এজবাস্টন টেস্টের তৃতীয় দিনে যা হলো, তা রীতিমত নাটকের চেয়েও বেশি। ক্রিকেট যে অনিশ্চয়তার খেলা তা আবারো প্রমাণিত। দলের দুই বলে দুই উইকেট হারানোর পর হ্যাটট্রিক বল খেলতে এসে প্রথমেই বাউন্ডারি মেরে ইনিংসের সূচনা করেন জেমি স্মিথ। তখন ইংল্যান্ডের স্কোরবোর্ডে ৮৪ রানে ৫ উইকেট। এরপর ভারতীয় বোলারদের রীতিমত শাসন তো করেছেনই, উল্টো টেস্টে রেকর্ড গড়ে হয়েছেন ইংল্যান্ডের উইকেটকিপার হিসেবে সর্বোচ্চ রানের ইনিংসের মালিক।
অনন্য এই রেকর্ড গড়ার পথে ইংলিশদের ফলো অন থেকে বাঁচিয়েছেন ১৮৪ রানে অপরাজিত থাকা স্মিথ। তবে সেই সঙ্গে ইংল্যান্ডের ক্রিকেট ইতিহাসে টেস্ট ক্রিকেটে এক ইনিংসে সর্বোচ্চ ডাকের রেকর্ডটাও দেখেছেন অপর প্রান্ত থেকে। এই প্রথম এক ইনিংসে ৬টি শূন্য রানের ইনিংস দেখল ইংলিশরা।
স্মিথের আগ্রাসনের কারণে তাঁর সেঞ্চুরি আলোচনায়, তবে দারুণ সেঞ্চুরি করেছেন হ্যারি ব্রুকও। প্রথম ইনিংসে ভারতের ৫৮৭ রানের জবাবে হ্যারি ব্রুকের ১৫৮ ও স্মিথের ১৮৪ রানের ইনিংসে ৪০৭ রান করেছে ইংল্যান্ড।
এ দুজনের কারণেই কী নাটকীয়তা পেল ইংল্যান্ডের ইনিংস! ৩ উইকেটে ৭৭ রান নিয়ে দিন শুরু করা ইংল্যান্ড জোড়া ধাক্কা খায় মোহাম্মদ সিরাজের গতির কাছে। দিনের দ্বিতীয় ওভারেই জো রুট ও বেন স্টোকসকে পর পর দুই বলে ফেরান সিরাজ। স্টোকস পেয়েছেন টেস্ট ক্যারিয়ারে প্রথম গোল্ডেন ডাক! ৮৪ রানে ৩ উইকেট থেকে ৮৪ রানে ৫ উইকেট হয়ে চাপে পড়ে যায় ইংল্যান্ড। ক্রিজে তখন হ্যারি ব্রুকের সঙ্গী হন উইকেটকিপার জেমি স্মিথ।
তখন সবাই ধারণা করেছিল ফলো অনে পড়তে যাচ্ছে স্বাগতিকরা। কিন্তু এরপর ভারতীয় বোলারদের পুরোনো বলে মুদ্রার উল্টো পিঠ দেখালেন স্মিথ-ব্রুক জুটি। প্রথম সেশনেই ২৭ ওভারে ঝড় তুলে ১৭২ রান যোগ করেন এই দুই ইংলিশ ব্যাটসম্যান। ৮০ বলে সেঞ্চুরির দেখা পান স্মিথ।
এরপর দ্বিতীয় সেশনে খেলতে নেমে ভারতের বোলারদের রীতিমত শাসন করেছেন স্মিথ-ব্রুক। আগের টেস্টে ৯৯ রানে আউট হওয়া ব্রুক এবার অবশ্য সেঞ্চুরি করতে ভুল করেননি। দ্বিতীয় সেশনে ভারতের বোলাররা কোনো উইকেটেরই দেখা পাননি। কোনো উইকেট না হারিয়ে দ্বিতীয় সেশনের ২৮ ওভারে ১০৬ রান তুলে ৩৫৫ রান নিয়ে চা বিরতিতে যায় ইংল্যান্ড।
কিন্তু দিনের শেষ সেশনে নতুন বল হাতে পেয়ে ম্যাচের নিয়ন্ত্রণ নেয় ভারত। নতুন বল পাওয়ার ১৩ বল পরেই ৮৩তম ওভারে হ্যারি ব্রুককে ১৫৮ রানে বোল্ড করে ফেরান আকাশ দীপ। এরপর জেমি স্মিথ অপর প্রান্তে দাঁড়িয়ে কেবল বোলারদের আসা-যাওয়া দেখেছেন। মাত্র ২০ রানে বাকি ৫ উইকেটের পতন ঘটে। ভারতের হয়ে ৬টি উইকেট নেন সিরাজ। ১৮০ রানের লিড নিয়ে দ্বিতীয় ইনিংসে নামে ভারত।