নিউইয়র্কের উইকেট বোকা বানিয়েছে সবাইকে। অ্যাডিলেইড থেকে মাটি আনা হয়েছে, উইকেট বানানো হয়েছে ফ্লোরিডাতে, আবহাওয়া অ্যাডিলেইডের মতো, মাঠের ঘাসও ক্রিকেটে সবচেয়ে ব্যবহৃত জাতের- সবকিছু বিবেচনায় ভাবা হয়েছিল নাসাউ কাউন্টি স্টেডিয়ামে রানবন্যা হবে।
কিন্তু বিশ্বকাপ শুরু হতেই দৃশ্যপট পাল্টে গেছে। নিউইয়র্কে রান তোলা সবচেয়ে কঠিন কাজ মনে হচ্ছে। গতকাল ভালো অবস্থানে থেকেও ১১৯ রানে গুটিয়ে গেছে ভারত, ওদিকে ১১৩ রান করতে হাঁপিয়ে উঠেছে পাকিস্তান। আজ একই স্টেডিয়ামে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে খেলতে নামবে বাংলাদেশ।
নিউইয়র্কের উইকেট কেমন, তার স্বাদ বাংলাদেশ এরই মধ্যে পেয়েছে। ভারতের বিপক্ষে প্রস্তুতি ম্যাচে ১২২ রান তুলতে পেরেছিল বাংলাদেশ। এখন বিশ্বকাপ শুরু হওয়ার পর সে উইকেটকেই অনেক বেশি ব্যাটিং সহায়ক মনে হচ্ছে। কারণ, বিশ্বকাপে নিউইয়র্কের উইকেটে প্রথম ইনিংসের গড় এখন পর্যন্ত ১০৩!
বাংলাদেশ কোনো আন্তর্জাতিক ম্যাচ না খেললেও দক্ষিণ আফ্রিকা দুটি ম্যাচ খেলেছে এবং তারাও ভালোভাবে টের পেয়েছে এই উইকেটে রান তোলা কত কঠিন। প্রথম ম্যাচে শ্রীলঙ্কাকে ৭৭রানে গুটিয়ে দিয়েও জয় পেতে কষ্ট হয়েছে দলটির। আর নেদারল্যান্ডসের বিপক্ষে তো হারতেই বসেছিল দলটি।
ডেভিড মিলারের দুর্দান্ত ফিফটি সেদিন রক্ষা করেছিল প্রোটিয়াদের। না হলে ১০৪ রানের লক্ষ্যে নেমে হারের লজ্জা পেতে হতো মিলারদের।
এখন পর্যন্ত যে চারটি ম্যাচ হয়েছে, তাতে সর্বোচ্চ ১৩৭ রান তুলেছে কানাডা। তাড়া করতে নেমে সবচেয়ে বেশি রানও একই ম্যাচে, সেদিন ১২৫ করেছিল আয়ারল্যান্ড। সফল রান তাড়ার ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ স্কোর ১০৬।
এখন পর্যন্ত যে খবর মিলেছে, তাতে আজকের ম্যাচেও খুব বেশি রান দেখার আশা না করাই ভালো। পাওয়ার প্লে কাজে লাগিয়ে শুরুতে রান তুলতে না পারলে ইনিংস শেষে রানরেট ৬-এর নিচে থাকার সম্ভাবনাই বেশি।
উইকেটের বাউন্স বিভ্রান্তিকর, নতুন বলে সুইংও পাওয়া যায় বলে পেসারদের সামলানো কঠিন। আবার মাঝের ওভারে স্পিনারের বলে টার্ন পাচ্ছেন। ঝামেলা বাড়িয়ে দিচ্ছে আউটফিল্ডও। তাড়াহুড়া করে বানানো বলে ঘাস এখনো ঠিকমতো বসেনি। মাঠে বালির আধিক্য বেশ, ফলে বল সহজে সীমানা পার হচ্ছে না। এটাও রান তোলার কাজটা কঠিন করে তুলেছে।
নিউইয়র্কের এই উইকেটে নর্কিয়া, বার্টমানদের পেস আজ বাংলাদেশের বড় পরীক্ষা নেবে। কাগিসো রাবাদা এখনো ছন্দে ফেরেননি, এটাই যা একটু সান্ত্বনা। তবে একটি স্বস্তি পাওয়া যাচ্ছে, কঠিন উইকেট বলে কুইন্টন ডি কক, স্টাবস ও হেনরিখ ক্লাসেনদের পক্ষে স্বভাবজাত আগ্রাসন দেখানো সম্ভব হচ্ছে না।