হাজিরা যাতে নিরাপদ ও নির্বিঘ্নে হজ পালন করতে পারেন সে লক্ষ্যেই লাব্বাইক নামের একটি অ্যাপ চালু করেছে অন্তর্বর্তী সরকার। সোমবার রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম।
প্রেস সচিব বলেন, ‘হাজিরা লাব্বাইক অ্যাপটিতে নিবন্ধন করতে পারবেন, পরিবারের সদস্যদের যুক্ত করতে পারবেন। কোন হোটেলে থাকবেন, নামাজের সময়সূচি, ২৪ ঘন্টা টেলিমেডিশিন সুবিধা, সৌদিতে হাসপাতাল লোকেশন, অন্যান্য হাজিদের তথ্য, টিম লিডারের তথ্য, হজের গাইড, কুরআন হাদিস শুনতে ও পড়তে পারবেন।’
হাজি ছাড়া অন্যরাও এই অ্যাপ ডাউনলোড করে একই সুবিধা পাবেন বলে জানান তিনি।
বাংলাদেশি হাজিদের জন্য রোমিং সুবিধা দেওয়া হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘দেশি মোবাইল অপারেটরদের সমন্বয়ে এই সুবিধা দেওয়া হচ্ছে। তারা ১ থেকে ৬০ দিনের বিভিন্ন প্যাকেজ কিনতে পারবেন। সৌদিতে বসে দেশে কথা বলতে পারবেন। হজেরর সময়কালকে ধরে বিভিন্ন প্যাকেজ দিয়েছে মোবাইল অপারেটররা। সৌদির রেটের তুলনায় এটি ১০ থেকে ৩০ শতাংশ সাশ্রয়ী।’
সৌদি আরবে গিয়ে হাজিদের ইন্টারন্যাশনাল ক্রেডিট কার্ড লাগবে না জানিয়ে তিনি বলেন, ‘হাজিরা ক্যাশ নিয়ে যান, এটা একরকম ভোগান্তি। এবার তাদের প্রিপেইড কার্ড দেওয়া হচ্ছে। ইতিমধ্যে ১ হাজার জন প্রিপেইড কার্ড নিয়েছেন। এই কার্ড নিতে কোনো ঝামেলা নেই। এনআইডি কার্ড, ছবি আর তথ্য দিলেই এই কার্ড পাবেন হাজিরা। এই কার্ডের মাধ্যমে তারা সৌদিতে বিভিন্ন খরচ দিতে পারবেন। কুরবানির সময় পশুর দাম দেওয়ার ক্ষেত্রেও এটা সহজ হবে।’
সংবাদ সম্মেলনে ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রণালয়ের সচিব মুশফিক রহমান বলেন, ‘হাজিরা সহজেই হজ পালনকালে পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখতে পারবেন অ্যাপের মাধ্যমে। হাজিদের যে কোনো সমস্যা সমাধানে এই অ্যাপ কাজ করবে।’
সোমবার দিবাগত রাত অর্থাৎ মঙ্গলবার থেকে শুরু হচ্ছে চলতি বছরের হজ ফ্লাইট। প্রথম ফ্লাইটটি পরিচালনা করছে সৌদিয়া এয়ারলাইনস। রাত ২টা ১৫ মিনিটে ফ্লাইটটি ঢাকার ছাড়ার কথা। আর দ্বিতীয়টি হিসেবে যাবে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের ফ্লাইট।
এরই মধ্যে হজ যাত্রীরা আশকোনা হজ ক্যাম্পে আসতে শুরু করেছেন। তাদের আপ্যায়নে সব ধরনের ব্যবস্থা নেওয়ার কথা জানিয়েছে ধর্ম মন্ত্রণালয়। এখন পর্যন্ত কেই ভোগান্তির কোনো অভিযোগ করেন নি।
এ বছর হজে যেতে নিবন্ধন করেছেন ৮৭ হাজার ১০০ জন। এর মধ্যে সরকারি ব্যবস্থাপনায় হজে যাচ্ছেন ৫ হাজার ২০০ জন। আর বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় যাচ্ছেন ৮১ হাজার ৯০০ জন।
ধর্ম মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ৭৩ শতাংশ যাত্রীর ভিসা হয়েছে। অন্যান্যবারের মত এবারো সবার সৌদি আরব অংশের ইমিগ্রেশন হবে শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে।
হজ ফ্লাইট চলবে আগামী ৩১মে পর্যন্ত। এর মধ্যে বিমান ১১৮টি, সৌদিয়া ৮০টি আর ফ্লাইনাস ৩৪টি ফ্লাইট পরিচালনা করবে।