মাত্রই ইংল্যান্ডের ওয়ানডে আর টি-টোয়েন্টির অধিনায়কত্ব পেয়েছেন। হ্যারি ব্রুকের এখন দল গোছানোর চিন্তাতেই ব্যস্ত থাকার কথা। এই মুহূর্তে ভারতের ফ্র্যাঞ্চাইজি টুর্নামেন্ট আইপিএল থেকে পাওয়া নিষেধাজ্ঞা নিয়ে ভাবার যেন সময়ই নেই!
এবারের আইপিএলে নিলামে অবশ্য অংশ নিয়েছিলেন ব্রুক, নিলাম থেকে তাঁকে দলেও টেনেছিল দিল্লি ক্যাপিট্যালস। কিন্তু আইপিএল শুরু হওয়ার আগেই ব্রুক জানিয়ে দেন, তিনি এবার আইপিএলে খেলতে পারবেন না। এ নিয়ে বেজায় চটেছে আইপিএল কর্তৃপক্ষ, ব্রুকের ওপর তারা নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে – আগামী দুই বছর আইপিএলের নিলামে নাম লেখাতে পারবেন না ইংলিশ ব্যাটসম্যান।
তবে এ নিষেধাজ্ঞা যেন পাত্তাই পাচ্ছে না ব্রুকের কাছে। ২৬ বছর বয়সী ইংলিশ বলছেন, তাঁর কাছে এই মুহূর্তে ইংল্যান্ডের জাতীয় দলই সবকিছু, ফ্র্যাঞ্চাইজি টুর্নামেন্ট নিয়ে তিনি ভাবছেনই না!
ব্রুক যে ইংল্যান্ডের অধিনায়ক হতে যাচ্ছেন, সেটা আইপিএল থেকে তিনি নাম সরিয়ে নেওয়ার পরই অনেকে ধারণা করেছিলেন। যদিও ব্রুককে সাদা বলের দুই সংস্করণের দলেরই অধিনায়ক করা হবে নাকি শুধু টি-টোয়েন্টির, সে নিয়ে তখন পর্যন্ত সংশয় ছিল। ইংল্যান্ডের ক্রিকেট বোর্ডের (ইসিবি) ছেলেদের দলের পরিচালক রব কী কদিন আগে ওয়ানডে দলের অধিনায়ক হিসেবে টেস্ট দলের অধিনায়ক বেন স্টোকসের কথাও মাথায় রাখার কথা বলেছিলেন।
তবে শেষ পর্যন্ত গত বছর দুয়েকে ওয়ানডে না খেলা, একের পর এক চোটের সঙ্গে যুঝতে থাকা স্টোকসের দিকে আর ঝোঁকেনি ইংল্যান্ড। গত সোমবার ওয়ানডে আর টি-টোয়েন্টির অধিনায়ক হিসেবে ব্রুকের নাম ঘোষণা করে আনুষ্ঠানিক বিবৃতি দিয়েছে তারা।
এরপর ইংলিশ সংবাদমাধ্যম দ্য মিররের সঙ্গে আলাপে ইংল্যান্ড দল আর আইপিএলের নিষেধাজ্ঞা নিয়ে কথা বলেছেন ব্রুক। আপাতত তাঁর সব চিন্তাজুড়ে শুধু ইংল্যান্ড দলই আছে জানিয়ে সাদা বলের ক্রিকেটে নবনিযুক্ত ইংল্যান্ড অধিনায়ক বলেছেন, ‘এটাই এখন আমার অগ্রাধিকার পাবে। ইংল্যান্ডকেই সবকিছু মেনে এগোতে চাই, কিছু সময়ের জন্য ফ্র্যাঞ্চাইজি ক্রিকেটকে পিছিয়ে রাখব। দিন শেষে অন্য কিছুর চেয়ে ইংল্যান্ডের হয়ে খেলতেই তো বেশি ভালো লাগে!’
ফ্র্যাঞ্চাইজি ক্রিকেটে না খেলা মানে অল্প সময়ে অনেক অর্থ উপার্জনের রাস্তা বন্ধ হয়ে যাওয়া। তবে জাতীয় দলের জন্য সে ক্ষতি মানতে আপত্তি নেই বলেই জানালেন ব্রুক, ‘এখানে-ওখানে কিছু টাকা-পয়সা কামানোই তো বন্ধ হবে… ইংল্যান্ডের হয়ে খেলার জন্য সেটা যেকোনো সময়ই আমি মেনে নেব। নিকট ভবিষ্যতে কোনো ফ্র্যাঞ্চাইজি ক্রিকেটেই খেলব না। ইংল্যান্ড দল আর এই দলের হয়ে যেকোনো ম্যাচকেই এগিয়ে রাখব।’
এরপর যখন প্রসঙ্গ এল ভারতের দিক থেকে পাওয়া নিষেধাজ্ঞা নিয়ে, ব্রুক একটা চমকে দেওয়ার মতো তথ্যই দিয়েছেন, ‘ওরা তো আমাকে কিছু জানায়নি। তবে যদি আমি নিষিদ্ধ হয়েও থাকি, সেটাতে সমস্যা তো নেই। ওদের নিয়মটা তো ওরকমই। আমার সব ধ্যানজ্ঞান এখন ইংল্যান্ডের হয়ে খেলা নিয়েই।’
ইংল্যান্ডের হয়ে খেলার বাইরে অবশ্য নিকট ভবিষ্যতে ব্রুকদের জন্য তেমন ফাঁকা সময়ও থাকার কথা নয়। ব্রুক তো তিন সংস্করণের দলেই আছেন, আর ইংল্যান্ডের তিন সংস্করণের দলের সূচি আগামী কয়েক মাসে একেবারে খেলায় ঠাসা! এখন থেকে শুরু করে আগামী জানুয়ারির মধ্যে ইংল্যান্ড ১১টি টেস্ট খেলবে। আগামী বছরের ফেব্রুয়ারিতে হতে যাওয়া টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের আগে ব্রুক সব ঠিকঠাক থাকলে ১২টি ওয়ানডে আর ১৫টি টি-টোয়েন্টিও খেলবেন।
আইপিএলের নিষেধাজ্ঞা কিংবা ফ্র্যাঞ্চাইজি ক্রিকেট নিয়ে ভাবার সময়ই তো থাকবে না তাঁর!