প্রধান উপদেষ্টার পদত্যাগ নয়, বিএনপি নির্বাচনের রোডম্যাপ চায় বলে জানিয়েছেন দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদ। শনিবার ইঞ্জিনিয়ার্স ইন্সটিটিউটে একটি গ্রন্থের মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন।
সালাহউদ্দিন বলেন, ‘আমরা প্রধান উপদেষ্টার পদত্যাগ চাইনি, চাইও না। আমরা কেবল নির্বাচনের সঠিক রোডম্যাপ চাই। দেশের সেনাবাহিনীকে যেন বিতর্কিত না করা হয়, সার্বভৌমত্ব যেন বিঘ্ন না হয়, জাতীয় ঐক্যমত্যের ভিত্তিতে যেন যেকোনো সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।’
অনুষ্ঠানে বিএনপি নেতা সালাহউদ্দিন আরও বলেন, ‘শেখ হাসিনা একজন জঘন্য হত্যাকারী। মাদ্রাসা ছাত্রদের হত্যা করেছে, আকাশ থেকে গুলি করে নিরীহ নারী-শিশুকে হত্যা করেছে। সমস্ত শহীদ হত্যার বিচার করতে আরও ট্রাইবুনাল গঠন করা হোক। এই দেশের আদালতে খুনি শেখ হাসিনার সরকারের বিচার করা হবেই।’
গত বুধবার ঢাকা সেনানিবাসে এক অনুষ্ঠানে কর্মকর্তাদের উদ্দেশে সেনাপ্রধান জেনারেল ওয়াকার–উজ–জামানের দেওয়া কিছু বক্তব্য গণমাধ্যমে প্রকাশ পায়। অনুষ্ঠানে সেনাপ্রধান, এ বছরের ডিসেম্বরের মধ্যে সংসদ নির্বাচন শেষ করার বিষয়ে নিজের অবস্থান তুলে ধরেন বলে এই প্রতিবেদনগুলোতে দাবি করা হয়।
এর পরদিন উপদেষ্টা পরিষদের এক বৈঠকে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস নিজের পদত্যাগের ভাবনার কথা জানান। বিষয়টি নিয়ে বৃহস্পতিবার থেকেই নানা মহলে আলোচনা শুরু হয়। ওইদিন রাতেই প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে দেখা করেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক ও সাবেক তথ্য উপদেষ্টা নাহিদ ইসলাম। বৈঠক শেষে তিনি বিবিসি বাংলাকে জানান, প্রধান উপদেষ্টা পদত্যাগের বিষয়টি বিবেচনা করছেন।
উদ্বুদ্ধ পরিস্থিতিতে সব রাজনৈতিক দলগুলোকে নিয়ে একটি সর্বদলীয় বৈঠকের আহ্বান করেন জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান।
গত শুক্রবার প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী ফয়েজ আহমদ তার ফেসবুকে লেখেন, ‘প্রধান উপদেষ্টা পদত্যাগ করবেন না। অধ্যাপক ডক্টর মুহাম্মদ ইউনূসের ক্ষমতা প্রয়োজন নেই, কিন্তু বাংলাদেশের জন্য, বাংলাদেশের শান্তিপূর্ণ ডেমোক্রেটিক ট্রাঞ্জিশনের জন্য ড. ইউনূস স্যারের দরকার আছে।’
অবশ্য এরপর পরই তিনি সেই লেখাটি তুলে নেন। নতুন একটি পোস্টে ফয়েজ আহমদ লেখেন, ‘ডিসক্লেইমার। মাননীয় প্রধান উপদেষ্টা স্যারের বিষয়ে দেওয়া স্ট্যাটাসটি আমার ব্যক্তিগত মতামত। এটাকে নিউজ না করার অনুরোধ জানানো যাচ্ছে। ধন্যবাদ সহ।’
একই দিন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদ ইনডিপেনডেন্ট টেলিভিশনকে জানান, বিএনপি অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের পদত্যাগ চায়নি। পদত্যাগের ইচ্ছা তার ব্যক্তিগত বিষয়। প্রধান উপদেষ্টা শেষ পর্যন্ত দায়িত্ব থেকে সরে গেলে রাষ্ট্র পরবর্তী করণীয় ঠিক করতে পারে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
এ পরিস্থিতিতে শনিবার সন্ধ্যায় প্রধান উপদেষ্টার সরকারি বাসভবন যমুনায় জামায়াতে ইসলামী ও বিএনপির নেতাদের সঙ্গে বৈঠকে বসছেন ড. মুহাম্মদ ইউনূস।