শেখ হাসিনার পরিবারের যারা দুঃশাসন–দুর্নীতিতে জড়িত ছিল তাদের বিচার দৃশ্যমান করতে হবে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব শহীদ উদ্দীন চৌধুরী এ্যানি। শুক্রবার বিকেলে লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলার বাঙ্গাখাঁ ইউনিয়ন বিএনপির প্রতিনিধি সভায় এ কথা বলেন তিনি।
বাঙ্গাখাঁ ইউনিয়নের আমানউল্ল্যাপুর আয়েশা দাখিল মাদরাসা প্রাঙ্গণে অনুষ্ঠিত প্রতিনিধি সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন শহীদ উদ্দীন চৌধুরী এ্যানি। বক্তব্যে নির্বাচনের জন্য সংস্কার খুব জরুরি বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব এ্যানি বলেন, ‘এখনো পর্যন্ত বিচার কিন্তু দৃশ্যমান না। দ্রুত বিচার করতে হবে। হাসিনার পরিবারের যারা এই দুঃশাসন, দুর্নীতির সাথে জড়িত ছিল, যারা ওয়ার্ড, ইউনিয়ন পর্যায়ের গডফাদার হিসেবে চিহ্নিত ছিল। মানুষের অত্যাচার, নির্যাতন, দুঃশাসন তৈরি করেছিল। তাদের বিচারও দৃশ্যমান করতে হবে। আমাদের জনগণের স্পষ্ট বক্তব্য হলো– আমরা দ্রুত দৃশ্যমান বিচার দেখতে চাই। আরেকদিকে সংস্কারও দেখতে চাই। নির্বাচনের জন্য সংস্কার খুব জরুরি।’
শহীদ উদ্দীন চৌধুরী এ্যানি আরও বলেন, ‘দেশে ঝটিকা মিছিলের মাধ্যমে আওয়ামী লীগ আবার কিন্তু ভয়াবহ ফ্যাসিবাদ তৈরি করবে। একটা ভয়ংকর ফ্যাসিবাদ তৈরি করতে চাইবে। এ সুযোগ দেশের মানুষ আর কখনো দেবে না, দিতে চায় না। সেজন্য এই সরকারকে আরও বেশি তৎপর হতে হবে।’
বিএনপি নেতা এ্যানি বলেন, ‘হাসিনা পালিয়ে যাওয়ার ৮ মাস হয়েছে। কিন্তু এখনো ঢাকায় ফ্যাসিবাদের ঝটিকা মিছিল হচ্ছে। হঠাৎ করে ঝটিকা মিছিল করে দৌড়ে পালিয়ে যায়। এরা যারা অপরাধী, ষড়যন্ত্রকারী, খুনি, রক্তের দাগ এখনো শুকিয়ে যায়নি, তারাই অপকর্মগুলো করতেছে। যেটা হাসিনার নেতৃত্বে বিগত ১৬-১৭ বছর হয়েছে। এরা গণশত্রু ছিল, জনশক্তিতে পরিণত হয়েছিল। গণশত্রু ছিল বলেই পালিয়ে গেছে। হাসিনা পালিয়ে গেছে ঠিকই, কিন্তু হাসিনার অর্থ পালাইনি। সবাইকে গ্রেপ্তার করা সম্ভব হয়েছে?’
শহীদ উদ্দীন চৌধুরী এ্যানি বলেন, ‘৫ তারিখের আগে যেসব অবৈধ অস্ত্র ছিল আওয়ামী লীগের হাতে, হেলমেট বাহিনীর হাতে- এগুলো উদ্ধার করছে এ বর্তমান সরকার? ৫ তারিখ, ৬ তারিখ থানা লুট হয়েছে। এ লুটের অস্ত্র কী উদ্ধার হয়েছে? অবৈধ অস্ত্র ও লুটের অস্ত্র উদ্ধার হয়নি। আইনশৃঙ্খলার অবনতি তো স্বাভাবিক কারণেই হবে। ঝটিকা মিছিল যারা করে, এ অস্ত্রগুলো তারা আবার ব্যবহার করবে না? লুটের অস্ত্র এবং অবৈধ অস্ত্র দুটো মিলে তারা কিন্তু শক্তি সঞ্চয় করতে চায়। কিন্তু এ সুযোগ এ সরকার দিতে পারবে না। অস্ত্র যদি উদ্ধার না হয়– এই অস্ত্র আমাদের বিরুদ্ধে আবার ব্যবহার হবে।’
অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করেন জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট হাছিবুর রহমান। প্রধান বক্তা ছিলেন সদর উপজেলা (পূর্ব) বিএনপির সদস্য সচিব মো. মোখলেছুর রহমান হারুন।
বাঙ্গাখাঁ ইউনিয়ন বিএনপি সভাপতি আবুল কালাম হাওলাদারের সভাপতিত্বে এবং সাধারণ সম্পাদক ছৈয়দের রহমান রায়হানের সঞ্চালনায় এতে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সদর উপজেলা (পূর্ব) বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক মাঈন উদ্দিন চৌধুরী রিয়াজ, যুগ্ম আহ্বায়ক শাহ মো. এমরান, থানা যুবদল নেতা জাহাঙ্গীর আলম প্রমুখ।