কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বা এআই প্রযুক্তি নিয়ে কাজ করছে এমন প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানগুলোর তালিকা তৈরি করলে সেখানে মাইক্রোসফটের নাম থাকবে ওপরের দিকেই। চ্যাটজিপিটি নির্মাতা ওপেনএআই’র সবচেয়ে বড় বিনিয়োগকারী তাঁরাই। তবে নিজেদের এআই উচ্চাকাঙ্ক্ষা পূরণে এবার আর ওপেনএআই’র ওপর নির্ভর থাকতে চাইছে না উইন্ডোজ নির্মাতা প্রতিষ্ঠানটি। সম্প্রতি জানা গেল, মাইক্রোসফট নিজেই তৈরি করেছে এআই ‘রিজনিং’ মডেল। নিজেদের এআই চ্যাটবট ‘কোপাইলট’-কে আরও শক্তিশালী করে তুলতে তাঁদের নেওয়া বিভিন্ন উদ্যোগের অংশ হিসেবেই নিজস্ব এআই মডেল নিয়ে এসেছে মাইক্রোসফট।
তবে শুধু ওপেনএআই’র ওপর নির্ভরতা কমানোই নয়, মাইক্রোসফট এবার ওপেনএআই-কেও চ্যালেঞ্জ জানাতে পারে এআই খাতে। অন্তত তাঁদের সাম্প্রতিক কার্যক্রম তেমনটাই ইঙ্গিত করছে। সম্প্রতি প্রযুক্তি খাতের ব্যবসাবিষয়ক আমেরিকান সংবাদমাধ্যম দ্য ইনফরমেশন জানিয়েছে, মাইক্রোসফট এমন একটি এআই ‘রিজনিং’ মডেল তৈরি করেছে যাকে সক্ষমতার দিক থেকে ওপেনএআই’র ০১ (ও ওয়ান) এবং ০৩-মিনি (ওথ্রি-মিনি) মডেল দুটির সাথে তুলনা করা যায়।
বিভিন্ন সূত্র বলছে, ওপেনএআই’র ০১ (ও ওয়ান) মডেলটি কীভাবে কাজ করে সে সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য জানতে চেয়েছিল মাইক্রোসফট। কিন্তু নিজেদের সবচেয়ে বড় বিনিয়োগকারীর অনুরোধ প্রত্যাখ্যান করেছে ওপেনএআই। এরপর থেকেই প্রতিষ্ঠান দুটির মধ্যে সম্পর্কের টানাপোড়েন চলছে।
মাইক্রোসফট চাইছে কোপাইলট চ্যাটবটের উন্নয়নে ওপেনএআই’র ওপর নির্ভরশীল না থাকতে। তাই উন্নত এআই মডেলের খোঁজে বিভিন্ন অপশনগুলো যাচাইবাছাই করছে প্রতিষ্ঠানটি। ‘রিজনিং’ এআই মডেল ছাড়াও এমএআই নামের একাধিক এআই মডেলের একটি ফ্যামিলি তৈরি করেছে মাইক্রোসফট। সংবাদমাধ্যম ব্লুমবার্গ জানাচ্ছে, মাইক্রোসফটের এই মডেলগুলোও বাজারে ওপেনএআই’র মডেলের সাথে প্রতিদ্বন্দ্বীতা করতে সক্ষম এবং চলতি বছরের শেষ দিকে তাঁরা এই মডেলগুলোকে এপিআই (অ্যাপ্লিকেশন প্রোগ্রামিং ইনটারফেস)-এর মাধ্যমে বাজারে আনতে পারে।
নিজেরা এআই মডেল তৈরির পাশাপাশি অন্যান্য ওপেন সোর্স বা উন্মুক্ত উৎস থেকেও বিকল্প এআই মডেল নিয়ে পরীক্ষানিরীক্ষা করছে মাইক্রোসফট। কোপাইলট বটে ওপেনএআই’র প্রযুক্তির সম্ভাব্য বিকল্প হিসেবে মেটা, এক্সএআই, অ্যানথ্রপিক ও ডিপসিকের বিভিন্ন এআই মডেলগুলোর কথা ভাবছে মাইক্রোসফট।
উল্লেখ্য, এখন পর্যন্ত ওপেনএআই’তে ১৪ বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ করেছে মাইক্রোসফট। তবে এআই খাতে স্বনির্ভর হতে ডিপমাইন্ড ও ইনফ্লেকশনের সহ-প্রতিষ্ঠাতা মুস্তাফা সুলেমানকে নিজেদের এআই বিভাগের প্রধান হিসেবে নিয়োগ দিয়েছে প্রতিষ্ঠানটি। বলে রাখা আব্যশ্যক, এআই গবেষণা প্রতিষ্ঠান হিসেবে ডিপমাইন্ড ও ইনফ্লেকশন বিশ্বজুড়ে পরিচিত ও সমাদৃত।
তথ্যসূত্র: টেকক্রাঞ্চ