হত্যার হুমকি এলেও মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচার নিশ্চিতে কোনো কিছু পরোয়া করা হবে না বলে মন্তব্য করেছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-২ এর চেয়ারম্যান বিচারপতি নজরুল ইসলাম চৌধুরী। মঙ্গলবার নবগঠিত এই ট্রাইব্যুনালের তিন বিচারপতির সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন।
এসময় অ্যাটর্নি জেনারেল ও চিফ প্রসিকিউটর দিনের ভোট রাতে গ্রহণকারী ও গুমের অপরাধীদেরও বিচারের কথা বলেন।
অন্তর্বর্তী সরকার ক্ষমতাগ্রহণের পর গত ১১ মাস ধরে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও তার সরকারের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল–১ এ। এখন পর্যন্ত ২৪টি মামলা এবং ৩৫৭টি অভিযোগ দাখিল হয়েছে ট্রাইব্যুনালে। এতে আসামি রয়েছেন কয়েকশ।
দ্রুত এসব আসামির ন্যায় বিচার নিশ্চিতে সম্প্রতি ট্রাইব্যুনাল- ২ গঠন করে সরকার। মঙ্গলবার এই ট্রাইব্যুনালের তিন বিচারপতিকে দেওয়া হয় সংবর্ধনা।
এসময় ট্রাইব্যুনালের চেয়ারম্যান জানান, আন্তর্জাতিক মানদণ্ড বজায় রেখেই অপরাধীদের বিচার নিশ্চিত করা হবে।
আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের চিফ প্রসিকিউটর তাজুল ইসলাম বলেন, ‘তারা ভীত নন। তারা ন্যায় বিচার নিশ্চিত করতে দৃঢ় প্রতিজ্ঞ। কোনো রকমের সন্ত্রাস তৈরি করে অথবা ভয় দেখিয়ে এই ন্যায় বিচার বন্ধ করা যাবে না।’
বিচারপতিদের উদ্দেশ্য করে এসময় চিফ প্রসিকিউটর বলেন, গত ১৬ বছরে গুম করে হত্যা ও নির্যাতনে জড়িতদের বিচারের মাধ্যমে এই অপরাধ থেকেও বাংলাদেশকে মুক্ত করতে হবে।
তাজুল ইসলাম বলেন, ‘বছরের পর বছর আটকে রাখা হতো বিনা বিচারে, পরিবারকে কোনো তথ্য না দিয়ে। তাদেরকে টর্চার করা হতো। চোখ বেধে অন্ধকার ঘরে ৮ বছর, সাড়ে ৮ বছর আটকে রাখা হয়েছে এমন দৃষ্টান্তও আমরা পেয়েছি। রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ অথবা অন্য কোনো অরাজনৈতিক প্রতিপক্ষ, যারা তাদের ক্ষমতার জন্য চ্যালেঞ্জ হয়ে উঠতে পারে এই কালচার থেকে বাংলাদেশকে বের করে আনতে হবে।’
আর কেউ যেন মানুষের ভোটাধিকার হরণ করতে না পারে এজন্য অপরাধীদের বিচার নিশ্চিতের কথা বলেন অ্যাটর্নি জেনারেল আসাদুজ্জামান। তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশের ইতিহাসে আর যাতে কেউ ক্ষমতায় টিকে থাকার জন্য দিনের ভোট রাতে করতে সাহস না করে, সে যেই হোক। সেই আলোর পথ দেখানোর জন্য হলেও আন্তর্জাতিক মানদণ্ডে এই ন্যায় বিচার প্রতিষ্ঠা করা প্রয়োজন।’
প্রসিকিউশন জানায়, শিগগিরি ট্রাইব্যুনাল এক থেকে কিছু মামলা ট্রাইব্যুনাল দুইয়ে হস্তান্তর করা হবে। তবে শেখ হাসিনার মূল মামলা চলবে ট্রাইব্যুনাল–১ এ।