ওয়েস্ট ইন্ডিজকে হারালেই এক ম্যাচ হাতে রেখে বিশ্বকাপের টিকিট পেয়ে যেত বাংলাদেশ। আজ এমন সমীকরণে লাহোরে ক্যারিবিয়ানদের বিপক্ষে নেমে নিজেদের সেরা পারফরম্যান্স দেখাতে পারেনি নিগার সুলতানা জ্যোতির দল।
ওয়েস্ট ইন্ডিজের কাছে ৩ উইকেটে হেরে বিশ্বকাপের মূল পর্বে যাওয়ার হিসেব-নিকেশটা পরের ম্যাচে নিয়ে গেল বাংলাদেশের মেয়েরা।
বাংলাদেশের দেওয়া ২২৮ রানের লক্ষ্যে নেমে পাওয়ার প্লেতে ওপেনার জাইদা জেমসকে হারালেও স্কোরবোর্ডে ১০ ওভারে ৪৫ রান তোলে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। পাওয়ার প্লের পর ওপেনার কিয়ানা জোসেফকে ৩১ রানে ফেরান স্পিনার রাবেয়া খান।
তিন ওভার পর শেমাইন ক্যামবেল (২৪) ফাহিমা খাতুনের বলে এলবিডাব্লিউ হন। ৭৪ রানে ওয়েস্ট ইন্ডিজ ৩ উইকেট হারালে ম্যাচে খানিকটা নিয়ন্ত্রণ নেয় বাংলাদেশ।
তবে চতুর্থ উইকেটে অধিনায়ক হেইলি মাথিউজ ও স্টেফানি টেইলরের জুটিতে ম্যাচে ফিরে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। এই দুই ডানহাতি ব্যাটার মিলে ৭৯ বলে ৬৬ রানের জুটি গড়েন। ৩০তম ওভারে পেসার মারুফা আক্তার ম্যাথিউজকে ফেরালেও ততক্ষণে ওয়েস্ট ইন্ডিজের স্কোরবোর্ডে ১৪০ রান। জয়ের জন্য প্রয়োজন ১২২ বলে ৮৮ রান।
পরের ওভারেই মারুফা ৩৬ রান করা টেইলরকে ফেরালে ফের চাপে পড়ে যায় ওয়েস্ট ইন্ডিজ। কিন্তু সানেল হেনরির আগ্রাসী ব্যাটিংয়ে ম্যাচের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে নেয় ওয়েস্ট ইন্ডিজ।
মাঝে বাংলাদেশ দুই উইকেট নিলেও হেনরির ৪৮ বলে ৫১ রানের অপরাজিত ইনিংসে ২৪ বল হাতে রেখে ম্যাচ জিতে নেয় ওয়েস্ট ইন্ডিজ।
এই জয়ে টুর্নামেন্টে ৪ ম্যাচে দ্বিতীয় জয়ে পয়েন্ট তালিকায় ৪ নম্বরে উঠে এল ক্যারিবিয়ানরা। অপরদিকে আজ হারলেও ৪ ম্যাচে ৩ জয় নিয়ে পয়েন্ট তালিকার শীর্ষে আছেন নিগার সুলাতানা জ্যোতিরা। পরের ম্যাচে আগামী ১৯ এপ্রিল পাকিস্তানের বিপক্ষে জয় পেলেই ভারতে অনুষ্ঠিত ওয়ানডে বিশ্বকাপে চলে যাবে বাংলাদেশ। এমনকি হারলেও রানরেটে এগিয়ে থাকা বাংলাদেশের ভালো সুযোগ থাকবে।
আগে ব্যাট করতে নেমে বাংলাদেশের হয়ে ফের সেঞ্চুরি রানের জুটি গড়ে বড় সংগ্রহের ভিত গড়ে দেন ফারজানা হক ও শারমিন আক্তার সুপ্তা। দ্বিতীয় উইকেটে ১১৮ রানের জুটি গড়ে বাংলাদেশকে আড়াই শ রানের স্বপ্ন দেখান ফারজানা-সুপ্তা জুটি।
তবে ইনিংসের ২৮তম ওভারে ওপেনার ফারজানাকে আলিয়া এলিন ৪২ রানে ড্রেসিংরুমের পথ দেখান। ১৩৪ রানে বাংলাদেশের দ্বিতীয় উইকেটের পতনের পর তাসের ঘরের মতো ব্যাটিং অর্ডার ভেঙে পড়ে।
পেসার আলিয়া এলিনের গতির কাছে হেরে শারমিন আক্তার সুপ্তা (৬৭ রান) ও নিগার সুলতানা জ্যোতি(৫ রান) বোল্ড হয়ে ফেরেন। ১৩৪ রানে ১ উইকেট থেকে ১৪২ রানে ৪ উইকেট হারিয়ে বড় সংগ্রহের স্বপ্ন ফিকে হয়ে যায় বাংলাদেশের।
মাঝ ওভারে স্বর্ণা আক্তার, রিতু মণি কেউই দলের হাল ধরতে পারেননি। উলটো ১৮৩ রানের ভেতর ৮ উইকেট হারিয়ে দুই শ রানের আগেই গুটিয়ে যাওয়ার শঙ্কায় পড়ে বাংলাদেশের মেয়েরা। কিন্তু শেষ দিকে নাহিদা আক্তারের ২৫ রান ও রাবেয়া খানের ২০ বলে ২৩ রানের ইনিংসে নির্ধারিত ৫০ ওভারে ৯ উইকেট হারিয়ে ২২৭ রানের সংগ্রহ পায় বাংলাদেশ।