সেকশন

সোমবার, ১৭ মার্চ ২০২৫, ২ চৈত্র ১৪৩১
Independent Television
 

শাপলা-শাহবাগ কমরেডস হয়েছিল বলেই শেখ হাসিনার পতন: মাহফুজ 

আপডেট : ১৩ মার্চ ২০২৫, ০৪:৪৫ পিএম

শাপলা-শাহবাগের কর্মীরা কমরেডস হয়েছিল বলেই শেখ হাসিনার পতন ঘটেছিল বলে মন্তব্য করেছেন তথ্য উপদেষ্টা মাহফুজ আলম। বুধবার রাতে নিজের ভেরিফাইড ফেসবুকে এক পোস্টে তিনি এ মন্তব্য করেন। 

উপদেষ্টা মাহফুজ লিখেছেন,  ‘অভ্যুত্থান-উত্তর সময়ে একটি সংলাপমুখর সময় এসে উপস্থিত হয়েছে। শাপলা-শাহবাগের বাইনারির  বাইরে এসে শাহবাগের প্রাণভোমরা- মুজিববাদ, ভারতপন্থা ও শেখ পরিবারের বিরুদ্ধে পুরাতন শাপলা ও শাহবাগের কর্মীদের “কমরেডস” হয়ে ওঠার সুযোগ তৈরি হয়েছিল। আসলে, শাপলা-শাহবাগের কর্মীরা কমরেডস হয়েছিল বলেই শেখ হাসিনার পতন ঘটেছিল। এদিকে, শাপলার নেতৃত্বের জন্যও কারো প্রক্সি না হয়ে রাষ্ট্রে ইজ্জত ও শরিকানা দাবির সুন্দর সুযোগ উপস্থিত হয়েছিল।’ 

মাহফুজ লিখেছেন, ‘জামায়াত যুদ্ধাপরাধের সহযোগী ছিল। কিন্তু, নাহিদ ইসলাম যেভাবে বলেছেন এ অভ্যুত্থানের মাধ্যমে তারা কাফফারা দিয়েছেন। আমিও বলেছি, জামায়াতের যারা বাংলাদেশপন্থী, তারা এদেশে রাজনীতি করার অধিকার রাখেন। জামায়াতের নতুন প্রজন্মের অল্প কিছু ব্যতিক্রম বাদে কেউই পাকিস্তানপন্থী নন। ফলে, স্বাধীনতাবিরোধী ট্যাগ দিয়ে জামায়াত-শিবিরের রাজনৈতিক অধিকার ক্ষুণ্ণ করা যাবেনা। রাজনৈতিক ও আদর্শিক লড়াই করেই তাদের বিরুদ্ধে জিততে হবে। তাদের প্রোপাগান্ডা ওয়ারের জবাব দিতে হবে সত্য দিয়ে।’
  
শাহবাগে যারা গিয়েছিল একটা বড় অংশ 'চেতনা'র অন্ধতায় পড়ে গিয়েছিল মন্তব্য করে তিনি লেখেন, ‘অনেক ছাত্র- তরুণ ইসলামবিদ্বেষ থেকে না, বরং নিছক যুদ্ধাপরাধী বিচারের দাবিতে গিয়ে উপস্থিত ছিল। তরুণ প্রজন্মের আবেগকে আওয়ামীলীগ ও বামপন্থীদের মুজিববাদী অংশ কাজে লাগিয়ে এদেশে মবোক্রেসি কায়েম করেছিল। যার ফসল ছিক দীর্ঘ এক দশকের ফ্যাসিবাদী দু:শাসন- বিরোধীদলীয় কর্মীদের গুম, খুন, ধর্ষণ ও নিপীড়ন।’ 

মাহফুজ লেখেন, ‘কিন্তু, শাহবাগে অংশ নেয়া অনেক ছাত্র- তরুণই তাদের ভুল বুঝতে পেরে মুজিববাদী বয়ানের বাইরে যেতে চেয়েছেন। গত কয়েক বছর ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে তারা অংশীজন ছিলেন। আহতও নিহত হয়েছেন। তারা আমাদের সহযোদ্ধা। তারা আমাদের কমরেডস বটেন! এ অভ্যুত্থানে শক্তিশালী ভূমিকা রেখে তারা লীগ ও মুজিববাদের পরাজয় নিশ্চিত করেছেন। তারা ইতোমধ্যে তাদের রাজনৈতিক ভুলের প্রায়শ্চিত্ত তথা কাফফারা আদায় করেছেন।’ 

তথ্য উপদেষ্টা লিখেছেন, ‘আমি নিজে শাপলায় এসেছিলাম লংমার্চে নবীজির প্রতি ভালোবাসায়। ৫ই মে আমি আসতে পারিনি। কিন্তু, যুদ্ধাপরাধের বিচার ও জামায়াত নেতাদের ভূমিকা নিয়ে আমাদের আগ্রহ ছিলনা। আমরা মূলত নবীজির সম্মান ও ভালোবাসা সামনে রেখে ঢাকায় এসেছিলাম। আমি শর্ষিণাপন্থী যে মাদ্রাসায় পড়েছি, সেখানে জামায়াত নেতাদের ভ্রান্ত আকিদার অনুসারী হিসাবে গণ্য করা হত। আর, জামায়াত নেতাদের ফাঁসিকে দেখা হত তাদের আলেম ও সহি “ইসলাম” বিরোধিতার ফসল হিসাবে। জামায়াতকে আমরা ছোটবেলা থেকে আলেম-ওলামা বিরোধী হিসাবেই জেনে এসেছি।’ 

