তথ্যপ্রযুক্তিতে দ্বিপাক্ষিক ব্যবসা জোরদারকরণ, ব্যবসা সম্প্রসারণ, বিনিয়োগ বৃদ্ধি এবং ব্যবসায়িক সহযোগিতা করতে কোরিয়া ডেস্ক চালু করেছে বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব সফটওয়্যার অ্যান্ড ইনফরমেশন সার্ভিসেস (বেসিস)। ২৯ এপ্রিল বেসিস অডিটোরিয়ামে এক সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে কোরিয়া ডেস্কের উদ্বোধন ঘোষণা করে সংগঠনটি।
এ সময় জানানো হয়, দক্ষিণ কোরিয়া অত্যন্ত উদ্ভাবনমুখী ও প্রযুক্তিনির্ভর অর্থনীতি, যেখানে দেশের আইসিটি খাতের জন্য রয়েছে বিপুল সম্ভাবনা। এই নতুন উদ্যোগের মাধ্যমে দেশীয় আইসিটি প্রতিষ্ঠানগুলো দক্ষিণ কোরিয়ার সঙ্গে কার্যকর অংশীদারিত্ব গড়ে তুলতে পারবে। বেসিস কোরিয়া ডেস্ক হবে একটি কৌশলগত প্ল্যাটফর্ম। যার মাধ্যমে দু’দেশের মধ্যে জ্ঞান বিনিময় এবং যৌথ উদ্যোগ গ্রহণ সহজতর হবে। সেই সাথে বাজার সম্প্রসারণের দ্বার উন্মোচন করবে।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের সচিব শীষ হায়দার চৌধুরী, যুগ্মসচিব ড. মো. তৈয়বুর রহমান, বাংলাদেশে নিযুক্ত কোরিয়ার রাষ্ট্রদূত পার্ক ইয়াং সিক, কোরিয়া ইন্টারন্যাশনাল কো-অপারেশন এজেন্সির (কোইকা) কান্ট্রি ডিরেক্টর কিম তায়ইয়োং, কোরিয়ান কমিউনিটি ইন বাংলাদেশের চেয়ারম্যান ইউ ইয়ং ওহ, বাংলাদেশ-কোরিয়া চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির (কেবিসিসিআই) সভাপতি শাহাব উদ্দিন খান এবং বেসিস কোরিয়া ডেস্কের চেয়ারম্যান এডওয়ার্ড কিম।
এ সময় পার্ক ইয়াং সিক বলেন, ‘বেসিস কোরিয়া ডেস্ক আইসিটি সেক্টরে বাংলাদেশ ও কোরিয়ার মধ্যে ক্রমবর্ধমান সমন্বয়ের একটি মাইলফলক। আমি আশা করি বেসিস- কোরিয়া ডেস্ক কোরিয়ার রফতানি বাজারকে আরও সমৃদ্ধ করবে। এই উদ্যোগ দুই দেশের তথ্যপ্রযুক্তি এবং সফটওয়্যার কোম্পানিগুলোর মধ্যে দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য জোরদার হবে। সেই সাথে ব্যবসা সম্প্রসারণ এবং ব্যবসায়িক সহযোগিতা জোরদার করতে অত্যন্ত কার্যকারী ভূমিকা রাখবে।’
ড. মো. তৈয়বুর রহমান বলেন, ‘বেসিস কোরিয়া ডেস্ক শুধু একটি প্ল্যাটফর্ম নয়। বরং এর মাধ্যমে বেসিস সদস্যদের জন্য তথা বাংলাদেশী তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানের জন্য অপার সম্ভাবনার দ্বার উন্মোচিত হবে। বেসিস কোরিয়া ডেস্কের এই উদ্যোগ বাংলাদেশকে একটি শক্তিশালী আইটি হাব হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করতে সাহায্য করবে।’
এডওয়ার্ড কিম বলেন, ‘বেসিস কোরিয়া ডেস্ক বাংলাদেশী এবং কোরিয়ান প্রযুক্তি কোম্পানিগুলির মধ্যে কৌশলগত বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক প্রতিষ্ঠা করবে। এই প্ল্যাটফর্মটি ব্যবহার করে উভয় দেশের তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান তাদের তথ্যপ্রযুক্তি সেক্টরে একটি পারস্পরিক ব্যবসায়িক সম্পর্ক তৈরি করতে সক্ষম হবে।’
শীষ হায়দার চৌধুরী বলেন, ‘দক্ষিণ কোরিয়ার ট্রিলিয়ন ডলারের প্রযুক্তিনির্ভর অর্থনীতি ও শক্তিশালী ডিজিটাল পাবলিক ইনফ্রাস্ট্রাকচার (ডিপিআই) কৌশলগত সহযোগিতার জন্য একটি আদর্শ মডেল তৈরি করেছে। বাংলাদেশ তার দৃঢ়, প্রাণবন্ত তরুণ জনগোষ্ঠী এবং সংস্কারভিত্তিক দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে দক্ষিণ কোরিয়ার উদ্ভাবনী প্রবৃদ্ধির সাথে সমানতালে এগিয়ে যেতে প্রস্তুত। বেসিস কোরিয়া ডেস্কের মতো উদ্যোগের মাধ্যমে উভয় দেশ একসঙ্গে ডিজিটাল অর্থনীতির বিশাল সুযোগ কাজে লাগাতে পারবে। যা পারস্পরিক প্রবৃদ্ধি ও টেকসই উন্নয়ন নিশ্চিত করবে।’
অনুষ্ঠানের সভাপতিত্ব করেন বেসিস সহায়ক কমিটির চেয়ারম্যান রাফেল কবির। তিনি বলেন, ‘এই ডেস্ক প্রতিষ্ঠার লক্ষ্য হলো দেশের তথ্যপ্রযুক্তি খাতকে কোরিয়ার বিশাল বাজারের সঙ্গে যুক্ত করা। এ উদ্যোগের মাধ্যমে প্রযুক্তি ও জ্ঞান বিনিময়ের সুযোগ সৃষ্টি হবে। যা আমাদের আইটি পেশাজীবীদের দক্ষতা উন্নয়ন ও সক্ষমতা বৃদ্ধিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। একইসঙ্গে কৌশলগত সহযোগিতার ভিত্তিতে একটি টেকসই অর্থনৈতিক সম্পর্ক গড়ে তোলা সম্ভব হবে। যা বাংলাদেশের তথ্যপ্রযুক্তি খাতকে বৈশ্বিক পরিমণ্ডলে একটি শক্তিশালী আইটি হাব হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করতে সহায়তা করবে।’
বেসিস জানায়, এই উদ্যোগ বাংলাদেশের তথ্যপ্রযুক্তি খাতের জন্য একটি মাইলফলক হবে। দক্ষিণ কোরিয়ার সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্যিক সম্পর্ককে আরও শক্তিশালী করবে। বেসিস কোরিয়া ডেস্কের মাধ্যমে উভয় দেশের আইসিটি খাতে নতুন দিগন্তের সূচনা হবে।