গত দেড় দশকে বিশ্বের সেরা ডিফেন্ডারদের তালিকায় তাঁর নাম ওপরের সারিতেই থেকেছে। শুধু ডিফেন্ডিং কেন, প্রতিপক্ষ বক্সে গিয়ে কর্নার বা ফ্রি-কিকে হেডে গোল করাতেও যে সের্হিও রামোসের জুড়ি মেলা ভার। ২০১৪ চ্যাম্পিয়নস লিগের ফাইনালে ৯৩তম মিনিটে রামোসের এক হেড থেকেই পরের দশকে চ্যাম্পিয়নস লিগে রেয়াল মাদ্রিদের অবিশ্বাস্য যাত্রার শুরু!
তবে এই ডিফেন্ডিং আর গোল করার দক্ষতার পাশাপাশি আরেকটি কারণেও নিয়মিত খবরের শিরোনামে ছিলেন রামোস – লাল কার্ড দেখে। কখনো কড়া ট্যাকল করে, কখনোবা মেজাজ হারিয়ে লাথি-ঘুষি মেরে। ৩৮ বছর বয়সে এখন স্পেন ছেড়ে মেক্সিকোর ক্লাব মন্তেরেইতে খেলছেন রামোস, কিন্তু সেখানেও অভ্যাসটা বদলায়নি।
গতকাল মেক্সিকোর লিগে পুমাস ইউএনএএমের বিপক্ষে মন্তেরেইয়ের ৩-১ গোলে জয়ের ম্যাচে ৯২তম মিনিটে লাল কার্ড দেখেছেন রামোস। মন্তেরেইয়ের জার্সিতে তাঁর প্রথম লাল কার্ড এটি, পেশাদার ক্যারিয়ারের ৩০তম।
ম্যাচজুড়েই বেশ কয়েকবার প্রতিপক্ষের সঙ্গে শারীরিক সংঘর্ষে জড়ান রামোস। তবু ৯০ মিনিট পার করে যখন যোগ করা সময়ের খেলা চলছিল, মন্তেরেই সমর্থকেরা হয়তো ভেবেছিলেন, এই ম্যাচটা ভালোয় ভালোয় পার হয়ে গেল বুঝি! আর হলো কই!
যোগ করা সময়ে, মন্তেরেই যখন ৩-১ গোলে এগিয়ে, তখন পুমাসের গিয়ের্মো মার্তিনেসকে অযথাই লাথি মারেন রামোস। তা-ও কখন? যখন বল এরই মধ্যে টাচলাইনের বাইরে চলে গেছে! পড়বি তো পড় মালির ঘাড়ে – সহকারী রেফারি তখন অকুস্থলেই দাঁড়ানো। তিনি মূল রেফারিকে জানান, মূল রেফারি এসেই লাল কার্ড দেখিয়ে দেন রামোসকে।
তাতে লাল কার্ডের সংখ্যায় ৩০-এর ঘরে যাওয়ার ‘মাইলফলক’ ছোঁয়া হয়ে গেল রামোসের। রেয়াল মাদ্রিদে ২৬টি, পিএসজিতে ২টি আর সেভিয়ায় ১টি লাল কার্ড দেখেছিলেন এর আগে। আশ্চর্যজনক মনে হতে পারে, স্পেনের জার্সিতে কখনো লাল কার্ড দেখেননি রামোস।
সেভিয়ায় শুরু ক্যারিয়ারে ২০০৫ সাল থেকে ১৬টি সাফল্যে মোড়ানো বছর রেয়াল মাদ্রিদে কাটিয়ে রামোস গিয়েছিলেন পিএসজিতে, খেলেছেন মেসি-নেইমার-এমবাপ্পের সঙ্গে। সেখানে দুই বছর কাটিয়ে আবার ফেরেন স্পেনে, নিজের প্রথম ক্লাব সেভিয়ায়। তবে এক বছরই ছিলেন। গত মৌসুম শেষে সেভিয়ার সঙ্গে চুক্তিটা আর নবায়ন না হওয়ায় ‘ফ্রি এজেন্ট’ হয়ে পড়েন রামোস। এর মধ্যে সৌদি আরব, যুক্তরাষ্ট্র – এমনকি মাঝে নভেম্বর-ডিসেম্বরে একের পর এক সেন্টারব্যাকের চোটের কারণে ঝামেলায় পড়া রেয়াল মাদ্রিদের সঙ্গে দলবদলের গুঞ্জনে তাঁর নাম জড়ালেও রামোসের আর কোথাও যোগ দেওয়া হয়নি। শেষ পর্যন্ত গত ফেব্রুয়ারিতে যোগ দেন মন্তেরেইয়ে।
সেখানেই ভালোই খেলছিলেন। রক্ষণের পাশাপাশি গোলস্কোরিংয়ে দক্ষতার প্রমাণ রেখে চলছিলেন। চার ম্যাচেই ৩ গোল করে ফেলেছেন। লাল কার্ড দেখা আর বাকি থাকে কেন!