প্রথম ওয়ানডেতে ব্যাটিং বিপর্যয়ের মুখে পড়া বাংলাদেশ আজও সে ধারা ধরে রেখেছে। আগের ম্যাচে ৫ রানে ৭ উইকেট হারানো বাংলাদেশ, আজ ১৪ রানে হারিয়েছে ৪ উইকেট। তবে এবার দ্বিতীয় ওয়ানডেতে দৃশ্যপট খানিকটা ভিন্ন ছিল। ৩৮তম ওভারে দুই শ রান পার করে বাংলাদেশ, হাতে ছিল ৫ উইকেট। তাওহীদ হৃদয় ও জাকের আলী ক্রিজে থাকায় বড় সংগ্রহের স্বপ্ন তখন স্বাভাবিকভাবেই দেখছিল মেহেদী হাসান মিরাজের দল।
কিন্তু ৩৯তম ওভার থেকে ১৭ বলের ব্যবধানে ১৪ রানে ৪ উইকেট হারিয়ে সেই স্বপ্নে পানি ঢেলে দেয় বাংলাদেশ। নির্ধারিত ৫০ ওভারের ২৫ বল আগে অলআউট হওয়া বাংলাদেশ শেষ দিকে তানজিম সাকিবের ৩৩ রানের ইনিংসে ২৪৮ রানের সংগ্রহ পায়।
সিরিজ বাঁচানোর ম্যাচে টস জিতে আগে ব্যাট করতে নেমে ইনিংসের শুরুটা ভালো করতে পারেননি আগের ম্যাচে ফিফটি পাওয়া ওপেনার তানজিদ হাসান তামিম। ইনিংসের তৃতীয় ওভারে ৭ রানে আসিথা ফার্নান্দোর বলে উইকেটের পেছনে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন তামিম। শুরুর ধাক্কা অবশ্য দ্বিতীয় উইকেটে সামাল দেন নাজমুল হোসেন শান্ত ও আরেক ওপেনার পারভেজ হোসেন ইমন।
দ্বিতীয় উইকেটে পাওয়ার প্লেতে আগ্রাসী ব্যাটিং করতে থাকেন শান্ত-ইমন জুটি। ইনিংসের নবম ওভারেই দলীয় পঞ্চাশ রান করে বাংলাদেশ। পাওয়ার প্লে শেষে ১ উইকেটে ৬৫ রান তোলে সফরকারীরা।
পাওয়ার প্লেতে ভালো সূচনা পেলেও নিজের ইনিংস বেশি বড় করতে পারেননি শান্ত। ইনিংসের ১২তম ওভারে লঙ্কান অধিনায়ক চারিথ আসালঙ্কার অফ স্পিনে ব্যক্তিগত ১৪ রানে লং অনে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন শান্ত। তৃতীয় উইকেটে ইমনের সঙ্গী হন তাওহীদ হৃদয়।
শান্ত বিদায় নিলেও ওয়ানডে ক্যারিয়ারের প্রথম ফিফটির দেখা পেয়ে যান ইমন। ৪৩ বলে ৫ চার ও ৩ ছক্কায় ফিফটি পূরণ করেন এই বাঁহাতি ওপেনার। আগ্রাসী ইমনের ব্যাটে ১৬তম ওভারেই এক শ রান পার করে বাংলাদেশ।
ফিফটির পর ইনিংস বড় করতে পারেননি ইমন। ইনিংসের ২০তম ওভারে ৬৯ বলে ৬৭ রান করে হাসারাঙ্গার বলে বোল্ড হয়ে ফেরেন। দলীয় ১১০ রানে ৩ উইকেট হারানো বাংলাদেশ মাঝ ওভারে আরও চাপে পড়ে যায় অধিনায়ক মেহেদী হাসান মিরাজ ও শামীম হোসেনকে দ্রুত হারিয়ে।
আগের ম্যাচে ব্যর্থ আজ মিরাজ ফিরেছেন মাত্র ৯ রান করে। সিরিজে প্রথমবার সুযোগ পাওয়া শামীম ফিরেছেন ২২ রানে। ১৫৯ রানে ৫ উইকেট হারিয়ে অলআউট হওয়ার শঙ্কায় পড়ে বাংলাদেশ। কিন্তু ষষ্ঠ উইকেটে হৃদয় ও জাকের আলী বাংলাদেশকে পথ দেখান। ৩৮তম ওভারেই দলকে দুই শ রান পার করান এ জুটি।
ইমনের মতো জাকের আলী অনিকও ক্রিজে লম্বা সময় কাটিয়ে নিজের উইকেট দিয়ে এসেছেন। ৪০ বলে ২৪ রান করা জাকের আসিথা ফার্নান্দোর বলে ৩৯তম ওভারে এলবিডব্লিউ হন।
দলীয় ২০৪ রানে ৬ উইকেট হারানোর পর আসা-যাওয়ার মিছিল শুরু হয় বাংলাদেশের। ফিফটি করা তাওহীদ হৃদয় (৫১ রান) ৪১তম ওভারে পেসার তানজিম হাসান সাকিবের সঙ্গে ভুল বুঝাবুঝির কারণে রান আউটের ফাঁদে পড়েন। আগের ম্যাচে ৫ রানে ৭ উইকেট হারানো বাংলাদেশ, আজ ১৪ রানে হারিয়েছে ৪ উইকেট। ২১৮ রানে ৯ উইকেট হারানো বাংলাদেশকে শেষ দিকে লড়াইয়ে পুঁজি এনে দিয়েছেন পেসার তানজিম হাসান সাকিব।
শেষ দিকে মোস্তাফিজুর রহমানকে সঙ্গে নিয়ে ১৮ বলে ৩০ রানের জুটি গড়েন সাকিব। ৪৬তম ওভারে হাসারাঙ্গার বলে মোস্তাফিজ এলবিডব্লিউ হলে ২৪৮ রানে থামে বাংলাদেশের ইনিংস। ২ চার ও ২ ছক্কায় ২১ বলে ৩৩ রান করে অপরাজিত থাকেন সাকিব।
শ্রীলঙ্কার হয়ে আসিথা ফার্নান্দো নেন ৪ উইকেট, হাসারাঙ্গা পান ৩ উইকেট।