বিপিএলে টিকেট বিক্রিতে অনিয়ম, বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) দুর্নীতি ও আর্থিক বিষয়ে নানা অনিয়মের অভিযোগে আজ মঙ্গলবার দুপুরে হঠাৎ বিসিবিতে অভিযান চালিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) একটি ইউনিট। বোর্ড থেকে প্রয়োজনীয় কাগজপহত্র সংগ্রহ শেষে গণমাধ্যমের মুখোমুখি হয়েছিলেন দুদকের তিন কর্মকর্তা।
অভিযান শেষে প্রাথমিক ধারণায় দুদকের সহকারী পরিচালক আল আমিন জানিয়েছেন, বড় ধরনের আর্থিক অসঙ্গতি থাকতে পারে। তবে নথি পর্যালোচনা করে বিস্তারিত জানানো হবে বলেও জানিয়েছেন তিনি।
যেসব অভিযোগের ভিত্তিতে দুদকের আজকের অভিযান, তার উল্লেখযোগ্য হচ্ছে মুজিব শতবর্ষ উদযাপন অনুষ্ঠান। এ অনুষ্ঠানের জন্য ১৫ কোটি টাকা বরাদ্দ থাকলেও বিসিবি খরচ দেখিয়েছে ২৫ কোটি। তবে প্রকৃত খরচ ৭ কোটির কিছু বেশি বলে অভিযোগ আছে দুদকের কাছে।
এ প্রসঙ্গে দুদকের সহ-পরিচারক আল আমিন বলেছেন, ‘মুজিব হান্ড্রেডে কনসার্টসহ যে প্রোগ্রামটা হয়েছিল, সেখানে সব মিলিয়ে ২৫ কোটি টাকার মতো খরচ দেখানো হয়েছে। আর আমরা যে অভিযোগ পেয়েছি, সে অনুযায়ী প্রকৃত খরচ হয়েছে ৭ কোটির কিছু বেশি। এখানে প্রায় ১৯ কোটি টাকা খরচ দেখানো হয়নি। খরচ না দেখিয়ে সেটা সরানো হয়েছে বলে একটা অভিযোগ পেয়েছি। এটার ব্যাপারে ফাইন্যান্স ডিপার্টমেন্টের কাছে আমরা ডকুমেন্টসগুলো চেয়েছি। কিছু অভিযোগ এবং আমাদের এখন পর্যন্ত পর্যালোচনায় আমরা যেটা বুঝতে পেরেছি, এখানে প্রায় ১৯ কোটি টাকার মতো অসঙ্গতি আছে।’
অসঙ্গতির পরিমাণটা আরও বেশি হতে পারে বলে জানিয়েছেন আল আমিন। এ প্রসঙ্গে দুদক সহ-পরিচালকের ভাষ্য, ‘(কনসার্টের) টিকিট বিক্রি বাবদ ২ কোটি টাকার মতো আয় হয়েছে। এটাও আমরা অভিযোগ পেয়েছি যে, ২ কোটি টাকা খরচের মধ্যে দেখানো হয়নি। সেই হিসেবে টাকা সরানো বা আত্মসাতের যে ইস্যুটা, সেটা ২০ কোটি বা আরও বাড়তে পারে।’
সবার বোঝার সুবিধার্তে আলোচনার শেষ অংশে মুজিব শত বর্ষের অনুষ্ঠানের আর্থিক অসঙ্গতির অভিযোগের সারমর্মে আল আমিন বলেছেন, ‘এটার জন্য ১৫ কোটি টাকা বরাদ্দ ছিল। খরচ দেখানো হয়েছে ২৫ কোটি। কিন্তু প্রকৃত খরচ হয়েছে ৭ কোটি। এটা আমরা অভিযোগের মাধ্যমে জানতে পেরেছি।’
এসব যে এখনো অভিযোগের পর্যায়ে আছে, সেটা জানাতেও ভোলেনি দুদকের সহকারী পরিচালক, ‘এটা আমরা এখন পর্যন্ত নিশ্চিত হইনি। এটার প্রাসঙ্গিক কাগজপত্রও পাইনি হাতে। ডকুমেন্ট পেলে প্রকৃত পরিমাণটা আমরা বলতে পারব। এটা অভিযোগের কথা আমি বললাম। আমরা এটা নিয়ে কাজ করছি।’
দুদকের আরেক সহকারী পরিচালক মাহমুদুল হাসানেরও ধারণা, এ অনুষ্ঠানে আর্থিক অসঙ্গতি থাকতে পারে। এ প্রসঙ্গে তিনি বলেছেন, ‘মুজিব হান্ড্রেড প্রোগ্রামে যে ব্যয় দেখানো হয়েছে, সেখানে কিছু অসঙ্গতি আছে। অভিযোগ সম্পর্কে রেকর্ডপত্র সংগ্রহ করা হয়েছে। সেগুলো আমরা যাচাই-বাছাই করে আমরা আমাদের এনফোর্সমেন্ট ইউনিটে প্রতিবেদন দাখিল করব। সেই অনুযায়ী কমিশন সিদ্ধান্ত নেবে যে আমাদের পরবর্তী পদক্ষেপ কী হবে।’
দুদকের অভিযান প্রসঙ্গে বিসিবির সিইও নিজাম উদ্দীন চৌধুরী জানিয়েছেন, তারা দুদককে সর্বোচ্চ সহযোগিতা করেছেন। নিজামের ভাষ্য, ‘আপনারা ইতোমধ্যে জেনেছেন যে, কিছু অভিযোগের ভিত্তিতে তারা এসেছেন। আমাদের কাছে এ সংক্রান্ত যেসব তথ্য বা ডকুমেন্টস আছে, আমরা ডিপার্টমেন্টকে বলেছি, সেগুলো দিতে।’