চাঁদের পৃষ্ঠে অবতরণের পর আমেরিকার অডিসিয়াস মহাকাশযানটি উল্টে গেছে বলে ধারণা করছে নির্মাতা প্রতিষ্ঠান ইনটিউটিভ মেশিনস ও নাসা। এবার জানা গেল এটি একটি নির্দিষ্ট সময় পর জেগে উঠতে পারে। এ জন্য লেগে যাবে কয়েক সপ্তাহ।
এভাবে ‘নিষ্ক্রিয়’ হওয়ার আগে অবশ্য পৃথিবীর একটি ব্যতিক্রম ছবি পাঠিয়েছে মার্কিন মহাকাশযান অডিসিয়াসের ল্যান্ডার। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে শেয়ার করা ছবিতে দেখা যায়, চাঁদের এবড়োথেবড়ো মাটি। একটু গভীরভাবে দেখলে একটু দূরে দেখা যাবে অর্ধচন্দ্রাকৃতির পৃথিবীর একটি ছায়া, এখানেই মানুষের বাস।
এক্সে শেয়ার করা ছবিতে ইনটিউটিভ মেশিনস বলছে, ‘নিস্তেজ হওয়ার আগে দারুণ এক কাজ করেছে অডিসিয়াস। গত ২২ ফেব্রুয়ারি এই ছবি তোলা হয়। আমাদের হাতে এল আজ। তাতে পৃথিবীকে দেখা যাচ্ছে। শুভরাত্রী ওডি। আশা করছি আবার তোমার কথা শুনতে পাবো।’
অ্যাপোলো চন্দ্রাভিযানের ৫০ বছর পর এই প্রথম চাঁদে কোনো মহাকাশযান পাঠায় আমেরিকা। গত মাসের শেষদিকে চাঁদের দক্ষিণ মেরুর কাছে অবতরণ করে এটি। পরে মহাকাশযানটির সঙ্গে সংযোগ স্থাপনে সক্ষম হয় নির্মাতা প্রতিষ্ঠান।
এর মধ্য দিয়ে বিশ্বে প্রথম কোনো বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের মহাকাশযান চাঁদে পৌঁছায়।
অভিযানটি নাসার একটি প্রকল্পের অংশ। এর আওতায় চাঁদে সরঞ্জাম নিতে বিভিন্ন বেসরকারি প্রতিষ্ঠানকে অর্থ দিচ্ছে তারা। অডিসিয়াস অভিযান পরিচালনায় ইনটিউটিভ মেশিনসকে ১১ কোটি ৮০ লাখ ডলার দিয়েছে নাসা।
গত ১৫ ফেব্রুয়ারি স্পেসএক্সের ফ্যালকন ৯ রকেটের মাধ্যমে ফ্লোরিডায় নাসার কেনেডি স্পেস সেন্টার থেকে অ্যারোস্পেস কোম্পানি ইনটুইটিভ মেশিনসের মুন ল্যান্ডার ‘নোভা-সি’ উৎক্ষেপণ করা হয়। এই অভিযানের নাম দেওয়া হয়েছে ‘আইএম-১ মিশন’। হাজার হাজার মাইল পথ পাড়ি দিয়ে মহাকাশযানটি চাঁদের উপরিভাগে পৌঁছায়।
মার্কিন মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসা এই অভিযানের সঙ্গে সরাসরি যুক্ত নয়। চাঁদে মহাকাশযানটি পাঠিয়েছে ইলন মাস্কের সংস্থা স্পেসএক্স। নোভা-সি ল্যান্ডারে নাসার ছয়টি ব্যক্তিগত পেলোড রয়েছে। এসব পেলোড চাঁদের আবহাওয়া সম্পর্কে অনুসন্ধান চালাবে।
চলতি দশকের শেষে চাঁদে মহাকাশচারী পাঠানোর পরিকল্পনা রয়েছে নাসার। এর আগে উপগ্রহটির পরিবেশ ও আবহাওয়া সম্পর্কে খুঁটিনাটি গবেষণার জন্য স্পেসএক্সের অভিযানকে কাজে লাগানো হচ্ছে।