চীন ও আমেরিকার মধ্যে অর্থনৈতিক লড়াই চলছে অনেক বছর ধরেই। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে প্রযুক্তি খাতেও তীব্র হয়ে উঠেছে তাঁদের লড়াই। প্রযুক্তির এই লড়াইয়ের কেন্দ্রে রয়েছে সেমিকনডাকটর ও এআই প্রযুক্তি। অতি সম্প্রতি ট্রাম্পের পাল্টা শুল্ক আরোপের প্রেক্ষাপটে চীন-আমেরিকা সম্পর্কের অবনতি ঘটেছে। এবারে জানা গেল, ফেসবুক, ইন্সটাগ্রামের মালিক প্রতিষ্ঠান মেটা কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা খাতে সহায়তা করেছে চীনকে। এমনটাই দাবি করেছেন মেটার প্রাক্তন কর্মী সারাহ উইন-ইউলিয়ামস।
সম্প্রতি মার্কিন সংবাদমাধ্যম ব্লুমবার্গে প্রকাশিত রাইলি গ্রিফিনের এক প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে যে, মেটার প্রাক্তন নির্বাহী সারাহ উইন-ইউলিয়ামস তাঁর পুরোনো প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে গুরুতর সব অভিযোগ করেছেন।
উইন-ইউলিয়ামস বলেছেন, এআই’র মতো নতুন প্রযুক্তিতে মেটা চীনের কমিউনিস্ট পার্টিকে সহায়তা করেছে, ফলে প্রতিযোগিতায় আমেরিকান প্রতিষ্ঠানগুলোকেও ছাড়িয়ে গেছে চীন। শুধু তাই নয়, উইন-ইউলিয়ামস আরও বলেছেন, চীনের সামরিক খাতে এআই সক্ষমতা বৃদ্ধিতে ব্যবহার করা হচ্ছে মেটার তৈরি বিভিন্ন এআই টুল।
সারাহ উইন-ইউলিয়ামস মেটার বিরুদ্ধে মার্কিন কংগ্রেসে সাক্ষ্য দেওয়ারও পরিকল্পনা করছেন বলে ব্লুমবার্গে রাইলি গ্রিফিনের প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে। সার্বিকভাবে তিনি মনে করেন, চীনকে এআই প্রযুক্তিতে সহায়তা করার মাধ্যমে আমেরিকার স্বার্থ ক্ষুন্ন করেছে তাঁর প্রাক্তন প্রতিষ্ঠান।
সেন্সরশিপ ইস্যুতে চীনের বাজারে মেটা নিষিদ্ধ হওয়া স্বত্বেও চীনের বিজ্ঞাপনদাতাদের কাছ থেকে মেটা অর্থ আয় করছে। এই বিষয়টিকেও সন্দেহের চোখে দেখছেন উইন-ইউলিয়ামস। মেটা অবশ্য তাঁর সকল অভিযোগই নাকচ করে দিয়েছেন।
উল্লেক্ষ্য, সারাহ উইন-ইউলিয়ামস তাঁর বিতর্কিত ‘কেয়ারলেস পিপল’ শীর্ষক বইতে মেটা সম্পর্কিত বিভিন্ন গোপন ও বিতর্কিত বিষয় তুলে ধরেন। প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মার্ক জাকারবার্গ থেকে শুরু করে প্রতিষ্ঠানটির শীর্ষ কর্তাব্যক্তিদের সম্পর্কে বিভিন্ন নেতিবাচক মন্তব্য করেছেন তিনি বইটিতে। বইটি নিয়ে মেটা এতটাই বিপাকে পড়েছে যে সম্প্রতি তাঁরা বাধ্য হয়ে আদালতের দ্বারস্থ হয়েছে। মেটার ‘তাৎক্ষণিক, অপূরণীয় ক্ষতির’ কথা বিবেচনা করে আদালত বইটির প্রচার ও পুনঃপ্রকাশ না করার পরামর্শ দিয়ে রায় দেন।