ইউক্রেন ইস্যুতে ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রশাসনের অবস্থানের কারণে এক ধরনের অবিশ্বাস তৈরি হয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের ইউরোপীয় মিত্রদের সঙ্গে। এরই অংশ হিসেবে ইলন মাস্কের স্টারলিংকের বদলে ফরাসি স্যাটেলাইট ইউটেলস্যাট‑এর সঙ্গে যুক্ত হতে যাচ্ছে ইউক্রেন। আর এই সংযুক্তির খরচ বহন করবে জার্মানি।
বার্তা সংস্থা রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ইউরোপ ইলন মাস্কের স্টারলিংকের ওপর অনেকটাই নির্ভরশীল। এখন পরিবর্তিত বাস্তবতায় এই নির্ভরতা কমিয়ে আনতে উদ্যোগী হয়েছে ইউরোপ। এরই অংশ হিসেবে ইউটেলস্যাট‑এর সঙ্গে যুক্ত হতে যাচ্ছে ইউক্রেন।
এ বিষয়ে ইউটেলস্যাট‑এর প্রধান নির্বাহী ইভা বারনেক রয়টার্সকে বলেন, ইউটেলস্যাট উচ্চগতির স্যাটেলাইট ইন্টারনেট সেবা জার্মানির এক প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে ইউক্রেনকে এক বছরের জন্য দিয়েছিল। এর ব্যয় বহন করেছিল জার্মান সরকার। অবশ্য এর ব্যয় সম্পর্কে কোনো মন্তব্য করতে রাচি হননি।
বারনেক জানান, ইউক্রেনের ব্যবহারকারীরা হাজারের কিছু কমসংখ্যক টার্মিনালের সঙ্গে ইউটেলস্যাট‑এর মাধ্যমে যুক্ত ছিল। অবশ্য তখন ইউক্রেনে স্টারলিংকের ৫০ হাজারের মতো টার্মিনাল সক্রিয় ছিল। এই বাস্তবতা মেনে বারনেক ইউটেলস্যাটের টার্মিনাল সংখ্যা বাড়বে বলে আশা প্রকাশ করেন। তিনি জানান, ইউক্রেনে ৫–১০ হাজার টার্মিনালের প্রাপ্যতা নিশ্চিতের চেষ্টা করা হচ্ছে, যা কয়েক সপ্তাহের মধ্যেই হতে পারে।
বাড়তি টার্মিনাল যুক্তের খরচও জার্মানি বহন করবে কিনা–এমন প্রশ্নের জবাবে ইউটেলস্যাটের পক্ষ থেকে জানানো হয়, বিষয়টি এখনো আলোচনাধীন। এটি কোনো দেশ একা করবে, নাকি ইউরোপীয় ইউনিয়নভুক্ত দেশগুলো সম্মিলিতভাবে করবে, তা এই আলোচনার ওপর নির্ভর করছে।
এ বিষয়ে জার্মানির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় কোনো মন্তব্য করতে রাজি হয়নি।
ডোনাল।ড ট্রাম্প প্রশাসনের নেওয়া পদক্ষেপের প্রেক্ষাপটে ইউরোপের দেশগুলোর মধ্যে একটা অনিশ্চয়তাবোধ তৈরি হয়েছে। আমেরিকার চলমান প্রশাসনে গুরুত্বপূর্ণ পদে আছেন স্টারলিংকের মালিক ইলন মাস্ক। ফলে এই অনিশ্চয়তা ও আস্থাহীনতার প্রভাবে স্টারলিংকের ওপরও আস্থার সংকট তৈরি হয়েছে ওয়াশিংটনের ইউরোপীয় মিত্রদের মধ্যে।
ইউক্রেনের চলমান যুদ্ধে ইউক্রেনকে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য ও যোগাযোগ সক্ষমতা দিয়ে সহায়তা করছে স্টারলিংক। ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির সঙ্গে আলোচনায় বারবার এই সামরিক তথ্যপ্রবাহ বন্ধ করে দেওয়ার হুঁশিয়ারি এসেছে ট্রাম্পের তরফ থেকে। ফলে ইউরোপের দেশগুলো পাল্টা হিসেবে স্টারলিংকের অন্যতম প্রতিদ্বন্দ্বী ইউটেলস্যাট–এর দিকে ঝুঁকছে। এ দুটিই কম উচ্চতায় ঘুর্ণনশীল স্যাটেলাইটের মাধ্যমে উচ্চগতির ইন্টারনেট সেবা দিয়ে থাকে।