লর্ডসে গতকালই সাউথ আফ্রিকা তাদের শিরোপা খরা কাটানোর দৃশ্যপট তৈরি করে রেখেছিল। দীর্ঘ ২৭ বছর পর ফের আইসিসির কোনো শিরোপা জিততে আজ কেবল ৬৯ রানের প্রয়োজন ছিল। ক্র্যাম্প নিয়ে গতকাল ফিফটি করা প্রোটিয়া অধিনায়ক টেম্বা বাভুমা আজ চতুর্থ দিনের শুরুতে ফিরে গেলেও সেঞ্চুরিয়ান এইডেন মার্করাম সাউথ আফ্রিকার টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের শিরোপা নিশ্চিত করে।
প্রথম সেশনেই ৫ উইকেট হারিয়ে লক্ষ্য ২৮২ রান টপকে যায় সাউথ আফ্রিকা। ১৯৯৮ সালে বাংলাদেশে অনুষ্ঠিত হওয়া আইসিসি নকআউট ট্রফি জয়ের পর এবার দ্বিতীয়বারের মতো আইসিসির কোনো শিরোপা জিতল প্রোটিয়ারা।
আজ বাকি ৬৯ রান তাড়ার কাজটা সহজেই টপকে যাবে সাউথ আফ্রিকা বলে মনে করছিলেন অনেকে। তবে অস্ট্রেলিয়া সেই কাজটাই দিনের শুরুতে কঠিন করে তোলে, টেম্বা বাভুমার উইকেট নিয়ে। অস্ট্রেলিয়ার অধিনায়ক প্যাট কামিন্সের বলে উইকেটের পেছনে ব্যক্তিগত ৬৬ রানে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন বাভুমা। তখন দলের জয়ের জন্য প্রয়োজন ছিল ৬৫ রান।
এরপর ক্রিজে নেমে বেশিক্ষণ টিকতে পারেননি ত্রিস্তান স্টাবসও। মাত্র ৮ রান করে মিচেল স্টার্কের বলে বোল্ড হয়ে ফেরেন এই ডানহাতি ব্যাটসম্যান। সাউথ আফ্রিকার ২৪১ রানে চতুর্থ উইকেটের পতনের পর খানিকটা আশা দেখছিল অস্ট্রেলিয়া। দেখবেই না কেন? তখন জয়ের জন্য ৪১ রানের প্রয়োজন প্রোটিয়াদের।
গেল বছর টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে শেষ দিকে জয়ের কাছে গিয়েও সাউথ আফ্রিকা যেভাবে শিরোপা হাতছাড়া করেছিল তা অস্ট্রেলিয়াকে অনুপ্রেরণা দিতেই পারে। বার্বাডোজের সেই ম্যাচে সাউথ আফ্রিকার ৩০ বলে ৩০ রানের প্রয়োজন, হাতে ছিল ৬ উইকেট। এমন সমীরকণের ম্যাচেও ভারতের কাছে হারের তিক্ত অভিজ্ঞতা হয়েছিল মার্করামদের।
লর্ডসেও স্টাবস আউট হওয়ার পর হাতে ছিল ৬ উইকেট, দরকার ৪১ রান। তবে ফরম্যাটটা টেস্ট ক্রিকেট বলেই খানিকটা নির্ভার ছিল সাউথ আফ্রিকা। পঞ্চম উইকেটে ডেভিড ভেডিংহামকে সঙ্গে নিয়ে বাকি ৪১ রান তোলার দায়িত্ব নিজে কাঁধে নেন ওপেনার এইডেন মার্করাম।
অস্ট্রেলিয়া উইকেট নেওয়ার চেষ্টা করলেও মার্করাম-বেডিংহাম জুটি দেখেশুনে খেলেছেন। মধ্যাহ্ন বিরতিতে যাওয়ার আগে জয় থেকে সাউথ আফ্রিকা যখন মাত্র ৬ রান দূরে তখন হ্যাজলউড মার্করামকে (১৩৬ রান) ফেরালেও তা কাজে আসেনি। বাকি ৬ রান ভেরাইনা ও বেডিংহাম জুটি সহজেই নিয়ে নেন। ৫ উইকেটের জয়ে প্রথমবারের মতো আইসিসির টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের শিরোপা নিজেদের ঘরে তুলে বাভুমার দল।
টেস্টের সংক্ষিপ্ত স্কোর:
অস্ট্রেলিয়া ১ম ইনিংস: ২১২/১০, (ওয়েবস্টার-৭২ রান, স্মিথ- ৬৬ ); রাবাদা- ৫ উইকেট, ইয়ানসেন-৩।
সাউথ আফ্রিকা ১ম ইনিংস: ১৩৮/১০, (বেডিংহাম-৪৫ রান, বাভুমা-৩৬); কামিন্স- ৬ উইকেট, স্টার্ক-২।
অস্ট্রেলিয়া ২য় ইনিংস: ২০৭/১০, (স্টার্ক-৫৮*, ক্যারি-৪৬); রাবাদা-৪ উইকেট, ইনগিডি-৩।
সাউথ আফ্রিকা ২য় ইনিংস: ২৮৫/৫, ( মার্করাম ১৩৬, বাভুমা-৬৬); স্টার্ক-৩ উইকেট।