গতকাল চ্যাম্পিয়নস লিগের শেষ ষোলোতে আতলেতিকো মাদ্রিদকে হারিয়ে কোয়ার্টার ফাইনালে চলে গেছে রেয়াল মাদ্রিদ। প্রথম লেগে ২-১ ব্যবধানে জিতেছিল মাদ্রিদ। গতকাল দ্বিতীয় লেগে ওয়ান্দা মেত্রোপলিতানোয় নির্ধারিত ৯০ মিনিটের খেলায় ১-০গোলে এগিয়ে ছিল আতলেতিকো। অতিরিক্ত ৩০ মিনিটেও গোল করতে পারেনি কোনো দল।
পরে টাইব্রেকারে ৪-২ ব্যবধানে জিতেছে মাদ্রিদ। কিন্তু সে পেনাল্টি শ্যুটআউট নিয়েও চলছে বিতর্ক। এ অবশ্য নতুন কিছু না, চ্যাম্পিয়নস লিগে মাদ্রিদের জয়ের পর এমন আলোচনাটাই যেন স্বাভাবিক হয়ে উঠেছে, ভিন্ন কিছু হওয়াটাই বরং অস্বাভাবিক!
গতকাল ম্যাচের প্রথম মিনিটেই গোল করে বসে আতলেতিকো। দর্শক ঠিকমতো নড়েচড়ে বসার আগেই ম্যাচের ২৩ সেকেন্ডে মিডফিল্ডার কনর গ্যালাঘার গোল করেন। এরপর দুই দল যে খেলা উপহার দিয়েছে তাতে নিরপেক্ষ দর্শক নির্ঘাত ঘুমিয়ে পড়েছিলেন।
প্রতিপক্ষের পায়ে বল দিয়ে প্রতিআক্রমণ নির্ভর খেলায় মন দেয় আতলেতিকো। অন্যদিকে বলের দখল রেখেও ভিনিসিয়ুস জুনিয়র, কিলিয়ান এমবাপ্পে, রদ্রিগো এবং জড বেলিংহাম সমৃদ্ধ আক্রমণভাগও কিছু করতে পারেনি।
অন্যদিকে হুলিয়ান আলভারেস প্রতিআক্রমণে বেশ কয়েকবার ভয় জাগিয়েছেন, কিন্তু থিবো কোর্তোয়াকে পরাস্ত করতে পারেননি। বরং ৭০ মিনিটে কোয়ার্টার ফাইনালে ওঠার দারুণ সুযোগ পেয়ে যায় মাদ্রিদ। এমবাপ্পের দুর্দান্ত কাজে পেনাল্টি পায় মাদ্রিদ, সে পেনাল্টি নিতে এগিয়ে যান ভিনিসিয়ুস। মাদ্রিদের জার্সিতে প্রথম কোনো পেনাল্টি মিস করার জন্য ব্রাজিলিয়ান ফরোয়ার্ড কেন যেন গতকালকের রাতকেই বেছে নিলেন।
পরের ৫০ মিনিটেও কোনো গোল করতে পারেনি কোনো দল। তবে টাইব্রেকার হাজির হয়েছিল সব নাটকীয়তা নিয়ে। নিজ নিজ দলের প্রথম শট নিতে এসে ঠিকভাবেই কাজ সারেন এমবাপ্পে ও আলেক্সান্ডার সরলথ। মাদ্রিদের দ্বিতীয় শটও ঠিকভাবে নেন বেলিংহাম।
ঝামেলাটা হয় আলভারেসের শটে। শট নিতে গিয়ে পিছলে পড়ে যান আর্জেন্টাইন ফরোয়ার্ড, তবে বল ঠিকই জালে যায়। কিন্তু ভিডিও অ্যাসিস্ট্যান্ট রেফারি পুরো গ্যালারিকে স্তব্ধ করে দেয়। আলভারেসের শটের পরই এমবাপ্পে, আসেনসিওরা ছুটে গিয়েছিলেন রেফারির কাছে। ভিএআরও জানিয়ে দেয়, শট নেওয়ার সময় পিছলে যাওয়া বাম পা প্রথমে বলে লেগেছে। দুবার স্পর্শের কারণে বাতিল হয় সে গোল।
মাদ্রিদের হয়ে ফেদে ভালভার্দেও গোল করেন। আনহেল কোরেয় নিজের শট ঠিকভাবে নেওয়ায় ব্যবধান কমে আসে (৩-২)।
আতলেতিকর আশা বাড়িয়ে মাদ্রিদ অধিনায়ক লুকাস ভাসকেস নিজের শট মিস করে বসেন। কিন্তু ভাসকেসের মতোই মাদ্রিদ অ্যাকাডেমির আরেক ছাত্র মার্কোস ইয়োরন্তেও বল মেরে বসেন ক্রসবারে। দলের পঞ্চম শট নিতে এসে অ্যান্টনি রুডিগার কোনো ভুল করেননি। তবে বল জালে যাওয়ার আগে গোলকিপার অবলাকের স্পর্শ নিয়ে গেছে।
ম্যাচ শেষে আলভারেসের পেনাল্টি বাতিল নিয়ে ক্ষোভ ঝেড়েছেন আতলেতিকো কোচ দিয়েগো সিমেওনে। তবে কোর্তোয়ার দাবি, সিদ্ধান্তটি পুরোপুরি সঠিক, ‘শেষ পর্যন্ত পেনাল্টি শ্যুটআউট আসলে লটারি। আমার মনে হয়েছে আলভারেসে দুবার বল স্পর্শ করেছে এবং আমি রেফারিকে সেটা বলেছি। এটা দেখা সহজ ছিল না, এবং ওদের কপাল খারাপ।’
আতলেতিকো গোলকিপার অবলাকও ভাগ্যের হাত দেখছেন, ‘এটা কষ্টের কারণ আমরা ভালো ম্যাচ খেলেছি। ভাগ্যের একটু কমতি ছিল, হুলিয়ানের পেনাল্টিতে যেভাবে আমরা পিছিয়ে পড়লাম সেটা অনেক কষ্টের… হতাশাজনক পরাজয়… হৃদয় ভেঙে দেওয়ার মতো।’