ইরান-ইসরায়েল সংঘাতের জেরে জ্বালানি তেল ও এলএনজি আমদানিতে কোনো প্রভাব পরেনি। তাই আগামী মাসে জ্বালানি তেলের দাম বাড়ার কোনো সম্ভাবনা নেই বলে জানিয়েছেন জ্বালানি উপদেষ্টা ফাওজুল কবির খান।
আজ মঙ্গলবার রাজধানীর বিদ্যুৎ ভবনে এক অনুষ্ঠান শেষে সাংবাদিকদের উপদেষ্টা এ কথা বলেন।
এর আগে জালালাবাদ গ্যাস ও লাফার্জ হোলসিম বাংলাদেশের সঙ্গে গ্যাস বিক্রির একটি চুক্তি সই হয়। চুক্তির আওতায় লাফার্জ তার ক্যাপটিভ বিদ্যুৎ উৎপাদনে ১৬ এমএমসিএফডি গ্যাস পাবে।
এ সময় বাংলাদেশে নিযুক্ত ইইউ রাষ্ট্রদূত মাইকেল মিলার জানান, ২০৩০ সালের মধ্যে ২০ ভাগ নবায়নযোগ্য বিদ্যুৎ উৎপাদনের লক্ষ্যে বাংলাদেশে ১ দশমিক ৩ বিলিয়ন ইউরো বিনিয়োগ করবে ইইউভুক্ত কযেকটি দেশ। অনুষ্ঠানে পেট্রোবাংলা চেয়ারম্যান, ইইউ, সুইজারল্যান্ড ও স্পেনের রাষ্ট্রদূত উপস্থিত ছিলেন।
বিদ্যুৎ ও জ্বালানি উপদেষ্টা ফাওজুল কবির খান বলেন, ‘ইতিমধ্যেই বিপিসির একটি জাহাজ চলে এসেছে। যদি যুদ্ধ দীর্ঘায়িত না হয় তাহলে মনে হয় না এটার প্রভাব পড়বে না। আমরা তেলের দামও বাড়াব না, ভর্তুকিও বাড়াব না।’
অনুষ্ঠানে বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা বলেন, বাংলাদেশের জ্বালানি খাতে একটি নতুন দিগন্ত উন্মোচন করবে। জ্বালানি খাতে ভর্তুকি অনেক বেশি এবং জ্বালানি নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সঠিক মূল্য নির্ধারণ করা প্রয়োজন, অন্যথায় কোনো চুক্তি অনুমোদিত হবে না।
অনুষ্ঠান শেষে সাংবাদিকদের সাথে মতবিনিময়কালে উপদেষ্টা বলেন, অন্য শিল্প প্রতিষ্ঠানগুলো শহর কেন্দ্রিক হওয়ায় গ্যাসের চাপ কম হয়, এটি ছাতকে হওয়ায় গ্যাসের চাপ বেশি হবে। আগে চুক্তির যে অসুবিধা ছিল তা এখন অপসারণ করা হয়েছে এবং এই চুক্তিতে দুটি নতুন বিষয় সংযুক্ত হয়েছে: নতুন মূল্য নির্ধারণ করা হয়েছে এবং বার্কের (BARC) অধীনে আনা হয়েছে, ফলে বার্কের মাধ্যমে মূল্য হ্রাস-বৃদ্ধি হবে।
বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ বিডার নির্বাহী চেয়ারম্যান চৌধুরী আশিক মাহমুদ বিন হারুন বিশ্বব্যাপী বিদেশি বিনিয়োগ কমে যাওয়ার কথা উল্লেখ করে বলেন, বিদেশি বিনিয়োগ বৃদ্ধি করতে হলে বিদ্যমান কোম্পানিগুলো থেকে বেশি পরিমাণে নতুন বিনিয়োগ আসা উচিত এবং নতুন বিনিয়োগ আকর্ষণের চেষ্টা করতে হবে। লাফার্জহোলসিমের সাথে প্রথম বৈঠক ফলপ্রসূ হয়েছে বলে তিনি জানান।
লাফার্জহোলসিম এর প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ ইকবাল চৌধুরী সকলের প্রচেষ্টার জন্য অভিনন্দন জানিয়ে বলেন, তারা বাংলাদেশে আরও বিনিয়োগের আগ্রহ প্রকাশ করে এবং এই ধরনের আরও চুক্তি
লাফার্জহোলসিম এর প্রধান নির্বাহি কর্মকর্তা মোহাম্মদ ইকবাল চৌধুরী এবং জালালাবাদ গ্যাস এর কোম্পানি সচিব জিতেন্দ্র কুমার দাস নিজ নিজ কোম্পানির পক্ষে উভয় চুক্তিতে স্বাক্ষর করেন। চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে বিদ্যুৎ, জ্বালানিও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের মাননীয় উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান এবং বিশেষ অতিথি হিসেবে বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের নির্বাহী চেয়ারম্যান চৌধুরী আশিক মাহমুদ বিন হারুন উপস্থিত ছিলেন। জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগের সচিব মোহাম্মদ সাইফুল ইসলামের সভাপতিত্বে চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে বাংলাদেশে নিযুক্ত ইউরোপীয় ইউনিয়নের হেড অব ডেলিগেশন মাইকেল মিলার, সুইজারল্যান্ডের রাষ্ট্রদূত রেটো রেঙ্গলি, স্পেনের রাষ্ট্রদূত গ্যাব্রিয়েল সিসতিয়াগা ওচোয়া দ্যা চিনছেক্র, পেট্রোবাংলার চেয়ারম্যান রেজানুর রহমান এবং জালালাবাদ গ্যাসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সহ জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।