কুয়েতে বাংলাদেশের ৫৪তম স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উদযাপন উপলক্ষে জমকালো সংবর্ধনার আয়োজন করে বাংলাদেশ দূতাবাস কুয়েত। গতকাল বুধবার রাতে ক্রাউন প্লাজা হোটেলে এই সংবর্ধনার আয়োজন করা হয়।
সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন কুয়েতের বিচারবিষয়ক মন্ত্রী নাসের ইউসুফ মোহাম্মদ আল-সুমাইত। এছাড়া কুয়েতে নিযুক্ত বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রদূত, কূটনৈতিক মিশনের সদস্য, কুয়েতের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা, গণ্যমান্য ব্যক্তি, কুয়েতে অবস্থিত বাংলাদেশ মিলিটারি কন্টিনজেন্টের সদস্য, স্থানীয় এবং প্রবাসী গণমাধ্যমকর্মী এবং বাংলাদেশ কমিউনিটির সদস্যসহ মোট ৪০০ জনেরও বেশি অতিথি অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিল।
কুয়েতে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মেজর জেনারেল সৈয়দ তারেক হোসেন, দূতাবাসের অন্যান্য কর্মকর্তা ও তাদের স্ত্রীরা সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে আগত অতিথিদের স্বাগত জানায়।
বাংলাদেশ ও কুয়েতের জাতীয় সঙ্গীতের মাধ্যমে বর্ণাঢ্য সংবর্ধনা অনুষ্ঠান শুরু হয়। রাষ্ট্রদূত মেজর জেনারেল সৈয়দ তারেক হোসেন তাঁর স্বাগত বক্তব্যে কুয়েতে বসবাসরত প্রবাসী বংলাদেশিদের প্রতি অব্যাহত সমর্থনের জন্য কুয়েতের আমির শেখ মিশাল আল-আহমদ আল-জাবের আল-সাবাহ, কুয়েতের শীর্ষ নেতারা এবং কুয়েতের জনগণের প্রতি গভীর কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।
রাষ্ট্রদূত তাঁর বক্তব্যে উল্লেখ করেন, স্বাধীনতার পর কুয়েতই প্রথম উপসাগরীয় দেশ যেটি বাংলাদেশকে স্বীকৃতি দিয়েছিল। ১৯৭৪ সালে কূটনৈতিক সম্পর্ক প্রতিষ্ঠার পর থেকে বাংলাদেশ এবং কুয়েত রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক, আমদানি, রপ্তানি, বাণিজ্য ও বিনিয়োগ, জনশক্তি, কৃষি, শিক্ষা, পর্যটন এবং প্রতিরক্ষা খাতসহ বিস্তৃত ক্ষেত্রে চমৎকার দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক উপভোগ করছে। রাষ্ট্রদূত আশা প্রকাশ করেন, কুয়েতের আমির শেখ মিশাল আল-আহমদ আল-জাবের আল-সাবাহ এবং বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী প্রধান উপদেষ্টা নোবেল বিজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনুসের দূরদর্শী নেতৃত্বে দুই বন্ধুপ্রতীম দেশের মধ্যে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক নতুন উচ্চতায় পৌঁছাবে।
রাষ্ট্রদূত তাঁর বক্তব্যে স্বাধীনতার পর থেকে বাংলাদেশের অগ্রগতি ও উন্নয়নের অসাধারণ যাত্রা তুলে ধরেন, আর্থ-সামাজিক অগ্রগতিতে উল্লেখযোগ্য অর্জনের বিষয় তুলে ধরেন। এছাড়াও তিনি ২০২৪ সালের জুলাই-আগস্ট গণঅভ্যুত্থানের কথা উল্লেখ করে একটি ন্যায়সঙ্গত, স্বচ্ছ এবং জবাবদিহিমূলক সমাজের আকাঙ্ক্ষাকে সমুন্নত রাখতে এবং দেশে গণতান্ত্রিক রীতিনীতিকে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দিতে এই গণঅভ্যুত্থানের ভূমিকার উপর গুরুত্ব আরোপ করেন।
গত ৭ থেকে ১০ এপ্রিল ঢাকায় অনুষ্ঠিত বিনিয়োগ শীর্ষ সম্মেলনের কথা উল্লেখ করে রাষ্ট্রদূত তাঁর বক্তব্যে কুয়েত এবং বিশ্বের সকল বন্ধুপ্রতিম দেশকে বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলে বিনিয়োগ এবং পারস্পরিক প্রবৃদ্ধি ও সমৃদ্ধির অংশীদার হওয়ার জন্য আমন্ত্রণ জানান। বক্তৃতায় তিনি বাংলাদেশের পর্যটন খাতের উপরও আলোকপাত করেন।
রাষ্ট্রদূত বাংলাদেশের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য এবং বাংলাদেশিদের আতিথেয়তা উপভোগ করার জন্য সবাইকে বাংলাদেশ সফর করার আমন্ত্রণ জানান। সমাপনী বক্তব্যে রাষ্ট্রদূত কুয়েতে বসবাসরত প্রবাসী বাংলাদেশিদের বাংলাদেশের উন্নযয়নে অবদান রাখার জন্য ধন্যবাদ জানান এবং এই প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখার উদাত্ত আহ্বান জানান।