মোবাইল ব্যবহারে বাংলাদেশের পুরুষদের চেয়ে পিছিয়ে আছেন নারীরা। এমনকি মোবাইলে ইন্টারনেট ব্যবহারেও পিছিয়ে তারা। মোবাইল থাকলেও দেশের নারীদের ইন্টারনেট ব্যবহারের হার পুরুষদের তুলনায় কম। গত ১৫ মে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে এ তথ্য প্রকাশ করেছে মোবাইল সেবাদাতা প্রতিষ্ঠানের বৈশ্বিক সংগঠন গ্লোবাল সিস্টেম ফর মোবাইল কমিউনিকেশনস অ্যাসোসিয়েশন (জিএসএমএ)।
মোবাইল ইন্টারনেট ব্যবহার নিয়ে নারী ও পুরুষদের মধ্যে যে ব্যবধান রয়েছে, তা প্রকাশ করতেই প্রতি বছর এ ধরনের প্রতিবেদন প্রকাশ করে জিএসএমএ। সে ধারাবাহিকতায় এবারও ‘দ্য মোবাইল জেন্ডার গ্যাপ রিপোর্ট ২০২৪’ শীর্ষক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে বৈশ্বিক সংগঠনটি।
প্রতিবেদনে নিম্ন ও মধ্যম আয়ের ১২টি দেশের তথ্য প্রকাশ করেছে জিএসএমএ। দেশগুলো হলো মিশর, ইথিওপিয়া, কেনিয়া, সেনেগাল, নাইজেরিয়া, উগান্ডা, বাংলাদেশ, ভারত, পাকিস্তান, ইন্দোনেশিয়া, গুয়েতেমালা ও মেক্সিকো।
প্রতিবেদন বলছে, বাংলাদেশে ৮৫ শতাংশ পুরুষ ও ৬৮ শতাংশ নারী মোবাইলের মালিক। মোবাইলের মালিকানায় নারী–পুরুষের ব্যবধান ২০ শতাংশের কাছাকাছি। মোবাইল থাকলেও ইন্টারনেট ব্যবহারে পুরুষদের চেয়ে বেশ পিছিয়ে নারীরা। পুরুষদের মধ্যে এই হার ৪০ শতাংশ। আর নারীদের মধ্যে ২৪ শতাংশ।
মোবাইল থাকা পুরুষদের মধ্যে ইন্টারনেট ব্যবহার করেন অর্ধেক। আর নারীদের মধ্যে তিনভাগের একভাগ।
এতে আরও বলা হয়, দৈনিক মোবাইল ইন্টারনেট ব্যবহারেও নারীরা পিছিয়ে। বাংলাদেশের ৩৮ শতাংশ পুরুষ দৈনিক মোবাইল ইন্টারনেট ব্যবহার করেন। আর নারীদের ক্ষেত্রে এই হার ২১ শতাংশ।
তবে, নারীরা ইন্টারনেটের ব্যবহার সম্পর্কে জানেন। তাঁদের ইন্টারনেট ব্যবহারে আগ্রহ পুরুষের চেয়ে বেশি। এ সংক্রান্ত সচেতনতায়ও পুরুষের কাছাকাছি নারীরা। দেশের ৭৬ শতাংশ পুরুষ ও ৭৪ শতাংশ নারী ইন্টারনেট ব্যবহারে আগ্রহ প্রকাশ করেছেন।
জিএসএমএর প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ইন্টারনেট ব্যবহারে নারীদের পিছিয়ে থাকার বড় কারণ শিক্ষা ও ডিজিটাল দক্ষতার অভাব। এ ছাড়া মোবাইল ও মোবাইল ইন্টারনেট ব্যবহারের সক্ষমতা না থাকা এবং ইন্টারনেট যোগাযোগে অভিজ্ঞতা না থাকাও এর কারণ।
নিম্ন ও মধ্যম আয়ের দেশগুলোয় মোবাইলের মালিকানায় নারীরা পিছিয়ে আছেন। বিশেষ করে অস্বচ্ছল, পড়াশোনা না জানা, গ্রামাঞ্চলে বসবাস করা বা বিশেষভাবে সক্ষম নারীরা আরও বেশি পিছিয়ে আছেন।
জিএসএমএ গত বছর এ জরিপ চালায়। জরিপে ভারত বাদে বাকি ১১টি দেশে ১৫ বছর ও এর বেশি বয়সের এক হাজার নারী ও পুরুষের তথ্য নেওয়া হয়েছে। ভারতে ২ হাজার জনের ওপর জরিপ চালানো হয়।