চট্টগ্রামের রাউজানে গত কয়েক মাসে সংঘটিত হত্যাকাণ্ডের সাথে রাজনীতির সম্পৃক্ততা নেই বলে জানিয়েছেন উত্তর জেলা বিএনপির আহ্বায়ক গোলাম আকবর খোন্দকার। আজ শনিবার দুপুরে চট্টগ্রাম উত্তর জেলা বিএনপির দলীয় কার্যালয় নসিমন ভবনে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলন তিনি এ কথা জানান।
সংবাদ সম্মেলনে গোলাম আকবর খোন্দকার বলেন, ‘৫ আগস্টের পরে রাউজানে বেশ কয়েকটি হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে। আমি মনে করি, যে হত্যাকাণ্ডগুলোর ঘটনা ঘটেছে তার সঙ্গে রাজনৈতিক কোনো সংশ্লিষ্টতা নেই। পরিষ্কারভাবে আমি বললাম, রাজনৈতিক কোনো নেতার দ্বন্দ্বে এইগুলো হয় নাই। আপনারা যদি শুরু থেকে তালাশ করেন মূলত ১৯৮৫ সালের পর থেকে ফারুক হত্যার মাধ্যমে হত্যার ঘটনা শুরু হয় রাউজানে। এ পর্যন্ত শতাধিক ছাত্র-যুবককে প্রাণ দিতে হয়েছে। আওয়ামী লীগ সন্ত্রাসীরা এসব হত্যাকাণ্ডে যুক্ত ছিল।’
তিনি অভিযোগ করে বলেন, ‘নতুনভাবে ৫ আগস্ট পট পরির্বতনের পরে আবার সেই হত্যাকাণ্ডগুলো শুরু হয়েছে। এই হত্যাকাণ্ডের মূল কারণ হচ্ছে মাটিকাটা, খালের বৈধ-অবৈধ বালুমহল দখল, দখলের দ্বন্দ্ব, ব্যবসায়িক দ্বন্দ্ব, চাঁদাবাজি, সরকারের বিভিন্ন প্রকৌশল অধিদপ্তরের ঠিকাদারদের থেকে কমিশন বাণিজ্যসহ বিভিন্ন অপকর্মে জড়িত সন্ত্রাসীরা এই হত্যাকাণ্ডগুলো করে আসছে।’
বিএনপি চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা বলেন, ‘বিগত কয়েক মাসে রাউজানে বিভিন্ন অস্ত্র-শস্ত্র কেনা হয়েছে। এটা অনেকেই জানেন, হয়তো প্রশাসনও জানে। সুতরাং সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডকে আড়াল করার জন্য রাজনীতির ছত্রছায়া ব্যবহার করছে। আমাদের দলের মধ্যে আমরা দীর্ঘ ১৭ বছর আন্দোলন-সংগ্রাম করেছি। আমাদের নামে অসংখ্য মামলা। আমি জীবনে কাউকে একটা ঢিল মারিনি। আমাকে রাজপথের মিছিল থেকে গ্রেপ্তার করে নিয়ে গেছে। বেশ কিছুদিন আমি কারাগারে ছিলাম। শুধু আমি না, আমাদের অনেক নেতা-কর্মীর নামে মামলা আছে। কিন্তু সেই সুবাদে এখন কেউ যদি অপরাধ করে বিএনপির নেতা-কর্মীদের পাশে বসে থাকে তাহলে আমাদেরকে ফাইন্ডআউট করা উচিত। সেটাকে যথোপযুক্ত শাস্তি দেওয়া উচিত বলে মনে করি।’
রাউজানের সাম্প্রতিক হত্যাকাণ্ডের প্রেক্ষিতে তিনি আরও বলেন, ‘ঘটনার পরই দেখা যায়, কাদের নামে মামলা দিলে চাঁদা আদায় করা যাবে—এ ধরনের তোড়জোড় শুরু হয়। কোনো সন্ত্রাসী দলের নেতা-কর্মী হতে পারে না। কারণ প্রকৃত নেতা সন্ত্রাসী হতে পারে না। রাউজানের সাম্প্রতিক হত্যাকাণ্ডে দেখেছি, হত্যাকাণ্ডের পর কাকে কাকে আসামি করা হবে সে তোড়জোড় শুরু হয়ে যায়। কারণ কাকে কাকে আসামি করলে তার থেকে চাঁদা আদায় করা যাবে।’
এদিকে, দলীয় নেতা-কর্মী কেউ অপরাধে জড়ালে তাদের ছাড় দেওয়া হবে না নলেও সাফ জানিয়ে দেন তিনি। এছাড়া আওয়ামী লীগের আমলে আধিপত্য বিস্তারে সন্ত্রাসী কার্যক্রম করা অস্ত্রধারীরা কার আশ্রয়ে আছে তাও খুঁজে দেখতে গোয়েন্দাদের অনুরোধ জানান তিনি।
গত বছরের ৫ আগস্টের পর থেকে রাউজানে অন্তত ৯টি হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে।