বৈদ্যুতিক গাড়ি নির্মাতা প্রতিষ্ঠান টেসলা তাঁদের সাইবারট্রাকের নতুন সংস্করণ নিয়ে এসেছে। গতকাল বৃহস্পতিবার উন্মোচিত নতুন সাইবারট্রাকের দাম আমেরিকার বাজারে ৬৯ হাজার ৯৯০ মার্কিন ডলার। বাংলাদেশী মুদ্রায় প্রায় ৮৫ লাখ টাকা। সাইবারট্রাকের এই লং-রেঞ্জ ভার্সনটি তিনটি মডেলের মধ্যে সবচেয়ে সাশ্রয়ী বলে দাবি করা হয়েছে টেসলার ওয়েবসাইটে।
উল্লেখ্য, ২০২৩ সালে টেসলা বাজারে নিয়ে আসে বৈদ্যুতিক পিকআপ ট্রাক ‘সাইবারট্রাক’। যদিও কনসেপ্ট গাড়ি হিসেবে সাইবারট্রাক উন্মোচিত হয় ২০১৯ সালে। বাজারে আসার পর থেকে এটি বেশ জনপ্রিয়তা পেয়েছে।
ইলন মাস্কের মালিকানাধীন টেসলার সময়টা একেবারেই ভালো যাচ্ছে না। জানুয়ারি-মার্চ প্রান্তিকে (কোয়ার্টারে) গত বছরের একই সময়ের তুলনায় প্রতিষ্ঠানটির বিক্রি কমেছে ১৩ শতাংশ। চলতি বছর তাঁদের বাজারমূল্য হ্রাস পেয়েছে ৩৮ শতাংশ। অর্থাৎ, শীর্ষ প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে সবচেয়ে খারাপ পারফরম্যান্স এখন পর্যন্ত টেসলারই।
এখানেই শেষ নয় টেসলার দুর্দশা। মরার ওপর খাঁড়ার ঘা হয়ে এসেছে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের নতুন শুল্কনীতি। চীন-আমেরিকা শুল্কযুদ্ধের প্রকোপে ক্ষতিগ্রস্ত হতে যাচ্ছে টেসলাও। আমেরিকায় চীনা পণ্যের ওপর ১৪৫ শতাংশ শুল্ক আরোপের প্রত্যুত্তরে আজ চীনও আমেরিকান পণ্যের ওপর শুল্ক বাড়িয়ে ১২৫ শতাংশ করেছে।
অর্থাৎ, চীনের বাজারে গাড়ি বিক্রি করতে হলে টেসলাকে এখন ১২৫ শতাংশ শুল্ক দিতে হবে। স্বাভাবিকভাবেই তাই গাড়ির দাম দ্বিগুণ বেড়ে যেতে পারে। ফলে চীনারা বিওয়াইডি’র মতো স্থানীয় গাড়ি নির্মাতাদেরকে দিকেই আরও বেশি করে ঝুঁকবে, এমনটা ধারণা করা হচ্ছে।
উল্লেখ্য, টেসলার জন্য চীন বেশ বড় ও অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি বাজার। চীনের বাজারে বিওয়াইডি এগিয়ে থাকলেও, গত বছর দেশটিতে টেসলার বিক্রি ছিল বেশ আশাজাগানীয়া। গত বছরের সাফল্যের ওপর দাঁড়িয়ে টেসলা এ বছর চীনের বাজারে নিজেদের অবস্থান আরও সুসংহত করবে বলেই ধারণা করা হচ্ছিল। কিন্তু বাস্তবতা ভিন্ন কিছুরই ইঙ্গিত করছে।
ট্রাম্পের পাল্টা শুল্কারোপের ঘোষণা আসার আগে বিনিয়োগকারীরা আশা করছিলেন যে, সাইবারট্রাকের নতুন সংস্করণটি বাজারে এলে চলতি প্রান্তিকে (কোয়ার্টারে) টেসলা ঘুরে দাঁড়াবে। কিন্তু শুল্ক নিয়ে চীন-আমেরিকার যুদ্ধংদেহী অনড় অবস্থানের প্রেক্ষাপটে টেসলার আশায় গুড়ে বালি বলেই মনে হচ্ছে।
তথ্যসূত্র: রয়টার্স