কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বা এআই প্রযুক্তি নিয়ে প্রতিযোগিতা প্রতিনিয়তই তীব্র থেকে তীব্রতর হচ্ছে। এক্ষেত্রে পিছিয়ে নেই মধ্যপ্রাচ্যও। এই যেমন আজ বুধবার আরবি ভাষায় তৈরি একটি এআই মডেল নিয়ে হাজির হয়েছে সংযুক্ত আরব আমিরাত (ইউএই)। উপসাগরীয় অঞ্চলে এআই প্রযুক্তির উন্নয়ন যে ত্বরান্বিত হয়েছে তার-ই যেন ইঙ্গিত দিচ্ছে নতুন এআই মডেলের আবির্ভাব।
‘ফ্যালকন অ্যারাবিক’ নামের এই এআই মডেলটি তৈরি করেছে আবুধাবিভিত্তিক প্রতিষ্ঠান অ্যাডভান্সড্ টেকনোলজি রিসার্চ কাউন্সিল (এটিআরসি)। তাঁদের লক্ষ্য হচ্ছে, একটি উন্নতমানের ন্যাটিভ (ভাষান্তর করা নয়) অ্যারাবিক ডেটাসেট ব্যবহার করে আরব বিশ্বের পূর্ণাঙ্গ ভাষাগত বৈচিত্র্যকে ধারণ করা।
প্রতিষ্ঠানটির তরফ থেকে প্রকাশিত এক বিবৃতিতে এই মডেলটি তৈরির মূল কারণ হিসেবে এমনটাই উল্লেখ করা হয়েছে। বিবৃতিতে আরও বলা হয়েছে যে, পারফরম্যান্সের দিক থেকে ‘ফ্যালকন অ্যারাবিক’ মডেলটি এর চেয়ে ১০ গুণ বড় এআই মডেলের সমকক্ষ।
বিবৃতিতে এটিআরসি’র সেক্রেটারি জেনারেল ফয়সাল আল বনানি বলেছেন, ‘আজকে, এআই খাতে নেতৃত্ব বলতে কেবল প্রযুক্তিকে বড় পরিসরে প্রসারিত করাকে বোঝায় না। বরং এর লক্ষ্য হচ্ছে শক্তিশালী বিভিন্ন সরঞ্জামকে কার্যকর, ব্যবহারযোগ্য ও সর্বজনীন করে তোলা।’
এটিআরসি ‘ফ্যালকন এইচ১’ নামের একটি মডেলও নিয়ে এসেছে। প্রতিষ্ঠানটির দাবি অনুযায়ী, এই মডেলটি মেটা ও আলিবাবার তৈরি প্রতিদ্বন্দ্বী এআই মডেলগুলোকেও ছাড়িয়ে গেছে। একটি প্রচলিত উন্নত এআই সিস্টেম পরিচালনার জন্য যে প্রযুক্তিগত দক্ষতা ও কম্পিউটিং পাওয়ারের প্রয়োজন হয়, ফ্যালকন এইচ১ মডেলটির ক্ষেত্রে ততটা প্রয়োজন হয় না।
বিশ্বের অন্যতম শীর্ষ তেল রপ্তানিকারক দেশ সংযুক্ত আরব আমিরাত (ইউএই) সাম্প্রতিক সময়ে বিলিয়ন ডলার খরচ করেছে এআই প্রযুক্তির উন্নয়নে। তাঁদের লক্ষ্য হচ্ছে এআই প্রযুক্তিতে সক্ষমতা বাড়ানোর পাশাপাশি বৈশ্বিক এআই খাতে গুরুত্বপূর্ণ এক দেশ হিসেবে নিজেদেরকে গড়ে তোলা। বিশেষ করে আমেরিকার সাথে বিদ্যমান সুসম্পর্কের সুবিধা নিয়ে উন্নত এআই প্রযুক্তিকে অ্যাক্সেস করতে চাইছে দেশটি।
গত সপ্তাহে সংযুক্ত আরব আমিরাত (ইউএই) সফরকালে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেছেন যে, এআই নিয়ে মার্কিন-ইউএই চুক্তি সম্পাদন হলে আমেরিকান প্রতিষ্ঠানের তৈরি বেশ কিছু উন্নত এআই সেমিকনডাক্টর ব্যবহারের সুযোগ পাবে দেশটি।
উল্লেখ্য, ট্রাম্পের সাম্প্রতিক মধ্যপ্রাচ্য সফরে দ্বিপাক্ষিক আলোচনায় গুরুত্বের সাথেই স্থান পেয়েছে এআই প্রযুক্তি। এরই মধ্যে সৌদি আরব নিজেদেরকে এআই কার্যক্রমের কেন্দ্র হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করতে চাইছে। এআই প্রযুক্তির উন্নয়ন ও অবকাঠামো নির্মাণে সৌদি আরব চলতি মাসের শুরুতেই নতুন একটি প্রতিষ্ঠানও চালু করেছে। এক বিবৃতিতে প্রতিষ্ঠানটি জানিয়েছে যে, আরবি ভাষায় বিশ্বের অন্যতম শক্তিশালী একটি মাল্টিমডাল এলএলএম (লার্জ ল্যাঙ্গুয়েজ মডেল) তৈরির লক্ষ্য নিয়েও এগোচ্ছে তাঁরা।
তথ্যসূত্র: রয়টার্স