দেশে রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের পর বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডে (বিসিবি) অনিয়মের একাধিক অভিযোগ উঠেছিল। বিসিবির দায়িত্ব নিয়ে বোর্ড সভাপতি ফারুক আহমেদ জানিয়েছিলেন সকল অনিয়মের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে। নতুন বোর্ড দায়িত্ব নেয়ার কয়েক মাস পর আজ বিসিবিতে অভিযান করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
বিসিবির একাধিক টুর্নামেন্ট ও প্রশাসনিক ব্যবস্থার বিরুদ্ধে অনিয়মের অভিযোগে আজ মিরপুরে দুদকের এক প্রতিনিধি দল বিসিবিতে গিয়েছিল। ঠিক কী কারণে হঠাৎ বিসিবিতে দুদকের অভিযান তা জানতে চাইলে দুদকের সহকারী পরিচালক মাহমুদুল হাসান গণমাধ্যমকে বলেন, ‘একটা অভিযান পরিচালনার জন্য আজকে এখানে এসেছি। অভিযোগটির মূল বিষয় ছিল বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডে দুর্নীতি ও অনিয়ম। আমাদের মধ্যে সুনির্দিষ্ট কিছু অভিযোগ ছিল। ’
নাজমুল হাসান পাপনের বোর্ডে টিকিট বিক্রির অর্থে অসঙ্গতির কথা জানিয়ে পরিচালক মাহমুদুল হাসান বলেন, ‘বিপিএলের টিকিট বিক্রির ব্যাপারে। আমরা এখানে দেখেছি, বিপিএলের তৃতীয় আসর থেকে দশম আসর পর্যন্ত টিকিট বিক্রির যে আয়… আপনারা জানেন যে, বিসিবির অন্যান্য আয়ের একটা পার্ট হচ্ছে টিকিট বিক্রি। সেখানে দেখা গেছে, গত আট বছরে ৩য় মৌসুম থেকে ১০ম মৌসুম পর্যন্ত টিকিট বিক্রি থেকে আয় ১৫ কোটি টাকা দেখানো হয়েছে।’
কিন্তু প্রকৃত চিত্র উঠে এসেছে এবার, ‘কিন্তু বিসিবি যখন নিজেরা দায়িত্ব নিল যে, আমরাই টিকিট বিক্রি করব। তখন ১১তম আসরে আয় দেখানো হয়েছে প্রায় ১৩ কোটি টাকা। যেখানে ৮ বছরে আয় ১৫ কোটি টাকা, সেখানে ১ বছরে আয় ১৩ কোটি টাকা। এখানে হয়তোবা অসঙ্গতি থাকতে পারে। সেটা আমরা রেকর্ডপত্র সংগ্রহ করছি। সেগুলো পর্যালোচনা করে আমরা দেখব, সেটার প্রকৃত কারণটা কী।’
টিকিট বিক্রির ক্ষেত্রে দুদক প্রাথমিকভাবে ধারণা করছে বিসিবিতে কোটি টাকার অর্থের গড়মিল আছে। এই ব্যাপারে দুদকের সহকারী পরিচালক মাহমুদুল হাসান বলেন, ‘আমরা এখান থেকে যে তথ্য পেলাম, আগে নির্দিষ্ট একটা অ্যামাউন্ট নিয়ে বিভিন্ন কোম্পানির সঙ্গে চুক্তি করা হতো। ওই চুক্তি অনুযায়ী তারা টিকিট বিক্রি করত। হয়তো বা তারা নির্দিষ্ট একটা পরিমাণ বিসিবিকে দিত। সেটা বিসিবির আয় হিসিবে গণ্য হত। কিন্তু বিসিবি সর্বশেষ ৩-৪টা আসর নিজেরাই টিকিট বিক্রি করছে। এবং আমরা ১১তম আসরে দেখলাম, ১৩ কোটি টাকা আয় হয়েছে। ৮ বছরে যেখানে দেখলাম ১৫ কোটি, সেখানে এক বছরেই ১৩ কোটি। আমরা রেকর্ড-পত্র যেহেতু নিয়েছি, সেগুলো পর্যালোচনা করলেই বোঝা যাবে, আসলে এখানে প্রকৃতপক্ষে কী অসঙ্গতি ছিল।‘
যথাযথ প্রক্রিয়া মেনে নিজেদের কমিটির অনুমোদন পেয়েই বিসিবিতে দুদকের অভিযান বলে জানান দুদকের সহকারী পরিচালক মাহমুদুল হাসান, ‘আমাদের দুর্নীতি দমন কমিশনে প্রত্যেকটা অভিযানই সুনির্দিষ্ট অভিযানের পরিপ্রেক্ষিতে হয়ে থাকে। আমরা বিভিন্ন মিডিয়া থেকে অভিযোগ পেয়ে থাকি। সেই অভিযোগগুলো যাচাই-বছাই করার জন্য আমাদের একটা কমিটি থাকে। সেই কমিটি অনুমোদন দিলেই শুধুমাত্র আমরা এনফোর্সমেন্ট অভিযানে আসতে পারি। আমরা নিজেরা নিজেরা এনফোর্সমেন্ট অভিযানে আসতে পারি না।’