অবস্থা এমনই দাঁড়িয়েছে যে, তাঁর নাম শুনলেও ভারতের দলের স্নায়ুচাপ বেড়ে যায় কি না – এ নিয়ে আলোচনা চলতে পারে। বারেবারে ভারতের বিপক্ষেই যে ব্যাট হাতে দাপুটে হয়ে দেখা দেন ট্রাভিস হেড!
ওয়ানডে বিশ্বকাপের ফাইনাল বলুন, বা টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনাল – হেডই ভারতের হারের অন্যতম বড় কারণ। একই ধারা চলছে চলমান বোর্ডার-গাভাস্কার ট্রফিতেও। তিন টেস্টেই ভারতকে ভুগিয়েছেন, বিশেষ করে সর্বশেষ দুই টেস্টে তো যেন নাকে দড়ি দিয়ে ঘুরিয়েছেন!
কিন্তু আগামী পরশু ‘বক্সিং ডে’তে মেলবোর্নে সিরিজের চতুর্থ টেস্টে নামার আগে সেই হেড যেন অস্ট্রেলিয়ারই মাথাব্যথা! তৃতীয় টেস্টের দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাটিংয়ের সময়ে পায়ের মাংসপেশিতে চোট পেয়েছিলেন হেড। এই চোট তাঁকে চতুর্থ টেস্টে খেলতে দেবে না বলেই গত দুদিনে গুঞ্জন শোনা গেছে। ১-১ সমতায় থেকে চতুর্থ টেস্টে নামছে দুই দল, তার আগে দলের সবচেয়ে বড় অস্ত্রের এমন অবস্থা তো অস্ট্রেলিয়ানদের চিন্তায় ফেলবেই! অস্ট্রেলিয়ার কোচ অ্যান্ড্রু ম্যাকডোনাল্ড অবশ্য আজ সংবাদ সম্মেলনে খুব জোর দিয়ে বলতে না পারলেও হেডকে টেস্টে দেখার আশার কথাই বলেছেন।
সিরিজে এখন পর্যন্ত ৫ ইনিংসে ৮১.৮০ গড়ে ৪০৯ রান হেডের, দুই দল মিলিয়েই সর্বোচ্চ। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ রান লোকেশ রাহুলের, সেটাও মাত্র ২৩৫! হেডের দাপট এখানেই স্পষ্ট। প্রথম টেস্টে দল হারলেও দ্বিতীয় ইনিংসে তিনি করেছিলেন ৮৯ রান। দ্বিতীয় টেস্টে অস্ট্রেলিয়া ১৯ রানের লক্ষ্যে ১০ উইকেটেই জিতে যাওয়ায় দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাটিং করতে হয়নি তাঁকে, তার আগে প্রথম ইনিংসেই ১৪০ রানের আগ্রাসী ইনিংসে ভারতের যা ক্ষতি করার করে দিয়েছিলেন। আর ব্রিসবেনে বৃষ্টির বাড়াবাড়িতে ড্র দেখা তৃতীয় টেস্টে প্রথম ইনিংসে তাঁর ১৫২ রানই অস্ট্রেলিয়াকে বড় সংগ্রহ আর একটা পর্যায়ে ইনিংস ব্যবধানে জয়ের স্বপ্ন দেখানোর ভিত গড়ে দিয়েছিল!
কিন্তু তৃতীয় টেস্টে দ্বিতীয় ইনিংসে অস্ট্রেলিয়া হাতে পাওয়া অল্প সময়ে রান আর জয়ের নেশায় তাড়াহুড়ো করেছে, সে পথে উইকেটের চেয়েও বড় ধাক্কা হয়ে এসেছে হেডের চোট। বৃষ্টিতে পঞ্চম দিনের খেলা আগেভাগেই শেষ হওয়ার আগে ভারতের ২.১ ওভার পর্যন্ত হতে পারা ইনিংসে আর ফিল্ডিংয়ে নামেননি হেড।
এরপর থেকে এমসিজিতে নেটে অনুশীলন করেছেন বটে, তবে তাঁকে চতুর্থ টেস্টে দলে দেখতে পাওয়া নিয়ে শঙ্কা জোরালই ছিল। তবে অস্ট্রেলিয়া কোচ ম্যাকডোনাল্ড আজ সংবাদ সম্মেলনে জানিয়েছেন আশার কথা। যদিও তাঁর গলায় জোর যে খুব বেশি ছিল, এমনটা বলা যাচ্ছে না। ‘ওর কি এখনো কিছু কাজ করার বাকি আছে? জিজ্ঞেস করলে বলব, হ্যাঁ, আছে। (নেটে) সেটাই করতে দেখেছেন ওকে। এই মূহুর্তে আমাদের কোনো দুর্ভাবনা নেই। ওর নামের পাশে কি এরই মধ্যে একাদশের জন্য টিক চিহ্ন দেওয়া হয়ে গেছে? সেটা বলতে পারব না। অনুশীলন সেশনের শেষভাগটা আমি দেখতে পারিনি, তবে আমার জোর আশাবাদ ও খেলতে পারবে’ – বলেছেন ম্যাকডোনাল্ড।
হেডের ব্যাপারে নিশ্চয়তা না দিতে পারলেও সব ঠিক থাকলে ১৯ বছর বয়সী ওপেনার স্যাম কনস্টাস যে একাদশে থাকছেন, সেটা নিশ্চিত করে দিয়েছেন অস্ট্রেলিয়া কোচ। আগ্রাসী এই ওপেনারকে দিয়ে ভারতের বোলিং আক্রমণকে পাল্টা চাপে ফেলাই মূল লক্ষ্য বলেও জানিয়েছেন ম্যাকডোনাল্ড।