এই তো, গত ৫ ফেব্রুয়ারি তিনি পা দিয়েছেন ৪০-এ। যেখানে ৩৫-৩৬ বছর বয়স হতে হতেই অন্যরা ক্যারিয়ারের শেষ টেনে দেন, ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো এ বয়সেও মাঠ দাপিয়ে বেড়াচ্ছেন। ক্লাব ফুটবলে ইউরোপ ছেড়ে হয়তো সৌদি আরবে থিতু হয়েছেন আরও দুবছর আগে, তবে পর্তুগাল জাতীয় দলে এখনো খেলে চলেছেন। আগামী বছর বিশ্বকাপেও তাঁর খেলার কথা।
কিন্তু চেলসির সাবেক স্ট্রাইকার জিমি ফ্লয়েড হ্যাসলব্যাঙ্ক এ ব্যাপারটা ভালোভাবে নিতে পারছেন না। পর্তুগাল জাতীয় দলে রোনালদো এখনো খেলে যাচ্ছেন, এ নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন তিনি। ডাচ এই সাবেক স্ট্রাইকার মেসি-রোনালদোর মধ্যে তুলনায় রোনালদোকেই এগিয়ে রাখেন, তবে তাঁর চোখে, রোনালদো এখনো পর্তুগাল দল থেকে সরে না গিয়ে নিজের লিগ্যাসি নষ্ট করছেন। হ্যাসেলব্যাঙ্কের ধারণা, গত দেড় দশক ফুটবল মাতিয়ে রাখা দ্বৈরথে চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী লিওনেল মেসি অবসর নেওয়ার পরই জাতীয় দল ছাড়বেন রোনালদো।
রোনালদো এই মুহূর্তে পর্তুগালের হয়ে উয়েফা নেশনস লিগে ব্যস্ত। গতকাল টুর্নামেন্টে কোয়ার্টার ফাইনালের প্রথম লেগে ডেনমার্কের মাঠে ১-০ গোলে হেরে গেছে পর্তুগাল। ম্যাচে ডেনমার্কের গোলটি করার পর ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের স্ট্রাইকার রাসমুস হইলুন উদ্যাপন করেছেন রোনালদোর ঢংয়েই। এ নিয়ে ম্যাচের পর অবশ্য হইলুন নিজেকে রোনালদো-ভক্ত দাবি করে বলেছেন, রোনালদোকে খোঁচা মারতে ওভাবে উদ্যাপন করেননি তিনি।
তা গতকালের ম্যাচেও পুরো সময় খেলেও অনেকটা নিষ্প্রভ থাকা রোনালদোকে নিয়ে হ্যাসেলব্যাঙ্ক মন্তব্যটা করেছেন ‘গ্যাম্বলিং জোন’-এ। তাঁর কথা, ‘২০২৬ বিশ্বকাপে রোনালদোকে দরকার নেই ফুটবলের। রোনালদো অনেক লম্বা সময় ধরে সেরাদের একজন ছিল, ইতিহাসেরই সেরাদের একজন। আমার মনে হয়, পর্তুগাল দল থেকে সরে না গিয়ে সে নিজের ভালোর চেয়ে ক্ষতিই করছে বেশি, ওর লিগ্যাসি নষ্ট হচ্ছে।’
নিজেকে অবশ্য রোনালদ-ভক্ত বলেই দাবি করেছেন হ্যাসলব্যাঙ্ক, ‘আমাকে যদি জিজ্ঞেস করেন, মেসি না রোনালদো – আমি সব সময়ই বলব রোনালদো, সেটা এই পর্যায়ে যেতে এবং সেখানে নিজেকে ধরে রাখতে ওকে যা যা করতে হয়েছে সেটার জন্যই বলব।’
তবে এখন রোনালদোর অন্তত জাতীয় দলে শেষ টানার সময় হয়ে গেছে বলে মনে হচ্ছে হ্যাসলব্যাঙ্কের, ‘…একটা সময় আসে যখন আপনাকে সরে যেতে হবে। আমার মনে হয় ওর সেই সময়টা আরও আগেই হয়ে গেছে, ওর উচিত অন্য কাউকে এই জায়গাটা ছেড়ে দেওয়া।’
পর্তুগালের জন্য রোনালদো বোঝা হয়ে উঠেছেন, এমন আলোচনা তো ২০২২ কাতার বিশ্বকাপের সময় থেকেই আওয়াজ পেয়েছে। হ্যাসলব্যাঙ্কও সে সুরেই কথা বলেছেন, ‘আমার মনে হয় না এই মুহূর্তে পর্তুগালের (আক্রমণে) যত খেলোয়াড় আছে, তাদের কারও চেয়ে সে (রোনালদো) ভালো বিকল্প। কিছু কিছু ম্যাচে আপনাকে প্রেস করতে হয়, কিছু ম্যাচে ভিন্ন কিছু করার চেষ্টা করতে হয়, আমার মনে হয় না ও আর সেসব করার ক্ষমতা রাখে। এটা মেনে নিতে লজ্জার কিছু নেই। ও যে ৪০ বছর বয়সে এখনো খেলে যাচ্ছে, এটাই তো একটা মাইলফলক!’
জাতীয় দল থেকে বিদায়ের সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষেত্রেও রোনালদো তাঁর চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী মেসির দিকে একটা চোখ রাখছেন বলে মনে হচ্ছে হ্যাসলব্যাঙ্কের, ‘আমার মনে হয় ওই (রোনালদোর জাতীয় দল থেকে অবসরের) সময়টা আসবে যখন মেসিও সরে যাবে। মেসি যখন বিদায় নেবে, রোনালদোও বিদায় বলে দেবে।’