এখনো ঠিক ছন্দে ফেরেননি নেইমার। সান্তোসে যোগ দেওয়ার পর আজ নিজের তৃতীয় ম্যাচে নেমেছিলেন, তবে বার্সেলোনা-ম্যান ইউনাইটেডের সাবেক ফরোয়ার্ড মেম্ফিসের বর্তমান ক্লাব করিন্থিয়ানসের বিপক্ষে নেইমারের খেলা দেখে বোঝা গেল, ছন্দে ফিরতে আরও সময় লাগবে ব্রাজিলিয়ান মহাতারকার। নেইমারের ক্লাব সান্তোসও আজ সাও পাওলোর রাজ্যভিত্তিক টুর্নামেন্ট পলিস্তা আ-উমের (এ-১) গ্রুপ পর্বের ম্যাচে করিন্থিয়ানসের মাঠে ২-১ গোলে হেরে গেছে।
তবে সান্তোসের এর পরের ম্যাচটা ঘিরে নেইমার ভক্তদের অপেক্ষা তো আছেই, পাশাপাশি বাংলাদেশের সাধারণ ফুটবলপ্রেমীদেরও আগ্রহ বাড়তে পারে সেই ম্যাচকে ঘিরে। আগুয়া সান্তার বিপক্ষে আগামী ১৭ ফেব্রুয়ারি ভোর ৫টা ৩০ মিনিটে মাঠে নামবে নেইমারের সান্তোস, যে আগুয়া সান্তা দলে বর্তমানে খেলছেন গত মৌসুম পর্যন্তও বসুন্ধরা কিংসের হয়ে মাঠ মাতিয়ে যাওয়া প্লেমেকার রবসন সিলভা, যাঁকে রবিনিও নামেও চেনেন অনেকে।
ব্রাজিলের ক্লাব ফ্লুমিনেন্সি থেকে বসুন্ধরায় যোগ দেওয়া রবসন গত চার মৌসুম রাঙিয়েছেন বাংলাদেশের ঘরোয়া ফুটবল। ব্রাজিলের বাইরে শুধু বাংলাদেশেই খেলেছেন তিনি। তাঁর ক্যারিয়ারের পরিসংখ্যান বলবে, ব্রাজিলিয়ান প্লেমেকারের ক্যারিয়ারের সবচেয়ে উজ্জ্বল সময়টা কেটেছে বসুন্ধরাতেই। ফুটবলবিষয়ক ওয়েবসাইট ট্রান্সফারমার্কেটের রেকর্ড বলছে, বসুন্ধরার হয়ে ৯৭ ম্যাচে ৬৪ গোল ও ৪৯ অ্যাসিস্ট রবসনের। এর বাইরে কোনো ক্লাবে ৩০ ম্যাচও খেলা হয়নি তাঁর, গোলও কোনো ক্লাবে ৭টির বেশি নেই।
২৯ বছর বয়সী রবসনের সঙ্গে বসুন্ধরার চুক্তি গত বছরে শেষ হয়ে গেছে। এই বছরের জানুয়ারিতে তিনি যোগ দেন আগুয়া সান্তায়। সাও পাওলো রাজ্যের শীর্ষ পর্যায়ে খেললেও ব্রাজিলের জাতীয় লিগ সিস্টেমে চতুর্থ স্তর সেরি ডি-তে খেলে আগুয়া সান্তা। এই ক্লাবে আগেও একবার ফ্লুমিনেন্সি থেকে আগুয়া সান্তায় ধারে খেলেছিলেন।
এবার আগুয়া সান্তায় যাওয়ার পর অবশ্য শুরুতে দুটি ম্যাচে খেলার পর মাঝে পাঁচটি ম্যাচে স্কোয়াডেই ছিলেন না রবসন। চোটে ছিলেন কি না, তা জানা যায়নি। তবে সর্বশেষ দুই ম্যাচে আবার দলে ফিরেছেন। পালমেইরাসের বিপক্ষে বেঞ্চ থেকে নামা হয়নি, তবে গতকাল তাঁর দলের সর্বশেষ ম্যাচে পর্তুগেসার বিপক্ষে ২৯ মিনিট খেলেছেন রবসন।
নেইমারের সান্তোসের বিপক্ষে পরের ম্যাচে রবসন খেললে বাংলাদেশের ফুটবলপ্রেমীদের জন্য তা বিশেষ আগ্রহের কারণই হবে বটে।
তা ওদিকে নেইমারের ছন্দে ফিরতে কত দেরি? মাঝে নোভোরিজোন্তিনোর বিপক্ষে ম্যাচে নেইমার সংবাদের শিরোনাম হয়েছিলেন একের পর এক বলের নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে, একের পর এক ড্রিবলিংয়ের চেষ্টায় ব্যর্থ হয়ে। সে তুলনায় আজ করিন্থিয়ানসের বিপক্ষে ভালোই খেলেছেন।
যদিও বয়সের সঙ্গে শরীর কিছুটা ভারি হয়ে যাওয়া নেইমারের ছুটে চলায় আগের ছন্দ আর পুরোপুরি ফিরে আসবে কি না তা নিয়ে সংশয় আছে। পাশাপাশি, মাঝের বছর দেড়েকে এই চোট-সেই চোটে মাঠের বাইরে থাকা তো যে কোনো ফুটবলারেরই ছন্দে প্রভাব ফেলবে। আজ ম্যাচের পর নেইমারের কথা অবশ্য তাঁর ভক্তদের কানে আশার বাণীর মতো লাগতে পারে।
নেইমার বলেছেন, ‘শরীরের দিক থেকে বলতে গেলে প্রতিদিনই আগের চেয়ে আরেকটু ভালো মনে হচ্ছে। আজ আগের ম্যাচের চেয়ে সহজ লেগেছে সবকিছু। সেদিক থেকে দেখলে ধীরে ধীরে ঠিক হচ্ছে। হঠাৎ করেই তো আর শরীরের গঠন ঠিক হয়ে যাবে না। তবে দুই-তিন ম্যাচের মধ্যে আমি শতভাগ ফিট হয়ে যাব।’