নির্বাচন ও সংস্কার ইস্যুতে রাজনৈতিক দলগুলোর মতভেদকে ইতিবাচক হিসেবে দেখছেন বিশ্লেষকেরা। এতে নির্বাচনের সুষ্ঠু পরিবেশ নিশ্চিতে চাপ তৈরি হবে বলে মনে করছেন তাঁরা। বিশ্লেষকেরা বলছেন, যত বিভেদই থাকুক, নির্বাচনের জন্য দিনশেষে সবাইকে এক হতেই হবে। গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠায় সব দলকে অভ্যুত্থানের সুযোগ কাজে লাগানোর আহ্বানও জানিয়েছেন তাঁরা।
গত ৫ আগস্টের পর নির্বাচন ও সংস্কার ইস্যুতে বিএনপির সঙ্গে কিছুটা দূরত্ব তৈরি হয় এক সময়ের জোটসঙ্গী জামায়াতের। তবে সম্প্রতি নির্বাচন নিয়ে দুই দলের চাওয়া প্রায় অভিন্ন। বিএনপি-জামায়াত আর সেনাপ্রধানের ১৮ মাসের সময়সীমা বিবেচনা করে আগামী ফেব্রুয়ারিতে ভোটের আশা অনেকের। তবে এ ক্ষেত্রে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) বক্তব্যে বাধা তৈরি হয়। দলটি নির্বাচনের পরিবেশ নিয়ে অভিযোগ করছে।
রাজনৈতিক দলগুলোর এমন বিভক্তি থাকলেও নির্বাচন নিয়ে শঙ্কা দেখছেন না বিশ্লেষকেরা। উল্টো এতে সুষ্ঠু ভোট আয়োজনে চাপ তৈরি হতে পারে বলে আশা করছেন তাঁরা।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞানের সহযোগী অধ্যাপক কাজী মো. মাহবুবুর রহমান বলেন, ‘নির্বাচন নিয়ে দুটো জরুরি আলোচনা সবসময়ই হচ্ছে। একটি হলো নির্বাচনের সম্ভাব্য তারিখ আর অন্যটি হলো উপযোগী পরিবেশ। এসব ব্যাপারসহ নির্বাচনের পরিবেশ যেন কোনো দলকে বিশেষ কোনো সুবিধা না দেয় বা অসুবিধার কারণ না হয় তা নিয়ে বৈঠক করতে হবে। আমি মনে করি, এ বৈঠকগুলোই নির্বাচনী পরিবেশে চাপ সৃষ্টি করবে।’
রাজনৈতিক বিশ্লেষক ড. আব্দুল্লাহ-আল-মামুন বলেন, নির্বাচন অংশগ্রহণমূলক করতে হলে সরকারকে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে অনেক বেশি বৈঠক বা যোগাযোগ বাড়াতে হবে।
এদিকে তৃতীয় শক্তির উত্থান ঠেকাতে সব দলকে নির্বাচন বিষয়ে একমত হতেই হবে বলে জানিয়েছেন বিশিষ্টজনেরা। দৈনিক পত্রিকা মানবজমিনের সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী বলেন, রাজনৈতিক লড়াই হয় নির্বাচনের জন্য। এই রাজনৈতিক দলগুলোর বিভিন্ন কর্মকাণ্ডে যদি নির্বাচনই অনিশ্চিত হয়ে যায় তাহলে তো দেশের ভবিষ্যৎ অন্ধকার।
জনগণের অধিকার রক্ষায়, অভ্যুত্থানের সুযোগ কাজে লাগিয়ে, নির্বাচন-সংস্কারসহ সব বিষয়ে দলগুলোকে আন্তরিক হওয়ার পরামর্শও দিয়েছেন বিশ্লেষকেরা।