প্রতিদিন কাজের জন্য বের হন, পরিবারের সদস্যের দায়িত্ব কাঁধে কোনদিন কোন কাজ করবেন তাও নির্দিষ্ট জানা নেই। যখন যে কাজ পান সে কাজই করেন। এমন ভাবে দিন কাটানোর পর হঠাৎ একদিন সকালে ঘুম থেকে উঠে দেখলেন মোবাইলে মেসেজ- ১ কোটি ৫০ লাখ রুপি জিতেছেন আপনি।
সিনেমার গল্প মনে হতে পারে। কিন্তু বাস্তবেই এমনটা ঘটেছে ভারতের বিহারের ঘুরদাওয়ার গ্রামের দিনকার রামের সঙ্গে। ৩৭ বছর বয়সী এই দিনমুজুর একদিনেই কোটিপতি বনে গেছেন। এমন সফলতার পেছনে অবশ্য ক্রিকেট।
ভারতের স্পোর্টস ফ্যান্টাসি গেম ড্রিম ইলেভেনে পছন্দের একাদশ বানিয়ে দেড় কোটি রুপি জিতেছেন দিনকার রাম। ভারতের গণমাধ্যম নিউজ-১৮ এর এক প্রতিবেদনে উঠে এসেছে বিহারের এই দিনমুজুরের গল্প।
অভাবের সংসারে বড় হওয়া দিনকার অষ্টম শ্রেণীর বেশি পড়াশুনা করেননি। অর্থের অভাবে স্থায়ী একটি উপার্জনের জন্য বিহার ছেড়ে পাঞ্জাবে চলে যান দিনকার।
এরপর বাটন ফোন কেনার জন্য কিছু টাকা জমান তিনি। কিন্তু অপেক্ষার পর ৮ হাজার রুপিতে একটি স্মার্ট ফোন কিনেন বিহারের এই দিনমুজুর। কে জানত এই স্মার্ট ফোনই তার ভাগ্য বদলে দিবে। বন্ধুদের মাধ্যমে ড্রিম ইলেভেনের সঙ্গে পরিচিত হন দিনকার। এরপর থেকেই প্রায় ৪৯ রুপি দিয়ে নিজের পছন্দের একাদশ বানাতে থাকেন।
মাঝে মধ্যে ১০০ রুপির মতো জিতেছেন। কিন্তু ৩ বছর ধরে দল বানিয়ে যাওয়া দিনকার হাজার রুপি জিতলেও কখনো এর বেশি রুপি পাননি। তবে এক দিন চ্যাম্পিয়নস ট্রফির অস্ট্রেলিয়া ও ইংল্যান্ডের ম্যাচে দল বানান।
কে জানত, সেদিন রাতেই কোটিপতি হয়ে যাবেন তিনি। সেদিন রাতেই ড্রিম ইলেভেনে তার বানানো একাদশ থেকে তিনি দেড় কোটি রুপি জিতে যান।
এমন অবিশ্বাস্য ঘটনার পর দিনকার তার এলাকায় রীতিমত নায়ক বনে গিয়েছেন। স্থানীয় সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি বলেন, ‘আমি ৩৭ বছর ধরে অভাবের মাঝে বাস করছি। আমার বাবা অনেক কষ্ট করেছেন, আমিও অনেক কষ্ট করেছি। পরিবারকে খাওয়ানোর পর ঘর বা স্বপ্নের কথা ভাবার মতো আর কিছুই অবশিষ্ট ছিল না। এখন মনে হচ্ছে ঈশ্বর অবশেষে আমাদের প্রার্থনা শুনেছেন।’
কোটিপতি হওয়ার পরও দিনকারের পা মাটিতেই আছে। তিনি জানিয়েছেন নিজের দেনা পরিশোধের পর পরিবারের জন্য ঘর বানাবেন এবং ছোট একটা ব্যবসা করবেন যাতে ভবিষ্যতে সন্তানদের কষ্ট করতে না হয়।