উপদেষ্টা মাহফুজ আরও লেখেন, ‘অনেকেই হয়ত খেয়াল করেন না, অধিকাংশ শাপলার কর্মীরাই আসলে জামায়াতের আকিদা ( বিশ্বাস ও কর্মপন্থা) ও নেতৃত্ব বিরোধী। শাপলার অনেক নেতৃত্বই জামায়াতের আলেম ও পীরপন্থা বিরোধিতার শিকার। এমনকি অনেকেই জামায়াত ও শিবির নেতাদের কর্তৃক নিগৃহীত ও নিপীড়িত হয়েছেন। কিন্তু, জামায়াত সফলভাবেই  তাদেরকে প্রক্সি হিসাবে ব্যবহার করতে পেরেছে। যেমন লীগ শাহবাগীদের ব্যবহার করেছে।’ 

মাহফুজ আলম লেখেন, ‘আমরা অভ্যুত্থান- উত্তর সময়ে উপনীত হয়েছি। এখানে জামায়াতকে বা শিবিরের কর্মীদের “রাজাকার”,  “স্বাধীনতাবিরোধী” বলে বধযোগ্য করার যে বয়ান সেটার বিরোধী আমরা। তেমনি, শাহবাগের ইসলামফোবিয়ার বিরুদ্ধেও আমাদের অবস্থান। এ ইসলামফোবিয়ার শিকার আমি নিজে হয়েছি। পাঞ্জাবি টুপি পরলেই জঙ্গীবাদী বলা থেকে শুরু করে মাদ্রাসাছাত্রদের ও আলেমদের বিমানবিকীকরণের জন্য শাহবাগ দায়ী। শাহবাগের সাংস্কৃতিক বন্দোবস্ত বিএনপি- জামায়াতসহ বিরোধীদলীয় নেতাকর্মীদের ঊন-মানুষে পরিণত করেছিল।’ 

উপদেষ্টা মাহফুজ বলেন, ‘আমি আমার আগের দুটি পোস্টে আলেম- ওলামাদের ধন্যবাদ দিয়েছিলাম তাদের শক্তিশালী ভূমিকার জন্য ( ছবি সংযুক্ত)। তৌহিদবাদী  জনতার নেতৃত্ব যেন ফ্রিঞ্জ এলেমেন্টের হাতে না গিয়ে  মূলধারার হকপন্থী আলেমদের হাতে থাকে, এ আশা রাখি। মূলধারার আলেমরা আশা করি গণ-অভ্যুত্থানের পক্ষে, দেশের পক্ষে দাঁড়িয়ে শাহবাগের মবোক্রেসি ও বিচারহীনতার সংস্কৃতির বিরুদ্ধে দাঁড়াবেন। নিজেরা সে সংস্কৃতির অনুকরণ করবেন না। এক্ষেত্রে আমরা মজলুম ও গণতান্ত্রিক মূলধারার আলেমদের পক্ষেই থাকব।’

বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকার শাপলার গণহত্যার বিচারের উদ্যোগ নিয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘প্রধান উপদেষ্টা শাপলার হত্যাযজ্ঞ ডকুমেন্টেশনের কথা বলেছেন। আশা করি, শাপলায় শহিদ মাদ্রাসাছাত্র ও আলেমদের বিরুদ্ধে যে নির্বিচার হত্যাযজ্ঞ চালিয়েছে বর্বর শেখ হাসিনা, তার সুষ্ঠু তদন্ত, ডকুমেন্টেশন ও বিচার নিশ্চিত হবে।’
  
মাহফুজ আলম লিখেছেন, ‘সাবেক শাহবাগী যারা অভ্যুত্থানের ভেতর দিয়ে নিজেদের ন্যায্য অবস্থান ব্যক্ত করেছেন, লড়াই করেছেন- তাদেরকে কোনভাবেই বধযোগ্য করে তোলা যাবে না। যাকে তাকে 'শাহবাগী' ট্যাগ দিয়ে অভ্যুত্থান- উত্তর সময়ে বৃহত্তর সংহতির সম্ভাবনাকে নস্যাৎ করা যাবে না। শাপলাপন্থী কেউ যদি ভাবেন, লীগ বিরোধী ও অভ্যুত্থানের পক্ষের সাবেক 'শাহবাগী'দের শত্রু ও বধযোগ্য বানিয়ে তারা সফল হবেন, তা কিন্তু হবে না। আপনি শাপলার হয়ে মবোক্রেসি ও বিচারহীনতার দাবি করলে আপনিও তো 'শাহবাগী' হয়ে উঠবেন,  নাকি? বামপন্থীদের মধ্যে যারা মুজিববাদ বিরোধী, তারা কিন্তু অনেক আগে থেকেই শাপলার হত্যাযজ্ঞের বিরুদ্ধে উচ্চকন্ঠ ছিলেন।  ফলে,শত্রু- মিত্র ফারাক করা আমাদের জন্য খুবই জরুরি।’ 

