হত্যা মামলায় ঢালাও আসামি বা গ্রেপ্তারে প্রশ্নবিদ্ধ হচ্ছে আইনি ব্যবস্থা। এমন মন্তব্য করে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, জুলাই-আগস্টের জঘন্যতম গণহত্যার বিচারকে প্রভাবমুক্ত রাখতে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত মামলা নিয়ে সরকারকে সতর্ক হতে হবে। তা নাহলে জুলাই গণহত্যার প্রকৃত খুনিদের বিচার নিয়ে তৈরি হতে পারে বিতর্ক।
জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার গণ-অভ্যুত্থানে সরকারি বাহিনী ও পতিত আওয়ামী লীগের অঙ্গ-সংগঠনের হামলায় প্রাণ হারান অসংখ্য মানুষ। আহত অনেকেই এখনো হাসপাতালে।
নির্বিচারে গণহত্যার ওইসব ঘটনায় অনেকের বিরুদ্ধে হত্যা ও হত্যাচেষ্টার অভিযোগে মামলা হয়েছে। আসামি সাবেক প্রধানমন্ত্রী, মন্ত্রী-এমপি, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য, সরকারি কর্মকর্তা, সাংবাদিক, ক্রীড়া ব্যক্তিত্বসহ চিত্রজগতের তারাকারাও।
অভিনেতা সিদ্দিকুর রহমানের ওপর হামলাসহ কয়েকজন অভিনয় শিল্পীর বিরুদ্ধে হত্যাচেষ্টা মামলার ঘটনা তীব্র বিতর্কের সৃষ্টি করেছে। সবশেষ গ্রেপ্তার হন নায়িকা নুসরাত ফারিয়া। মামলায় অভিযুক্ত সুবর্ণা মুস্তাফা, অপু বিশ্বাস, নিপুণসহ ১৭ শিল্পী।
আইনজীবী ওমর ফারুক বলেন, হাজারে হাজারে আসামি করে অজ্ঞাত মামলা, এগুলোতো ক্যানসার; রুল অব ল–এ। মিনিমাম রুল অব ল, যেসব দেশে আছে, সেসব দেশে এগুলোর অস্তিত্ব নেই। শুধু বাংলাদেশেই এটি চলমান।
ঢালাও মামলা ও গ্রেপ্তার জুলাই হত্যাকাণ্ডের বিচারে সুদূরপ্রসারী বিরূপ প্রভাব ফেলতে পারে। বিতর্কের পাশাপাশি নতুন বন্দোবস্তেও আস্থার সংকটে পড়তে পারে পুলিশ ও বিচার ব্যবস্থা; বলছেন বিশ্লেষকরা।
সমাজ ও রাজনৈতিক বিশ্লেষক ড. আব্দুল্লাহ-আল-মামুন বলেন, যদি গণমামলায় লাখ লাখ আসামির মধ্য থেকে কোনো একজন শিল্পী বা নির্দোষ কাউকে গ্রেপ্তার করা হয়, তাহলে কিন্তু নতুন ব্যবস্থায় আমরা যেটি বলছি আগে যে আস্থা নষ্ট হয়ে গিয়েছিল সেই আস্থাটা অর্জন করা যাবে না।
ঢালাও মামলা ও গ্রেপ্তার জুলাই হত্যাকাণ্ডের চিহ্নিত খুনিদের বিচার বাধাগ্রস্ত করবে বলে মনে করেন বিশ্লেষকরা। তাই এ বিষয়ে সরকারের নীতি-নির্ধারকদের এখনই কার্যকর পদক্ষেপ চান তারা।