শ্রীলঙ্কা সফরের আগে ওয়ানডে ফরম্যাটের অধিনায়কত্ব হারিয়েছেন নাজমুল হোসেন শান্ত। যে প্রক্রিয়ায় তাঁর অধিনায়কত্ব কেড়ে নেওয়া হয়েছে, সেটা বেশ অপমানজনক। অনেকেই শঙ্কা করছিলেন আচমকা অধিনায়কত্ব হারানোর ফলে পারফরম্যান্সে প্রভাব পড়তে পারে শান্তর। আজ গলে সাদা পোশাকের অধিনায়ক সে আলোচনা থামিয়ে দিয়েছেন ব্যাট হাতে।
অধিনায়কের সঙ্গে সাবেক অধিনায়ক মুশফিকুর রহিমের সেঞ্চুরিতে গল টেস্টের প্রথম দিনটা এগিয়ে থেকে শেষ করেছে সফরকারীরা। সকালের ধাক্কা কাটিয়ে ৩ উইকেটে ২৯২ রান বাংলাদেশের। শান্ত-মুশফিক জুটিতে এসেছে ২৪৭ রান। শান্ত করেছেন ১৩৬ রান, অন্য অপরাজিত ব্যাটসম্যান মুশফিক করেছেন ১০৫ রান।
ওয়ানডে অধিনায়কত্ব হারিয়েছেন, সাদা পোশাকেও সময়টা এতদিন ভালো যাচ্ছিল না। সর্বশেষ সেঞ্চুরি পেয়েছিলেন ২০২৩ সালের নভেম্বরে। জুনে আফগানিস্তানের বিপক্ষে জোড়া সেঞ্চুরির পর বছরের শেষভাগে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ম্যাচ জেতানো সেঞ্চুরি।
এরপর অনেকদিন কোনো সাড়া শব্দ ছিল না। আজ প্রায় দেড় বছর পর তিন অঙ্কের দেখা পেয়েছেন শান্ত। গলে প্রথম টেস্টের প্রথম দিনেই ক্যারিয়ারের ষষ্ঠ সেঞ্চুরির দেখা পেয়েছেন বাংলাদেশ অধিনায়ক।
শান্তর দিনে সেঞ্চুরির দেখা মুশফিকুর রহিমও পেয়েছেন। অভিজ্ঞ এই ক্রিকেটারের ক্ষেত্রেও এই সেঞ্চুরি অনেক কিছু বলে দিচ্ছে। কদিন আগে জিম্বাবুয়ে সিরিজে ভালো করতে পারেননি, সেই থেকে সমালোচনায় বিদ্ধ ছিলেন।
গত বছরের আগস্টে পাকিস্তানের বিপক্ষে রাওয়ালপিন্ডিতে ১৯১ রানের ইনিংসটা খেলেছিলেন। তারপর থেকে মুশফিকুর রহিমের ব্যাট কথা বলেনি। আজকের আগে ১৩ ইনিংসে সেঞ্চুরি তো পরের কথা, কোনো ফিফটিই পাননি, সর্বোচ্চ ইনিংস গত এপ্রিলে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ৪০ রানের।
সেই রান খরার আক্ষেপ আজ মোচন করেছেন। দেখা পেয়েছেন ক্যারিয়ারের ১২তম টেস্ট সেঞ্চুরির।
মুশফিক-শান্ত আজ সেঞ্চুরির আগে দলের বিপর্যয় সামলেছেন। দলীয় ৪৫ রানে ৩ উইকেট হারিয়ে গল টেস্টে শুরুতেই চাপে ছিল বাংলাদেশ সেখান থেকে দিনের বাকি সময়ে আর উইকেটই পড়তে দেননি এই দুই ব্যাটসম্যান। গড়েছেন রেকর্ডও, চতুর্থ উইকেটে ২০০ রানের জুটি গড়েছেন মুশফিক ও নাজমুল।
টেস্টে চতুর্থ উইকেটে এটি বাংলাদেশের তৃতীয় ২০০ ছাড়ানো জুটি। আগের দুটিই ছিল জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে (২৬৬ ও ২২২)। প্রতিবারই এক পাশে ছিলেন মুশফিক। তবে আগের দুবার অন্য প্রান্তে মুশফিকের সঙ্গী ছিলেন মুমিনুল হক।
গলে দিনের শুরু দেখে বাকি দিনটা এমন যাবে বলে মনে হয়নি। বহুদিন পর দলে ফেরা ওপেনার এনামুল হক বিজয় ১০ বল খেলে রানের খাতা না খুলেই ফিরেছেন। আরেক ওপেনার সাদমান ইসলামও তেমন কিছু করতে পারেননি। ৫৩ বল খেলে ১৪ রান করে ফিরেছেন স্পিনার থারিন্দু রতনায়েকের বলে।
তৃতীয় উইকেটে অভিজ্ঞ মুমিনুল হকও ছিলেন ছন্দহীন। দ্রুত রান তুললেও ফিরেছেন অল্পতেই। ৩৩ বলে ২৯ রান করা মুমিনুলও ফিরেছেন স্পিনার থারিন্দু রতনায়েকের বলে।
দলীয় ৪৫ রানে ৩ উইকেট হারিয়ে বাংলাদেশ যখন ব্যাটিং বিপর্যয়ে তখন মনে হচ্ছিল আজই বুঝি অলআউট হতে যাচ্ছে বাংলাদেশ। তবে সবাইকে ভুল প্রমাণ করেছেন শান্ত-মুশফিক।