ভারত-পাকিস্তানের বিরোধে বাংলাদেশকে জড়াতেই পুশ-ইন করছে বিএসএফ। এমনটাই মনে করছেন বিশ্লেষকেরা। তাঁদের শঙ্কা, এ ধরনের ঘটনা ছড়াতে পারে সামরিক উত্তেজনা। দুই দেশের সম্পর্কেও নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে। পুশইন বা পুশ-ব্যাকের ঘটনা, দ্বিপাক্ষিক আলোচনার মাধ্যমে সমাধানের তাগিদ দিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা।
জানা গেছে, ঢাকা প্রতিবাদ জানানোর পরও বন্ধ হয়নি ভারতের পুশ-ইন। ৭ মে থেকে তিন দিনে তিনশর মতো মানুষকে পুশ-ইন করেছে বিএসএফ। এ ঘটনায় উদ্বেগ জানিয়ে দিল্লিকে ৯ মে চিঠি দিয়েছে ঢাকা। তারপরও বুধবার ৪৪ জনকে পুশ-ইন করেছে। রয়েছে বেশ কয়েকজন ভারতীয় ও রোহিঙ্গা।
বিশ্লেষকেরা বলছেন, বাংলাদেশ সীমান্তকে অস্থির করতে এ ধরনের কর্মকাণ্ড চালাচ্ছে ভারত।
নিরাপত্তা বিশ্লেষক অবসরপ্রাপ্ত মেজর এমদাদুল ইসলাম বলেন, ‘এগুলো মানবিক একটা দুর্যোগ সৃষ্টি করার অপচেষ্টা। আরেকটি হচ্ছে ভূরাজনীতিতে এ ধরনের অবস্থা সৃষ্টি করে বাংলাদেশকেও ভারত-পাকিস্তানের যে উত্তেজনা, সেখানে টেনে নিয়ে যাওয়ার অপচেষ্টা বলে আমি মনে করি।’
সাবেক কূটনীতিকদের মতে, টানাপোড়েনের মধ্যে পুশ-ইনের ঘটনা ঢাকা ও দিল্লির দূরত্ব আরও বাড়াবে। বলছেন, দুই দেশের সীমান্ত ব্যবস্থাপনা সংক্রান্ত সিদ্ধান্তেরও পরিপন্থি।
সাবেক রাষ্ট্রদূত মুন্সি ফয়েজ বলেন, ‘দুই দেশের সম্পর্ক উন্নয়নের জন্য যে বিভিন্ন সময় বলা হচ্ছে, তার বিপরীতে কাজ করবে এ বিষয়টি (পুশ-ইন করা)। এটাতে সমস্যা সৃষ্টি হতে পারে, উত্তেজনা সৃষ্টি হতে পারে, যেগুলো আমরা চাই না। এগুলো দুই দেশের দূরবর্তী স্বার্থের জন্য ক্ষতিকর। এটা হয়ত সাময়িকভাবে ভারতের কোনো রাজনৈতিক দলকে লাভ এনে দিতে পারে। কিন্তু ভারতের জন্যও এটি কোনোভাবে কাম্য নয়।’
পুশ-ইন বা পুশ-ব্যাক দুটোই মানবাধিকার লঙ্ঘন। বিশ্লেষকেরা বলছেন, এ নিয়ে ২ দেশের মধ্যে আলোচনা জরুরি।
অভিবাসন বিশ্লেষক আসিফ মুনির বলেন, ‘সীমান্ত রাজ্যের প্রচলিত যে আইন, নিয়মনীতিগুলো থাকে সেটার লঙ্ঘন তো হচ্ছেই। কিন্তু সেইটার জন্য এইখানে কিন্তু আন্তর্জাতিক কোনো প্লাটফর্মে গিয়ে হয়ত এটি নিয়ে প্রতিবাদ জানানোর বিষয় না। এটি দ্বিপাক্ষিকভাবে সমাধানের চেষ্টা করতে হবে কূটনৈতিকভাবে।’
ভারতের আরও দায়িত্বশীল আচরণ দেখানো উচিত বলে মনে করেন বিশ্লেষকরা।