বাংলাদেশ-ভারত প্রতিবেশী এ দুই দেশের মাঝে ক্ষত হয়ে দেখা দিয়েছে ‘সীমান্ত হত্যাকাণ্ড’। ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর (বিএসফ) হাতে প্রায়ই ঘটছে বাংলাদেশিদের হত্যার ঘটনা।
বিভিন্ন সময় দুই দেশের উচ্চপর্যায় থেকে সীমান্তে হত্যা বন্ধে নানা প্রতিশ্রুতি দেওয়া হলেও তা মানছে না ভারত। প্রতিনিয়তই সীমান্তে আতঙ্কে থাকেন স্থানীয়রা।
মানবাধিকার সংস্থা মানবাধিকার সংগঠন হিউম্যান রাইটস সাপোর্ট সোসাইটি (এইচআরএসএস) জানিয়েছে, গত ১০ বছরের বাংলাদেশ-ভারত সীমান্তে ৩০৫ বাংলাদেশিকে হত্যা করেছে বিএসএফ। আহত হয়েছেন ২৮২ জন। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি ৫১ বাংলাদেশিকে হত্যার ঘটনা ঘটে ২০২০ সালে।
কূটনৈতিকভাবে ভারতকে বারবার বলার পরও সীমান্তে প্রতিনিয়তই হত্যাকাণ্ড বিশ্বে নজিরবিহীন বলে মন্তব্য করছেন নিরাপত্তা বিশ্লেষকেরা। এ সংকট নিরসনে সীমান্তে বসবাসরত মানুষদের আদান-প্রদান একটি বৈধ কাঠামোয় আনার পরামর্শও তাদের।
এইচআরএসএসের নির্বাহী পরিচালক ইজাজুল ইসলাম বলেন, ‘আওয়ামী লীগ সরকার অনেকটা নতজানু পররাষ্ট্রনীতি অনুসরণ করে ভারতের সঙ্গে সম্পর্ক রেখে চলছিল। সীমান্তে যে বাংলাদেশিদের হত্যা করা হচ্ছে, আওয়ামী লীগ সরকার এই বিষয়টিকে ভারতের কাছে গুরুত্বপূর্ণ হিসেবে তুলে ধরতে পারেনি। প্রতিবাদও করেনি। বিএসএফ সীমান্তে যে আন্তর্জাতিক নীতিমালা রয়েছে, মানবাধিকার আইন রয়েছে তা পালন করছে না।’
এই সংকট সমাধানে সীমান্তবর্তী এলাকার দুই দেশের মানুষের মাঝে চলাচল সহজ করতে একটি নীতিমালা দরকার বলে মনে করেন বিশ্লেষকরা।
নিরাপত্তা বিশ্লেষক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) শামীম কামাল বলেন, ‘পৃথিবীর কোনো দেশে এমন সীমান্ত হত্যার নজির আমার জানা নেই। সেক্ষেত্রে এটি একটি নজিরবিহীন ঘটনা। সীমান্তবর্তী এলাকার মানুষের মধ্যে কিছু অপ্রচলিত বাণিজ্য-সম্পর্ক রয়েছে। একটা নির্দিষ্ট জায়গায় উভয় দেশের নাগরিক অবাধে যাতায়াত করতে পারবে এমন একটা ব্যবস্থা করা গেলে এই জিনিসটা নিষ্পত্তি করা সম্ভব হতে পারে।’
সীমান্তে মারণাস্ত্রের ব্যবহার না করতে বিএসএফকে বিকল্প প্রস্তাব দিয়েছে বিজিবি। একইসঙ্গে সীমান্তে গোয়েন্দা তৎপরতা অব্যাহত রেখে স্থানীয়দের সঙ্গে সচেতনতামূলক কর্মসূচি করার ওপরও গুরুত্ব দেন বিশ্লেষকরা।