গতকাল থেকেই ড্রয়ের শঙ্কা ছিল। আজ বৃষ্টির বাগড়ায় সেই পথ আরও পরিষ্কার হয়। তবে গল টেস্ট জয়ের জন্য বাংলাদেশ সম্ভাবনাও তৈরি করেছিল, হাতে ৩৫ ওভারের বেশি ছিল লঙ্কানদের অলআউট করা জন্য। কিন্তু শেষ পর্যন্ত তাইজুল-নাঈমরা শ্রীলঙ্কার ৪টি উইকেট নিতে পেরেছিলেন। দিনের আরও কয়েক ওভার বাকি থাকলেও ৩২ ওভার শেষেই অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্ত ড্র মেনে নিয়ে গল টেস্টের সমাপ্তি টানেন। সেই সঙ্গে দীর্ঘ ১২ বছর ও ২৬ টেস্টের পর গলে সাদা পোশাকের কোনো ম্যাচ ড্র দেখল। সর্বশেষ ২০১৩ সালে বাংলাদেশই পেরেছিল গল টেস্ট ড্র করতে।
দ্বিতীয় ইনিংসে লঙ্কানদের ২৯৬ রানের লক্ষ্য দিয়েছিল বাংলাদেশ। ইনিংসের শুরুতে পাথুম নিশাংকা ও লাহিরু উদারার আগ্রাসী ব্যাটিং দেখে মনে হচ্ছিল স্বাগতিকরা জয়ের জন্য যাবে। আঞ্জেলা ম্যাথিউজের শেষ টেস্ট বলে কথা, খানিকটা ঝুঁকি তো নিতেই পারেন।
তবে লঙ্কানদের আগ্রাসী মেজাজ ষষ্ঠ ওভারেই লাহিরু উদারাকে ফিরিয়ে থামিয়ে দেন তাইজুল ইসলাম। দলীয় ৩২ রানে স্টাম্পড হয়ে ফেরত যান উদারা। এরপরের ওভারেই পাথুম নিশাংকাকে প্যাভিলিয়নের পথ দেখান স্পিনার নাঈম হাসান। দলীয় ৩৪ রান ২ উইকেট হারিয়ে চাপে পড়ে যায় শ্রীলঙ্কা।
তৃতীয় উইকেটে নেমে অভিজ্ঞ দীনেশ চান্দিমাল ও আঞ্জেলা ম্যাথিউজ স্বাগতিকদের হার এড়ানোর জন্য ক্রিজে টিকে থাকার লড়াই শুরু করেন। তাইজুল-নাঈমদের স্পিন সামলেছেন দেখেশুনেই। তবে এই দুই ব্যাটসম্যানের ৮১ বলের জুটি ২০তম ওভারে ভাঙেন তাইজুল ইসলাম। শেষ টেস্ট খেলা ম্যাথিউজ ৪৫ বলে ৮ রান করে শর্ট পয়েন্টে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন।
তিন ওভার পর ফের তাইজুল আঘাত হানেন লঙ্কান ব্যাটিংয়ে। দলীয় ৪৮ রানে ৪ উইকেট হারিয়ে খানিকটা শঙ্কায় পড়ে যায় স্বাগতিকরা। তখনও ম্যাচের প্রায় ১৩/১৪ ওভারের মতো খেলার সময় বাকী ছিল।
বাংলাদেশের আশা জাগালেও লঙ্কান অধিনায়ক ধনঞ্জয়া ডি সিলভা ও কামিন্দু মেন্ডিস দায়িত্বশীল ইনিংস খেলেন। শেষ পর্যন্ত লঙ্কানদের স্কোর বোর্ডে ৩২ ওভারে ৭২ রানএ ৪ উইকেটের পর দুই দলের অধিনায়কের সম্মতিতে ম্যাচ ড্র ঘোষণা করা হয়। বাংলাদেশের হয়ে ৩টি উইকেট নেন তাইজুল।
এর আগে বাংলাদেশের একমাত্র ক্রিকেটার হিসেবে অনন্য এক রেকর্ড গড়েন অধিনায়ক শান্ত। দিনের শুরুতে মুশফিক ৪৯ রানে আক্ষেপ নিয়ে রান আউট হয়ে ফিরলেও শান্ত সেঞ্চুরির দেখা পেয়েছেন। প্রথম ইনিংসের পর দ্বিতীয় ইনিংসে সেঞ্চুরি আর তাতেই রেকর্ড বইয়ে শান্ত।
প্রথম বাংলাদেশি হিসেবে দুবার একই টেস্টের দুই ইনিংসে সেঞ্চুরি করার বিরল কীর্তি গড়লেন বাংলাদেশি অধিনায়ক।
এর আগে ২০২৩ সালে মিরপুরে আফগানিস্তানের বিপক্ষে দুই ইনিংসেই (১৪৬ ও ১২৪) সেঞ্চুরি করেন শান্ত। আর একবার একই টেস্টে দুবার সেঞ্চুরি করার কীর্তি আছে মুমিনুল হকের (২০১৮ সালে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ১৭৬ ও ১০৫)।
শেষ পর্যন্ত ৬ উইকেটে ২৮৫ রানে ইনিংস ঘোষণা করে বাংলাদেশ।