উপদেষ্টা মাহফুজ লিখেছেন, ‘তবে, পুরাতন শাহবাগী, যারা এখনো  শাহবাগের প্রাণভোমরা- মুজিববাদ, ভারতপন্থা ও শেখ পরিবারের প্রতি আনুগত্যকে নিজেদের আদর্শ বলে মনে করেন, তাদের বিন্দুমাত্র ছাড় দেয়া উচিত হবেনা। এরাই গুম ও গণহত্যার উস্কানি দিয়েছিল ও ন্যায্যতা তৈরি করেছিল। জুলাই গণহত্যার সময়ও এরা চুপ ছিল, কেউ কেউ বৈধতা উৎপাদনে ব্যস্ত ছিল। বিদেশ থেকে এখনো যারা ফ্যাসিবাদের পক্ষে সাফাই গাইছে, এদের একটা বড় অংশ শাহবাগের ফ্যাসিবাদী। এরা জনগণের শত্রু, ন্যায়বিচার ও  গণতন্ত্রের শত্রু, গণ-অভ্যুত্থানের শত্রু। এদের বিচার শুরু হয়েছে, শেষ ও হবে।’ 

অভ্যুত্থান- উত্তর বাংলাদেশে শাহবাগে বেড়ে ওঠা মবোক্রেসি ও বিচারহীনতার সংস্কৃতি সব পক্ষকেই বাদ দিতে হবে জানিয়ে তিনি লেখেন, ‘গণতন্ত্র, আইনের শাসন ও সহনাগরিকদের সাথে মর্যাদাপূর্ণ সংলাপ ও সংহতির দিকে সবাইকে এগুতে হবে। শাহবাগের ছাত্র- তরুণ যারা মুজিববাদের বিরুদ্ধে, ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে লড়েছেন, ' শাহবাগী' ট্যাগ দিয়ে তাদের বিরুদ্ধে মব উস্কে দেয়া বা বিভেদ তৈরি সবাইকে ক্ষতিগ্রস্ত করবে। রাজনৈতিক ভেনডেটা থেকে হরেদরে সবাইকে শাহবাগী বলা বন্ধ করতে হবে। গণ- অভ্যুত্থানের শক্তিগুলোর মধ্যে আদর্শিক ও সাংস্কৃতিক লড়াই থাকবেই। কিন্তু, গণ-অভ্যুত্থানের শহিদদের স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা রেখে আমাদেরকে নিজেদের মধ্যে বোঝাপড়া ও  মৈত্রী বাড়াতে হবে, শত্রু কমাতে হবে এবং  চিহ্নিত শত্রুর দীর্ঘমেয়াদে পরাজয় নিশ্চিত করতে হবে।’

বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য অ্যাডভোকেট এম রুহুল কুদ্দুস তালুকদার দুলু বলেছেন, ‘সংস্কারের কথা বলে নির্বাচন ডিসেস্বর মাস, জুন মাস, অমুক মাস, তমুক মাস না করে দ্রুত নির্বাচন দিন। নির্বাচন কমিশন...
দ্রুত সংস্কার শেষ করে নির্বাচন দেওয়াই দেশের জন্য মঙ্গলজনক, জাতিসংঘ মহাসচিবকে একথা বলেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। আর জাতীয় নাগরিক পার্টির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম জোর দিয়েছেন,...
জাতীয় নির্বাচন ও গণপরিষদ নির্বাচনের নামে দেশে কোনোভাবেই নির্বাচনে দেরি হতে দেওয়া হবে না বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান ড. আসাদুজ্জামান রিপন। শনিবার বিএনপির ফরিদপুর বিভাগীয় বর্ধিত...
নারী, শিশু নির্যাতন, নিপীড়নের গত ১৫ বছরের রেশ এখনো বলবৎ আছে, এ অবস্থা অব্যাহত থাকলে গ্রহণযোগ্যতা হারাবে অন্তর্বতী সরকার। এমন মন্তব্য করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী।
আইপিএলের নিলামে প্রথমে দল না পাওয়া বশকে পিএসএল ড্রাফট থেকে দলে টেনেছিল পেশোয়ার জালমি। কিন্তু আইপিএলে মুম্বাই ইন্ডিয়ানসের লিজার্ড উইলিয়ামস চোটে পড়ার পর মুম্বাই বশকে দলে টানতে চেয়েছে। বশও জালমির...
ঝিকরগাছা থানার ওসি বাবলুর রহমান জানান, অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে পুলিশ চারজনকে গ্রেপ্তার করেছে। ডাক্তারি পরীক্ষা সম্পন্নের জন্য ওই নারীকে যশোর সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনায় মামলার প্রস্তুতি চলছে।
লোডিং...

এলাকার খবর

 
By clicking ”Accept”, you agree to the storing of cookies on your device to enhance site navigation, analyze site usage, and improve marketing.