মিয়ানমারেই ফিরে যেতে চান কক্সবাজারের রোহিঙ্গা ক্যাম্পে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গারা। জাতিসংঘ মহাসচিব অ্যান্তোনিও গুতেরেসকে এ বার্তাই দিতে চান তারা। শুক্রবার কক্সবাজারের রোহিঙ্গা ক্যাম্প সফরে আসছেন জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস এবং প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। তাদের কক্সবাজার সফর ঘিরে নতুন স্বপ্ন দেখছেন রোহিঙ্গারা।
জাতিসংঘ মহাসচিব এবং প্রধান উপদেষ্টার সফর ঘিরে কক্সবাজারের রোহিঙ্গা ক্যাম্পগুলোতে নেওয়া হয়েছে নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তা ব্যবস্থা। এদিন অন্যান্য কর্মসূচির পাশাপাশি এক লাখ রোহিঙ্গার সঙ্গে ইফতার করবেন তারা।
জাতিসংঘ মহাসচিব অ্যান্তোনিও গুতেরেস এবং প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সফর ঘিরে এরই মধ্যে ক্যাম্পের কাঁটাতারের বেষ্টনীর ভেতরে প্রস্তুত করা হয়েছে প্যান্ডেল ও শামিয়ানা।
কয়েক ঘণ্টার এ সফরে দুই নেতা কথা বলবেন রোহিঙ্গা নারী-পুরুষ ও শিশুদের সাথে। পরিদর্শন করবেন রোহিঙ্গাদের লার্নিং, কালচারাল ও প্রোডাকশন সেন্টার। তাদের এই সফর রোহিঙ্গাদের নিজ দেশে ফিরে যাওয়া নিয়ে তৈরি হয়েছে নতুন সম্ভাবনা।
শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার মিজানুর রহমান বলেন, ‘রোহিঙ্গাদের মনেও এ কনফিডেন্স তৈরি হবে যে তাদের পাশে বাংলাদেশসহ বিশ্ব সম্প্রদায় রয়েছে। সুতরাং মাতৃভূমিতে ফেরত যাওয়ায় তাদের এখন সাহস তৈরি হবে।’
বাস্তুচ্যুত হওয়ার পর ক্যাম্পের কষ্টের জীবন থেকে মুক্তি পেতে নাগরিক অধিকার নিশ্চিতের জন্য নিজ দেশে ফিরে যাওয়ার বিকল্প নেই। এবার জাতিসংঘ মহাসচিবের এই সফরের দিকে চেয়ে আছেন লাখ লাখ রোহিঙ্গা।
আরাকান রোহিঙ্গা সোসাইটি ফর পিস অ্যান্ড হিউম্যান রাইটসের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ জোবায়ের বলেন, ‘অ্যান্তনিও গুতেরেস যদি আমাদের এখানে আসেন তখন আমরা একটি কথাই বলব বাংলাদেশ আমাদের দেশ নয়। এখানে আমরা সারাজীবন থাকতে চাই না। ৮ বছর হয়ে গেছে, আমাদেরও দেশ আছে। রোহিঙ্গাদের দায়িত্ব হলো ইউএনএইচসিআরের। তারা যদি আমাদের সেইফ জোন করে দেয় তাহলে আমরা এখনই চলে যাব।’
দুই গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তির সফর ঘিরে নতুন করে স্বপ্ন দেখছেন আশ্রিতরা।
একজন রোহিঙ্গা বলেন, ‘আমাদের এখন যে খাবার দিচ্ছে, এগুলো মহাসচিবের হাত ধরেই আসছে। আগে সাড়ে ১২ ডলার দিয়েছিল, সেগুলো আমাদের জন্য পর্যাপ্ত ছিল না। এখন ৬ ডলার দেবে, এটাও পর্যাপ্ত নয়। আমরা আমাদের দেশে ফিরে যেতে চাই। ২০১৭ সালে আমরা যত মানুষ এসেছি, মিয়ানমারে সকলেরই জায়গা জমি আছে। নিরাপত্তা পরিবেশ তৈরি করে দিলে আমরা আবার ফেরত যাব।’
একই দিন অন্যান্য কর্মসূচির পাশাপাশি ১ লাখ রোহিঙ্গার সাথে ইফতার করবেন জাতিসংঘ মহাসচিব ও সরকার প্রধান। তাদের আগমন ঘিরে রোহিঙ্গা ক্যাম্পে নেওয়া হয়েছে বিশেষ নিরাপত্তা ব্যবস্থা।