শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ২০২২ সালের সেপ্টেম্বরে এশিয়া কাপের ম্যাচটির পর বড় একটা বড় প্রশ্ন যোগ হয়েছিল মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের নামের পাশে। মধ্য ত্রিশের কোটা পেরোনো এ অভিজ্ঞ ব্যাটসম্যানকে আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে আর খেলতে দেখা যাবে তো?
তামিম ইকবাল ও মুশফিকুর রহিম অবসর নিলেও সে পথে হাঁটেননি মাহমুদউল্লাহ। কিন্তু সেটা তাঁর দল থেকে বাদ পড়া ঠেকাতে পারেনি। ২০২২ সালের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে দর্শক হয়ে ছিলেন মাহমুদউল্লাহ। বাদ পড়েছিলেন ওয়ানডে দল থেকেও।
ফর্ম, ফিটনেস কিংবা দলের কম্বিনেশন- এ বিষয়গুলো সামনে এসেছে বারবার। তিনি নীরবে সব মেনে নিয়েছেন। তবে হাল ছাড়েননি। নিঃসঙ্গ লড়াইয়ে নিজেকে প্রস্তুত করে সামর্থ্যের প্রমাণ দিয়ে আবারও ফিরেছেন। সর্বশেষ ওয়ানডে বিশ্বকাপে সাত ইনিংসে সুযোগ পেয়ে ছিলেন দলের সেরা পারফর্মার। বিপিএলে দুর্দান্ত পারফর্ম করে ফিরেছেন টি-টোয়েন্টির দলেও।
যে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষেই তাঁর শেষ বলে ধরে নেওয়া হচ্ছিল একসময়, সেই লঙ্কানদের সামনেই হলো তাঁর টি-টোয়েন্টিতে প্রত্যাবর্তন। ১৭ মাস পর নেমেই নিজের প্রয়োজনীয়তা বুঝিয়ে দিয়েছেন। ২০৬ রান তাড়া করতে নেমে মাত্র ৩০ রানে টপ অর্ডারের তিন ব্যাটসম্যানকে হারায় বাংলাদেশ।
এমন অবস্থাতেই প্রতি-আক্রমণে মাহমুদউল্লাহ খেলেছেন ৩১ বলে ৫৪ রানের ইনিংস। এতে দারুণ একটি রেকর্ডে উঠেছে তাঁর নাম। আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে পাঁচ বা এর নিচে ব্যাটিংয়ে নেমে সবচেয়ে বেশি রানের মালিক এখন বাংলাদেশি ব্যাটসম্যান।
কাল প্রথম বলে অ্যাঞ্জেলো ম্যাথুসকে বিশাল ছক্কা মেরে ইনিংস শুরু করেছিলেন। এরপর যারাই বোলিংয়ে এসেছেন, কাউকে ছাড় দেননি ৩৮ বছর বয়সী ব্যাটসম্যান। ২৭ বলে তুলে নিয়েছেন ফিফটি।
আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে এখন পর্যন্ত ১১৪ ইনিংসের মধ্যে ১০৩ বার পাঁচ বা তার পর ব্যাটিংয়ে নেমেছেন মাহমুদউল্লাহ। ‘ফিনিশার’ ভূমিকায় গতকালের পর ২৩.১০ গড়ে করেছেন ১৮৯৫ রান। ছাড়িয়ে গেছেন দক্ষিণ আফ্রিকার তারকা ব্যাটসম্যান ডেভিড মিলারকে। পাঁচ বা তার পরে নেমে ৮৪ ইনিংস খেলা মিলারের রান ১৮৭৭। অবশ্য গড় ও স্ট্রাইকরেটে যোজন যোজন এগিয়ে প্রোটিয়া ব্যাটসম্যান। মাহমুদউল্লার ১১৮ স্ট্রাইকরেটের বিপরীতে মিলারের স্ট্রাইকরেট ১৪৩, গড় ৩৪.৭৫!
কেবল ফিনিশার হিসেবে নয়, রানের হিসেবে টি-টোয়েন্টিতে বাংলাদেশের হয়ে দ্বিতীয় সফল ব্যাটসম্যান মাহমুদউল্লাহ। সব পজিশন মিলে ১১৪ ইনিংস খেলা এ ব্যাটসম্যানের রান ২১৭৬। অন্যদিকে ১১৫ ইনিংসে ২৩.৮২ গড়ে ১২২ স্ট্রাইকরেটে ২৩৮২ রান নিয়ে সবার ওপরে সাকিব আল হাসান। শ্রীলঙ্কা সিরিজে যেহেতু সাকিব খেলছেন না, তাই মাহমুদউল্লাহর সুযোগ আছে ব্যবধানটা কমিয়ে আনার।