সরকারের একটি মহল মেয়র হিসাবে শপথ নেওয়ার পথে বাধা সৃষ্টি করছে বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপি নেতা ইশরাক হোসেন। শেষ পর্যন্ত আদৌ শপথ নিতে পারবেন কিনা সেই শঙ্কায় রয়েছেন তিনি। ইনডিপেনডেন্ট টেলিভিশনকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে ইশরাক হোসেন এ শঙ্কার কথা জানান। তবে একে রাজনৈতিক যুদ্ধ হিসেবে উল্লেখ করে লড়াই চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দেন বিএনপির এই নেতা।
আইনি লড়াইয়ে জয় পেয়েছেন। আদালত থেকেও ঢাকা দক্ষিণের মেয়র হিসেবে নাম ঘোষণা হয়েছে। এরপর নির্বাচন কমিশন থেকেও প্রকাশ হয়েছে গেজেট। তবুও ঢাকা দক্ষিণ সিটিরমেয়র হিসাবে শপথ নেওয়ার ক্ষেত্রে শঙ্কা কাটছে না বিএনপি নেতা ইশরাক হোসেনের।
ইশরাক হোসেন বলেন, ‘আমি শপথ কবে নিচ্ছি, আদৌ নিতে পারব কিনা, নিতে দেবে কিনা এটাও সরকারের ওপর নির্ভর করছে। অবশ্যই আশঙ্কা রয়েছে যেহেতু পূর্ববর্তী ধাপগুলোতে আমি বাধা ফেইস করে এসেছি। আমি ব্যক্তিগতভাবে এটা নিশ্চিত যে সরকারের একটি মহল দৃঢ়ভাবে চাচ্ছে না এবং থামানোর জন্য তারা আপ্রান চেষ্টা করছে, এটা আমি নিশ্চিত।’
শপথ নিলে ইশরাক হোসেন কতদিন মেয়র পদে থাকতে পারবেন তা নিয়ে আইনগত জটিলতা রয়েই গেছে। সেক্ষেত্রে কি ভাবছেন জানতে চাইলে ইশরাকন বলেন, ‘আমি যদি লজিক দিয়ে আসতে চাই, ১ মাস মেয়াদ কার রয়েছে? অপসারিত মেয়র তাপসের। তার ১ মাস মেয়াদ রয়েছে। আমার তো মেয়াদ শুরুই হয়নি। এখানে মেয়াদ শেষের প্রশ্নটা অবান্তর বলে আমি মনে করি। প্রয়োজনে এটার সমাধান চাওয়ার জন্য আমরা আবার আদালতের দ্বারস্থ হবো।’
মেয়র পদের গেজেট নিয়ে অযথাই বিতর্ক সৃষ্টি করা হচ্ছে বলেও মন্তব্য করে তিনি বলেন, ‘এটা কিন্তু এটা পলিটিক্যাল ফাইটে পরিণত হয়েছে, আমার জন্য। আমি মেয়ার হিসেবে দায়িত্ব নিলে কারও কারও স্বার্থে আঘাত লাগতে পারে। কারও কারও রাজনৈতিক স্বার্থ থাকতে পারে। কারও কারও অর্থনৈতিক স্বার্থ থাকতে পারে।’
মেয়র হিসাবে শপথ নেয়ার বিষয়টি পুরোপুরি সরকারের ওপর নির্ভর করছে বলে জানান ইশরাক।
২০২০ সালের ১ ফেব্রুয়ারি দক্ষিণ সিটি করপোরেশন (ডিএসসিসি) নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী শেখ ফজলে নূর তাপস মেয়র নির্বাচিত হন। ভোটে কারচুপির অভিযোগ করে ইশরাক আদালতে মামলা করেন। গত ২৭ মার্চ নির্বাচনের ফল বাতিল করে সাবেক মেয়র সাদেক হোসেন খোকার ছেলে ইশরাক হোসেনকে মেয়র ঘোষণা করেন আদালত।
এরপর গত ২২ এপ্রিল ঢাকা দক্ষিণের মেয়র হিসেবে ইশরাককে বিজয়ী ঘোষণা করে গেজেট প্রকাশ নিয়ে আইন মন্ত্রণালয়ের মতামত জানতে চেয়ে চিঠি দেয় নির্বাচন কমিশন। গত ২৭ এপ্রিল গেজেট প্রকাশ করে কমিশন।
গেজেট প্রকাশের পর আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল সাংবাদিকদের জানান, মতামত দেওয়ার আগেই গেজেট প্রকাশ করেছে ইসি। আর ইসি বলছে, আদালতের রায় বাস্তবায়ন করতেই বিএনপি নেতা ইশরাক হোসেনকে ঢাকা দক্ষিণ সিটির মেয়র ঘোষণা করে গেজেট প্রকাশ করা হয়েছে।
এর আগে, গত মঙ্গলবার ইশরাক হোসেনকে মেয়র ঘোষণা করে গেজেট প্রকাশে নির্বাচন কমিশনের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)। গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে ইশরাককে মেয়র ঘোষণা করে দেওয়া আদালতের রায়কেও একতরফা বলে দাবি করে দলটি।