‘তিনটি ভাষাকে আমরা টার্গেট করেছি, যেগুলো বিভিন্ন অবস্থায় রয়েছে। পাত্র, কন্দো, রিংমিটচ্যা- এ ভাষাগুলো নিয়ে আমরা জরিপ করছি। জরিপের মাধ্যমে তথ্য উপাত্ত সংগ্রহ করে তাদের ভাষা সম্পর্কে একটা পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে।’
২০২৪ সালে বান্দরবানের আলিকদমে গড়ে ওঠে রিংমিটচ্যা ভাষার প্রথম স্কুল। সেখানে ভাষা শিখছে নতুন ৫০ শিক্ষার্থী।